কামারুজ্জামান, আবুল হাসনাত মোহাম্মদ

চিত্র:QamrujamanAbulHasnatMoammad.jpg
আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান

কামরুজ্জামান, আবুল হাসনাত মোহাম্মদ (১৯২৬-১৯৭৫)  আইনজীবী, রাজনীতিক। এ.এইচ.এম কামরুজ্জামান ১৯২৬ সালে রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ অনার্স এবং ১৯৪৬ সালে এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৫৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এল ডিগ্রি লাভ করে রাজশাহীতে আইন পেশায় নিয়োজিত হন। অল্প বয়সেই কামরুজ্জামান রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। তিনি ১৯৪২ সালে বঙ্গীয় মুসলিম ছাত্রলীগের রাজশাহী জেলা শাখার সম্পাদক এবং ১৯৪৩-৪৫ সালে বঙ্গীয় মুসলিম ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন।

এ.এইচ এম কামরুজ্জামান ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তিনি ১৯৬২ ও ১৯৬৫ সালে  মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থায় পর পর পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৭ সালে তিনি আওয়ামী লীগের আহবায়ক এবং ১৯৭০ সালে দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

আইয়ুব সরকারের নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১-দফা দাবির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করে  ১৯৬৯ সালে তিনি গণপরিষদের সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করেন। কামরুজ্জামান ১৯৬৯ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে প্রেসিডেন্ট  আইয়ুব খান কর্তৃক আহূত গোলটেবিল বৈঠকে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলের সদস্য ছিলেন। ১৯৭০ সালে তিনি রাজশাহী থেকে জাতীয়পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে মুজিবনগরে গঠিত অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভায় কামরুজ্জামান ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন।

স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে তিনি রাজশাহীর দুটি আসন থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭২-৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী ছিলেন। ১৯৭৪ সালে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং গঠনতন্ত্রের বিধি মোতাবেক মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৭৫ সালে নবগঠিত মন্ত্রিসভায় তিনি শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বাকশালের কার্যনির্বাহি কমিটির সদস্য ছিলেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সামরিক বাহিনীর কতিপয় সদস্যের হাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হলে দলের কয়েকজন সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তাঁকে গ্রেফতার করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রাখা হয়। কারাগারে আটক অবস্থায় ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর সেনাবাহিনীর কতিপয় সদস্যের হাতে জাতীয় অপর তিন নেতা তাজউদ্দিন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও সৈয়দ নজরুল ইসলাম সহ তিনি নৃশংসভাবে নিহত হন। [মুনতাসীর মামুন]