কেরানীগঞ্জ উপজেলা

কেরানীগঞ্জ উপজেলা (ঢাকা জেলা)  আয়তন: ১৬৬.৮৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৩৭´ থেকে ২৩°৪৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°১৩´ থেকে ৯০°২৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সাভার ও সিংগাইর উপজেলা, দক্ষিণে নারায়ণগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে সাভার, হাজারীবাগ, কামরাঙ্গীরচর, লালবাগ, কোতোয়ালী, শ্যামপুর ও নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা, পশ্চিমে নবাবগঞ্জ, সিংগাইর ও সিরাজদিখান উপজেলা। ঢাকা শহরের দক্ষিণ-পশ্চিমে বুড়িগঙ্গা নদীর অপর পাড়ে এ উপজেলা শহরটি অবস্থিত।

জনসংখ্যা ৭৯৪৩৬০; পুরুষ ৪২১৮০৯, মহিলা ৩৭২৫৫১। মুসলিম ৭৩৭৪৮৫, হিন্দু ৫৬৭৫৭, বৌদ্ধ ১১, খ্রিস্টান ৯৪ এবং অন্যান্য ১৩।

জলাশয় প্রধান নদী:  বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী ও ইছামতী।

প্রশাসন কেরানীগঞ্জ থানা গঠিত হয় ১৮১৭ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তরিত করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১২ ১২১ ৪২৩ ১১৯৬ ৭৯৩১৬৪ ৪৭৬০ ৫১.৮
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
০.৫৮ - ১১৯৬ ২০৬৩ ৫১.৮ (২০০১)
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আগানগর ১১ ৩৬৯ ৪৪৯২৭ ২৮০৮৫ ৬৩.৮
কলাতিয়া ২৫ ৪২৯৭ ১৯২৬১ ২০৭৪৬ ৬০.৮
কালিন্দি ৩৪ ১৬৭৭ ২৪৪৬৭ ২২৩১৬ ৬৩.৩
কোন্দা ৪৩ ৬২৭০ ৩৪৮২১ ৩২৩৮৩ ৫৩.৬
জিনজিরা ৯৪ ৪৩৩ ৫৮৬৩৫ ৫১৩৪৭ ৬১.১
তারানগর ৭৭ ৪২৯৫ ২১৪৪১ ২০৭৬২ ৫৮.৬
তেঘরিয়া ৮৬ ৪৩৩০ ১৬৭৬৬ ১৫৬৫০ ৫৩.৯
বাস্তা ১৩ ৪৯১৫ ১৬৮৮৬ ১৭২৯৫ ৫৭.৩
রুহিতপুর ৫১ ৩৭৩০ ১৫৬৪৫ ১৫৯১৮ ৫৪.৮
শুভাড্যা ৬৯ ২৫৬৩ ১২২৬১২ ১০৩২৫৩ ৫৮.৩
সাকতা ৬০ ৪০৫১ ৩০০২৮ ২৮০৪৭ ৬০.৯
হযরতপুর ১৭ ৪১৬১ ১৬৩২০ ১৬৭৪৯ ৪৫.৭

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ জিনজিরা প্রসাদ (মুগল সুবাদার দ্বিতীয় ইবরাহিম খান প্রমোদ কেন্দ্র হিসেবে এ প্রসাদ নির্মাণ করেন। এখানে ঘসেটি বেগম, আমেনা বেগম, সিরাজউদ্দৌলার স্ত্রী ও তাঁর কন্যাকে বন্দী করে রাখা হয়); জমিদার প্রশান্ত কর্মকারের প্রাসাদ (বর্তমানে কেরানীগঞ্জ উপজেলা ভবন)।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে পাকবাহিনী কেরানীগঞ্জ উপজেলার কোণাখোলা, বাস্তা, ব্রাহ্মণকীর্তেহ, গোয়ালখালী, ওয়ালিতিয়া, খাগাইল খোলামোড়া গ্রামে অধিকাংশ বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। পরবর্তীতে মুক্তিবাহিনীর পাল্টা আক্রমণে পাকসেনারা বিতাড়িত হয়। উপজেলার সোনাকান্দায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়।

বিস্তারিত দেখুন কেরানীগঞ্জ উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ২।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৫৮৫, মন্দির ৯৬, মাযার ১।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৮.৫%; পুরুষ ৬০.৮%, মহিলা ৫৬.০%। কলেজ ৮, কারিগরি কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যায়ল ৩৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১২, মাদ্রাসা ১৪।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ৬০, কমিউনিটি সেন্টার ২৫,  সিনেমা হল ৫, অডিটোরিয়াম ২।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ১১.৩১%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৭৩%, শিল্প ৩.৬২%, ব্যবসা ২৯.১৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৭.৩৭%, চাকরি ১৬.৯৪%, নির্মাণ ৩.৬৬%, ধর্মীয় সেবা ০.১৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৪.৬৫% এবং অন্যান্য ১৯.৩৯%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৩৫.৪৬%, ভূমিহীন ৬৪.৫৪%।

প্রধান কৃষি ফসল পাট, গম, আলু, পিঁয়াজ, তৈলবীজ।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি আউশ ধান, আমন ধান, খেসারি, মটর কলাই।

প্রধান ফল-ফলাদিব আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, নারিকেল।

গবাদিপশু, হাঁস-মুরগির খামার  গবাদিপশু ৪২৪, হাঁস-মুরগি ১৭৯।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকা রাস্তা ২৫৪ কিমি, আধাপাকা রাস্তা ৯১ কিমি, কাঁচা রাস্তা ৭৭৮ কিমি; নৌপথ ১২০ কিমি। কালভার্ট ৩, ব্রিজ ২২৮।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পালকি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ, কোল্ড স্টোরেজ, পাটকল, ইটভাটা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, সূচিশিল্প, কাঠের কাজ উল্লেখযোগ্য।

হাটবাজার, মেলা   হাটবাজার ১৮, মেলা ২। কলাতিয়া বাজার, আঁটি বাজার, রুহিতপুর বাজার, জিনজিরা বাজার, কালিগঞ্জ বাজার এবং জিন্দাপীরের মাজারের মেলা ও আদু পাগলার মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ, পাট, তৈলবীজ।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার ৯৬.৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয় জলের উৎস নলকূপ ৬৬.১%, ট্যাপ ৩১.২% এবং অন্যান্য ২.৭%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৯২.২% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৭.২% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ০.৬% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১৫, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫,  স্বাস্থ্য উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, চিকিৎসা কেন্দ্র ১।

এনজিও আশা, ব্র্যাক, প্রশিকা, প্রত্যাশা, টিএমএমএস।  [মোঃ আবু হাসান ফারুক]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কেরানীগঞ্জ উপজেলার মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০১০।