কাপ্তাই উপজেলা

কাপ্তাই উপজেলা (রাঙ্গামাটি জেলা)  আয়তন: ২৫৮.৯৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°২১´ থেকে ২২°৩৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°০৫´ থেকে ৯২°১৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে রাঙ্গামাটি সদর ও কাউখালী উপজেলা, দক্ষিণে রাজস্থলী উপজেলা, পূর্বে বিলাইছড়ি, পশ্চিমে রাঙ্গুনিয়া ও কাউখালী উপজেলা।

জনসংখ্যা ৫৯৬৯৩; পুরুষ ৩১৭৯৮, মহিলা ২৭৮৯৫। মুসলিম ৩০৬০৪, হিন্দু ৩৬২৬, বৌদ্ধ ২৪৯৬৯, খ্রিস্টান ৪৫২ এবং অন্যান্য ৪২। এ উপজেলায় চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গা, ত্রিপুরা প্রভৃতি আদিবাসী উপজাতির বসবাস আছে।

জলাশয় কর্ণফুলি নদী এবং কাপ্তাই হ্রদ উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন থানা গঠিত হয় ১৯৬৬ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ৭ নভেম্বর ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১০ ১৪৮ ১৪৪৭৪ ৪৫২১৯ ২৩০ ৬৯.৮ ৫৬.৮
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৪০.১৫ ১৪৪৭৪ ৩৬০ ৬৯.৮
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
ওয়াপ্পা ৮৬ ৭০৬৬ ৪৮০১ ৪৩৬৯ ৫৭.৫
কাপ্তাই ৫৭ ১৯৭৮২ ৯৪৪৩ ৭১৯৫ ৬৪.৩
চন্দ্রঘোনা ১৯ ৪৯৯২ ৬৬০৪ ৫৫৬৩ ৭৭.১
চিতমারাম ৩৮ ১৪৮৭৪ ২৬২১ ২৫১২ ৪৯.৪
রাইখালী ৭৬ ২০৮০৬ ৮৩২৯ ৮২৫৬ ৪৭.০

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকেই পাকসেনাদের সম্ভাব্য আক্রমণ ঠেকাতে এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মচারী ও স্থানীয় ছাত্রদের নিয়ে একটি সংগ্রাম কমিটি গড়ে তোলা হয়। একসময় পাকসেনারা কাপ্তাই দখল করে নিলে অবাঙালি কর্মচারি ও কর্মকর্তাবৃন্দ এবং পাকসেনাদের স্থানীয় সহযোগীরা অত্যাচার-নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজ চালায়। মুক্তিযোদ্ধারা সেসময় প্রায় কোণঠাসা হয়ে পড়লেও বিভিন্ন স্থানে চোরাগোপ্তা হামলা পরিচালনা করে।

বিস্তারিত দেখুন কাপ্তাই উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ২।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৬০.০%; পুরুষ ৬৫.৬%, মহিলা ৫৩.৫%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০০।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৩২.০২%, অকৃষি শ্রমিক ৮.১৪%, ব্যবসা ১১.৮৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.১৩%, চাকরি ৩৬.৮৩%, নির্মাণ ১.০৮%, ধর্মীয় সেবা ০.২০%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৪৬% এবং অন্যান্য ৭.২৭%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৬.৫৫%, ভূমিহীন ৪৩.৪৫%। শহরে ৬৩.৩৯% এবং গ্রামে ৪৩.৫২% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাহাড়ি আলু, তুলা, আদা, শাকসবজি।

প্রধান ফল-ফলাদি কাঁঠাল, কলা, লেবু, নারিকেল, আনারস।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৮০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৩১ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৫১ কিমি। নৌপথ ৩৫ কিমি।

শিল্প ও কলকারখানা চন্দ্রঘোনা কাগজকল, রেওনশিল্প, কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, প্রকৌশল কারখানা, স্টীল কারখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, তাঁতশিল্প, লৌহশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ, কাঠের কাজ।

দর্শনীয় স্থান কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান, কাপ্তাই লেক, ছিট মুরং বৌদ্ধ মন্দির।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   কলা, বিদ্যুৎ, তুলা, আদা, কাঁঠাল, বাঁশ ও বেত শিল্প।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৬৩.০% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয় জলের উৎস নলকূপ ৩১.৮%, ট্যাপ ২৯.৭% এবং অন্যান্য ৩৮.৫%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫৯.০% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৭.৫% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১৩.৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ৮, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১।

এনজিও আশা, প্রশিকা, হিল ভিশন।  [আতিকুর রহমান]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কাপ্তাই উপজেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।