কয়রা উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৫১ নং লাইন: ৫১ নং লাইন:


''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' বুড়ো মসজিদ (আমাদি ইউনিয়ন, পঞ্চদশ শতাব্দী), পরিমালা মূর্তি (চামুন্ডা), মালি বাড়ি মসজিদ, ঢালী বাড়ি মসজিদ, মদিনাবাদ ফকিরবাড়ি মসজিদ, মসজিদ আল হেরা, বড়বাড়ি পূজা মন্দির (উত্তর বেদকাশি), বাঁশখালি বাহাদুর বাড়ি মন্দির (বাগালি), হরিপুর কালী মন্দির (উত্তর বেদকাশি), মঠবাড়ি দূর্গা মন্দির (মহারাজপুর), রাধা গোবিন্দ মন্দির (বাগালি), মদিনাবাদ মন্দির।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' বুড়ো মসজিদ (আমাদি ইউনিয়ন, পঞ্চদশ শতাব্দী), পরিমালা মূর্তি (চামুন্ডা), মালি বাড়ি মসজিদ, ঢালী বাড়ি মসজিদ, মদিনাবাদ ফকিরবাড়ি মসজিদ, মসজিদ আল হেরা, বড়বাড়ি পূজা মন্দির (উত্তর বেদকাশি), বাঁশখালি বাহাদুর বাড়ি মন্দির (বাগালি), হরিপুর কালী মন্দির (উত্তর বেদকাশি), মঠবাড়ি দূর্গা মন্দির (মহারাজপুর), রাধা গোবিন্দ মন্দির (বাগালি), মদিনাবাদ মন্দির।
[[Image:KoyraUpazila.jpg|thumb|right]]
[[Image:KoyraUpazila.jpg|thumb|400px|right]]
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলা ৯নং সেক্টরের অধীন ছিল। এখানে ৯নং সাব-সেক্টর হেডকোয়ার্টার স্থাপিত হয়েছিল এবং এখান থেকেই মুক্তিবাহিনী ও মুজিববাহিনীর অধিকাংশ অভিযান পরিচালিত হতো। স্থানীয়ভাবে এ ইউনিয়নো ঝিলে ঘাটা গ্রামে ও বাগলি ইউনিয়নের বামিয়া গ্রামে দুইটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। এই ক্যাম্প দুইটির নাম ছিল শহীদ নারায়ণ ক্যাম্প এবং সোহারওয়ার্দী ক্যাম্প। আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ডাঃ রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে জায়গীরমহলে গঠিত গোপন চিকিৎসা কেন্দ্রটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলা ৯নং সেক্টরের অধীন ছিল। এখানে ৯নং সাব-সেক্টর হেডকোয়ার্টার স্থাপিত হয়েছিল এবং এখান থেকেই মুক্তিবাহিনী ও মুজিববাহিনীর অধিকাংশ অভিযান পরিচালিত হতো। স্থানীয়ভাবে এ ইউনিয়নো ঝিলে ঘাটা গ্রামে ও বাগলি ইউনিয়নের বামিয়া গ্রামে দুইটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। এই ক্যাম্প দুইটির নাম ছিল শহীদ নারায়ণ ক্যাম্প এবং সোহারওয়ার্দী ক্যাম্প। আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ডাঃ রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে জায়গীরমহলে গঠিত গোপন চিকিৎসা কেন্দ্রটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে



০৭:১৩, ২৭ জুলাই ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

কয়রা উপজেলা (খুলনা জেলা)  আয়তন: ১৭৭৫.৪১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°১২´ থেকে ২২°৩১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°১৫´ থেকে ৮৯°২৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে পাইকগাছা উপজেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবন বনাঞ্চল, পুর্বে দাকোপ উপজেলা, পশ্চিমে আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৯২৫৩৪; পুরুষ ৯৫৯৯৩, মহিলা ৯৬৫৪১। মুসলিম ১৪৯৩২১, হিন্দু ৪২৪৬২, বৌদ্ধ ৪৫৪ এবং অন্যান্য ২৯৭।

জলাশয় ধরলা, পশুর, অর্পণগাছিয়া, তালধুপ নদী এবং কয়রা খাল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন কয়রা  থানা গঠিত হয় ১৯৮০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৭২ ১৩১ ১১৩৪২ ১৮১১৯২ ১০৮ ৪৫.২১ ৪৪.৪২
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১০.০৬ ১১৩৪২ ১১২৭ ৪৫.২১
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আমাদি ০৫ ১০২৫৫ ১৬০৬৬ ১৬০৫৮ ৪৬.০০
উত্তর বেদকাশি ৯৪ ৫৫৪৪ ৭২৮০ ৭১৫১ ৪২.৯৬
কয়রা ৫৫ ৮২৫০ ১৫৮৯৯ ১৬৬০০ ৪৩.৬৬
দক্ষিণ বেদকাশি ২২ ৫৯৭১ ৯৭৭৮ ৯৬২২ ৩৮.৩৫
বাগালি ১১ ১১৯৮৫ ১৬১৭৯ ১৬৯৭৯ ৪৪.৮৭
মহারাজপুর ৭২ ১০৪৭৪ ১৫২১০ ১৫২৬৭ ৪৫.১৩
মহেশ্বরীপুর ৭৮ ১২৫৪১ ১৫৫৮১ ১৪৮৬৮ ৪৭.০৬

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ বুড়ো মসজিদ (আমাদি ইউনিয়ন, পঞ্চদশ শতাব্দী), পরিমালা মূর্তি (চামুন্ডা), মালি বাড়ি মসজিদ, ঢালী বাড়ি মসজিদ, মদিনাবাদ ফকিরবাড়ি মসজিদ, মসজিদ আল হেরা, বড়বাড়ি পূজা মন্দির (উত্তর বেদকাশি), বাঁশখালি বাহাদুর বাড়ি মন্দির (বাগালি), হরিপুর কালী মন্দির (উত্তর বেদকাশি), মঠবাড়ি দূর্গা মন্দির (মহারাজপুর), রাধা গোবিন্দ মন্দির (বাগালি), মদিনাবাদ মন্দির।

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলা ৯নং সেক্টরের অধীন ছিল। এখানে ৯নং সাব-সেক্টর হেডকোয়ার্টার স্থাপিত হয়েছিল এবং এখান থেকেই মুক্তিবাহিনী ও মুজিববাহিনীর অধিকাংশ অভিযান পরিচালিত হতো। স্থানীয়ভাবে এ ইউনিয়নো ঝিলে ঘাটা গ্রামে ও বাগলি ইউনিয়নের বামিয়া গ্রামে দুইটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। এই ক্যাম্প দুইটির নাম ছিল শহীদ নারায়ণ ক্যাম্প এবং সোহারওয়ার্দী ক্যাম্প। আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ডাঃ রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে জায়গীরমহলে গঠিত গোপন চিকিৎসা কেন্দ্রটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন বধ্যভূমি ১ (কয়রা ৪ নং লঞ্চঘাট এলাকায় মড়িঘাটা)।

উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বুড়ো মসজিদ (আমাদী), মালি বাড়ি মসজিদ, ঢালী বাড়ি মসজিদ, মদিনাবাদ ফকিরবাড়ি মসজিদ, মসজিদ আল হেরা, বড়বাড়ি পূজা মন্দির (উত্তর বেদকাশি), বাঁশখালি বাহাদুর বাড়ি মন্দির, হরিপুর কালী মন্দির (উত্তর বেদকাশি), মঠবাড়ি দূর্গা মন্দির (মহারাজপুর), রাধা গোবিন্দ মন্দির (বাগালি), মদিনাবাদ মন্দির।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩২.৪%; পুরুষ ৪৩.৬%, মহিলা ২১.৪%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১২, কমিউনিটি বিদ্যালয় ১১, স্যাটেলাইট বিদ্যালয় ৯, মাদ্রাসা ২৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয় (১৯৮৪), জোবেদা খানম কলেজ (১৯৯৬), কমরউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, কয়রা মদিনাবাদ হাইস্কুল, সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উত্তর বেদকাশি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ বেদকাশি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আমাদি হাইস্কুল।

পত্র-পত্রিকা  ও সাময়িকী কপোতাক্ষ (২০০২)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্র ১২।

দর্শনীয় স্থান পূর্ব ও দক্ষিণে বিস্তৃত সুন্দরবন এবং সুন্দরবনের প্রবেশদ্বারে (মহেশ্বরীপুর) পর্যটন কেন্দ্র উল্লেখযোগ্য।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৬.৬৪%, অকৃষি শ্রমিক ৭.১২%, শিল্প ০.৫১%, ব্যবসা ১২.৬৬%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৮৫%, চাকরি ৩.৫৪%, নির্মাণ ১.৩১%, ধর্মীয় সেবা ০.৩১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.০৯% এবং অন্যান্য ৫.৯৭%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬২.৭৬%, ভূমিহীন ৩৭.২৪%। শহরে ৬৩.৫১% এবং গ্রামে ৫০.৭৪% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, আলু, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি, কাউন, আখ।

প্রধান ফল-ফলাদিব আম, জাম, কলা, কাঁঠাল, নারিকেল, পেঁপে, সুপারি, তরমুজ।

মৎস্য খামার  চিংড়ি ঘের ৩১৩৮, পোনা উৎপাদন খামার ৫, চিংড়ি ডিপো ২৭৩, নার্সারি ৬।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ২১ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৮০ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৪২ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পালকি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা চাল কল, তেল কল, ময়দা কল, কাঠ চেরাই কল, বরফ কল।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৮। হুগলা হাট, আমাদি হাট, ঘড়িলাল হাট, সুতার হাট, গুগরোকাটি হাট, খোড়লকাটি হাট, জোরসিং বাজার এবং দক্ষিণ বেদকাশি বনবিবির মেলা, পদ্মপুকুর রথ মেলা, হরিহরপুর রথ মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  মাছের পোনা, সুন্দরবনের গাছ, গোলপাতা, মধু, কাঠ, হস্তশিল্প।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিলবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫.৪৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৪৩.৮২%, ট্যাপ ১.০৮%, পুকুর ৫৪.৯৭% এবং অন্যান্য ০.১৩%। এ উপজেলায় ১৯৯ টি অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৩০.৯৭% (গ্রামে ৩২.৪৩% এবং শহরে ৭.৩৬%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৯.৮ু% (গ্রামে ৫৮.০৩% এবং শহরে ৮৮.২৯%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৯.২৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ১, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, দাতব্য চিকিৎসালয় ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ২, ক্লিনিক ৮।

এনজিও ব্র্যাক, প্রশিকা, প্রদীপন।  [মোঃ আশরাফুল ইসলাম গোলদার]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কয়রা উপজেলা মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০০৭।