কুমিল্লা জিলা স্কুল
কুমিল্লা জিলা স্কুল কুমিল্লার অন্যতম প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কুমিল্লা শহরের কান্দিরপাড়ে অবস্থিত। কুমিল্লা জিলা স্কুল কয়েক বছর ধরে এসএসসি পরীক্ষায় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে প্রথম স্থান এবং সমগ্র বাংলাদেশে সেরা দশের মধ্যে অবস্থান করছে। ১৮৩৭ সালে এইচ.জি লেজিস্টার নামক একজন ইংরেজ শিক্ষক স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনিই ছিলেন এই স্কুলের প্রথম প্রধান শিক্ষক। পরবর্তী সময়ে সরকার ইংরেজি সাহিত্য ও বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য স্কুলটিকে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে রূপদান করে এবং কুমিল্লা জিলা স্কুল নামকরণ করে। ১৯৩৭ সালে কুমিল্লা জিলা স্কুল প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ উদযাপিত হয়। ১৯৭১ সালের পর কুমিল্লা জিলা স্কুল কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে সেরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরিণত হয়।
স্কুলটি প্রভাতি ও দিবা শাখায় বিভক্ত। পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। পঞ্চম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিটিতে ৬টি শাখা বিদ্যমান। এইগুলি হলো প্রভাতি ক, খ ও গ এবং দিবা ক, খ ও গ। নবম ও দশম শ্রেণিতে চারটি করে শাখা বিদ্যমান। এইগুলি হলো প্রভাতি ক ও খ এবং দিবা ক ও খ। বর্তমানে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ২০০০ এবং শিক্ষকশিক্ষিকার সংখ্যা ৫৩। স্কুলের ইউনিফর্ম ফুল বা হাফ হাতা সাদা শার্ট, সাদা প্যান্ট ও সাদা জুতা। শীতকালে নীল রঙের সোয়েটার। শার্টের বুক পকেটে স্কুলের মনোগ্রামযুক্ত ব্যাজ লাগানো থাকে।
শিক্ষার্থীরা পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ পায়। ভর্তি পরীক্ষা জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হয়। কোনো শিক্ষার্থী অন্য কোনো সরকারি স্কুল থেকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেটের মাধ্যমে পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ পেতে পারে।
সমগ্র স্কুলটি ৪টি হাউজে বিভক্ত। এইগুলি হলো আবু জাহিদ হাউজ (রঙ আকাশি), ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হাউজ (রঙ লাল), কাজী নজরুল ইসলাম হাউজ (রঙ হলুদ) এবং মোতাহের হোসেন চৌধুরী হাউজ (রঙ নীল)। প্রত্যেক বছর হাউজগুলির মধ্যে খেলাধুলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
এ স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষার পাশাপাশি বাংলাদেশ জাতীয় ক্যাডেট কোর, স্কাউট, অ্যাথলেটিক্স, ক্রিকেট ও ফুটবল প্রতিযোগিতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বার্ষিকী ও অন্যান্য সাময়িকী প্রকাশ, গণিত ও ভাষা প্রতিযোগিতা, বিজ্ঞান মেলা ও শিক্ষা সফরে অংশগ্রহণ করে। [গোপাল চন্দ্র ভৌমিক]