কাহালু উপজেলা

কাহালু উপজেলা (বগুড়া জেলা)  আয়তন: ২৪০.৪২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৪৩´ থেকে ২৪°৫৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০৯´থেকে ৮৯°১৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে শিবগঞ্জ ও বগুড়া সদর উপজেলা, দক্ষিণে নন্দীগ্রাম উপজেলা, পূর্বে বগুড়া সদর ও শাহজাহানপুর উপজেলা, পশ্চিমে আদমদীঘি ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা।

জনসংখ্যা ২২২৩৭৬; পুরুষ ১১০৬৬৩, মহিলা ১১১৭১৩। মুসলিম ২০৮৩১৫, হিন্দু ১৪০৩১, খ্রিস্টান ৬ এবং অন্যান্য ২৪।

জলাশয় নাগর নদী।

প্রশাসন থানা গঠিত হয় ১৯২৮ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১৬২ ২৬৪ ১৩৮৮৭ ২০৮৪৮৯ ৯২৫ ৬১.৮ ৫১.৪
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৬.৮২ ১৯ ১৩৮৮৭ ২০৩৬ ৬১.৮
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কালাইমাঝপাড়া ৪৭ ৪৭৪৩ ১০৪২৯ ১০৫৩১ ৪৯.৬
কাহালু ৩৮ ৫১৯৪ ৮৮৬৫ ৯২০২ ৫৭.১
জামগাঁও ২৮ ৮০৫৯ ১১৯৬৬ ১১৯৭১ ৪৭.৭
দূর্গাপুর ১৯ ৭৭০৩ ১২৪০২ ১২৬৪১ ৫৭.৩
নারহট্ট ৭৬ ৫৬১৪ ১১২৭৮ ১১১০৫ ৫৬.২
পাইকার ৮৫ ৬০১১ ১১৭৫৩ ১১৬৭০ ৪৩.৯
বীরকেদার ১৩ ৫২৮৯ ১১৬২০ ১১৯৫৪ ৫০.৭
মালঞ্চ ৫৭ ৮৪১৩ ১৪১৪৭ ১৪৫২১ ৪৯.৯
মুরাইল ৬৬ ৬৩১৪ ১১২৪৮ ১১১৮৬ ৫১.৬

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ মহাদেব যোগীঋষির মন্দির (পাইকার ইউনিয়ন), জমিদার কাচারী (নারহট্ট গ্রাম)।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের অক্টোবরের শেষ দিকে এ উপজেলার কড়িবামুজা ও নশিরপাড়া এলাকায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ লড়াই হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় পাকবাহিনী ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায় ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। ১৩ ডিসেম্বর এ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়। কাহালু উচ্চবিদ্যালয়ে ১টি স্মৃতিসৌধ স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন কাহালু উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ২।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৬০, মন্দির ২০, মাযার ৪। উল্লেখযোগ্য ধমীয় প্রতিষ্ঠান: শাহ বাবা কালুর মাযার, দরগা হাট মাযার ।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫২.১%; পুরুষ ৫৪.৯%, মহিলা ৪৯.২%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কাহালু উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৭৩), নারহট্ট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৮)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ক্লাব ৭২, সিনেমা হল ২।

বিনোদনকেন্দ্র কাহালু সদর সারাইবাজারের  ‘জেসমিন পার্ক’।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৭.৩৪%, অকৃষি শ্রমিক ২.৭৭%, শিল্প ০.৮০%, ব্যবসা ১১.২৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৪.২৭%, চাকরি ৪.৩১%, নির্মাণ ১.০১%, ধর্মীয় সেবা ০.১৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩৬% এবং অন্যান্য ৭.৭৩%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৩.০৮%, ভূমিহীন ৩৬.৯২%। শহরে ৪৮.১২% এবং গ্রামে ৬৩.৮১% পরিবারের কৃষিভূমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, সরিষা, আলু, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি আমন ধান।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, জাম, খেজুর, তাল, কলা।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার  হ্যাচারি ৮।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৪৮ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩৮৫ কিমি; রেলপথ ১২ কিমি; রেলস্টেশন ২।

শিল্প ও কলকারখানা চাল কল।

কুটিরশিল্প পাটশিল্প, তাঁতশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ, কাঠের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২০, মেলা ৯। মালকার হাট, কাহালু হাট, জামগাঁাও হাট, দূর্গাপুর হাট, ভালসুন হাট, গোয়াবিশা হাট, ইরোইল হাট, ঢাকনতলা খাবাশপুর মেলা, পাটহারা মেলা ও বড় পুকুরিয়া মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   মাছের পোনা, মাছ, ধান, চাল, খেজুর গুড়।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৬৩.১ % পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.৯%, ট্যাপ ০.৯% এবং অন্যান্য ১.২%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৬৮.০% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৩.৪% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৮.৬% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা  স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র ৪, মা ও শিশু কেন্দ্র ৪, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৮, পশুচিকিৎসা কেন্দ্র ৩।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৫৪ সালের বন্যায় এ উপজেলার কাঁচা ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। তাছাড়াও ১৯৮৮ সালের বন্যায় প্রাণহানির ঘটনাসহ অনেক ফসল নষ্ট হয়।

এনজিও আশা, ব্র্যাক, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ। [মোঃ খায়রুল আলম পুলক]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কাহালু উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন  ২০০৭।