কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা (সিলেট)

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা (সিলেট জেলা)  আয়তন: ২৯৬.৭৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৫৮´ থেকে ২৫°১১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৪১´ থেকে ৯১°৫৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য, দক্ষিণে সিলেট সদর, গোয়াইনঘাট এবং ছাতক উপজেলা, পূর্বে গোয়াইনঘাট উপজেলা, পশ্চিমে ছাতক উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৭৪০২৯; পুরুষ ৮৯৬৪৯, মহিলা ৮৪৩৮০। মুসলিম ১৬০৭৮২, হিন্দু ১২৯৫৪, বৌদ্ধ ১০, খ্রিস্টান ১২ এবং অন্যান্য ২৭১। এ উপজেলায় খাসিয়া, মনিপুরী প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয় প্রধান নদী: সুরমা ও পিয়াইন। বাওয়া, লালী, লোবা, পোকো হাওর এবং পানিছাপড়া, নীগার, রাউতি, কালেঙ্গা বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন কোম্পানিগঞ্জ থানা গঠিত হয় ১৯৭৬ সালে এবং উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৭৯ ১৩৮ ১৮০৩৫ ১৫৫৯৯৪ ৫৮৬ ৪০.২ ২৭.৪
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজার সংখ্যা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৮.০৯ ১৮০৩৫ ২২২৯ ৪০.২
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
ইসলামপুর পশ্চিম ১৩২৭২ ২৭৭৩১ ২৪৭৪৪ ৩৫.১
ইসলামপুর পূর্ব ১২৭২৮ ১৮৮৪৪ ১৭৬১৬ ২৯.২
ইসহাকালাশ ১১৮৪৮ ৮৮৭৩ ৮৮৭৯ ২০.১
তেলিখাল ১০০৮২ ১১৯১৯ ১১৬১৯ ২৫.৪
রাণীখালী উত্তর ১১৭৯৭ ১৩১৩৮ ১২৩৭৪ ২৫.৬
রাণীখালী দক্ষিণ ১৩৬০৩ ৯১৪৪ ৯১৪৮ ২৬.৭

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় কোম্পানিগঞ্জ ৫নং সেক্টরের অধীনস্থ ভোলাগঞ্জ সাব সেক্টরের অন্তর্ভূক্ত ছিল। এসময় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর বিভিন্ন লড়াইয়ে প্রায় ১৯জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। উপজেলায় ১টি স্মৃতিসৌধ ও ১টি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা (সিলেট জেলা), বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ২।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২৫৫, মন্দির ২২, মাযার ৪।

শিক্ষার হার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  গড় হার ২৮.৮%; পুরুষ ৩০.৯%, মহিলা ২৬.৫%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫৪, কমিউনিটি বিদ্যালয় ১০, কিন্ডার গার্টেন ৭, মাদ্রাসা ১৮। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: এম. সাইফুর রহমান কলেজ, ভাটরাই উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৭), পাড়ুয়া নোয়াগাঁও দাখিল মাদ্রাসা (১৯৬৫)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ১৪, লাইব্রেরি ১, সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র ২, খেলার মাঠ ২, মহিলা সংগঠন ১২।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬০.৮১%, অকৃষি শ্রমিক ১২.৮১%, শিল্প ০.৫৭%, ব্যবসা ১৫.০১%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ০.৮৬%, চাকরি ১.৭১%, নির্মাণ ০.৩৬%, ধর্মীয় সেবা ০.২৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.১৮% এবং অন্যান্য ৬.৪২%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫০.৮৯%, ভূমিহীন ৪৯.১১%। শহরে ৪২.৩৯% এবং গ্রামে ৫১.৮০% পরিবারের কৃষিভূমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসলাদি  ধান, সরিষা, তেজপাতা, পান ও সুপারি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তামাক, গাঁজা।

প্রধান ফল-ফলাদি কমলা, আম, কাঁঠাল, আনারস, লেবু, সাতকড়া।

মৎস্য, গবাদিপশু ও  হাঁস-মুরগির খামার  এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি প্রভৃতি খামার রয়েছে।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৮২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৫, কাঁচারাস্তা ২৩৮ কিমি; নৌপথ ১০ কিমি; কালভার্ট ১০৪; ব্রিজ ৫৩; সেতু ২।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পালকি ও গরুর গাড়ি।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, ওয়েল্ডিং প্রভৃতি।

খনিজ সম্পদ  পাথর, বালি, চুনাপাথর।

হাটবাজার, মেলা   হাটবাজার ২০, মেলা ৩। উল্লেখযোগ্য হাটবাজার: কোম্পানীগঞ্জ, ইসলামগঞ্জ, তুকেরগাঁও বাজার, পাড়ুয়া বাজার।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   কমলা, মাছ, পাথর, চুনাপাথর।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। ৩৭.৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৭৬.৯%, ট্যাপ ০.৬% এবং অন্যান্য ২২.৫% । এ উপজেলায় অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক পাওয়া গেছে এবং এর পরিমাণ ১২.৫ শতাংশ।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা উপজেলার ৪৪.৬% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৩.৮% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে । ১১.৬% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৩, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১।

এনজিও  কেয়ার, ব্র্যাক, ভার্ড, সীমান্তিক। [জয়ন্ত সিংহ রায়]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারী রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০১০।