কয়রা উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
(একজন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''কয়রা উপজেলা''' (খুলনা জেলা)   আয়তন: ১৭৭৫.৪১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°১২´ থেকে ২২°৩১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°১৫´ থেকে ৮৯°২৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে পাইকগাছা উপজেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবন বনাঞ্চল, পুর্বে দাকোপ উপজেলা, পশ্চিমে আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলা।
'''কয়রা উপজেলা''' ([[খুলনা জেলা]])   আয়তন: ১৭৭৫.৪০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°১২´ থেকে ২২°৩১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°১৫´ থেকে ৮৯°২৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে পাইকগাছা উপজেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবন বনাঞ্চল, পুর্বে দাকোপ উপজেলা, পশ্চিমে আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ১৯২৫৩৪; পুরুষ ৯৫৯৯৩, মহিলা ৯৬৫৪১। মুসলিম ১৪৯৩২১, হিন্দু ৪২৪৬২, বৌদ্ধ ৪৫৪ এবং অন্যান্য ২৯৭।
''জনসংখ্যা'' ১৯৩৯৩১; পুরুষ ৯৫৩৯৩, মহিলা ৯৮৫৩৮। মুসলিম ১৫২৯৮০, হিন্দু ৪০১৯৭, খিস্টান ৪৭৬ এবং অন্যান্য ২৭৮।


''জলাশয়'' ধরলা, পশুর, অর্পণগাছিয়া, তালধুপ নদী এবং কয়রা খাল উল্লেখযোগ্য।
''জলাশয়'' ধরলা, পশুর, অর্পণগাছিয়া, তালধুপ নদী এবং কয়রা খাল উল্লেখযোগ্য।
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| - || ৭ || ৭২ || ১৩১  || ১১৩৪২  || ১৮১১৯২  || ১০৮  || ৪৫.২১  || ৪৪.৪২
| - || ৭ || ৭২ || ১৩৩ || ১১৫৯৪ || ১৮২৩৩৭ || ১০৯ || ৫৮.|| ৪৯.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
২৪ নং লাইন: ২৪ নং লাইন:
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ১০.০৬ || ১ || ১১৩৪২  || ১১২৭  || ৪৫.২১
| ১০.০৬ || ১ || ১১৫৯৪ || ১১৫২ || ৫৮.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৩৪ নং লাইন: ৩৪ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-  
|-  
| আমাদি ০৫  || ১০২৫৫  || ১৬০৬৬  || ১৬০৫৮  || ৪৬.০০
| আমাদি ১০ || ১০৩৪৭ || ১৬৩৫২ || ১৬৮৩২ || ৫৬.
|-
|-
| উত্তর বেদকাশি ৯৪ || ৫৫৪৪  || ৭২৮০  || ৭১৫১  || ৪২.৯৬
| উত্তর বেদকাশি ৯৪ || ১০২৫৪৮ || ৭৫১২ || ৭৭১৩ || ৫৫.
|-
|-
| কয়রা ৫৫ || ৮২৫০  || ১৫৮৯৯  || ১৬৬০০  || ৪৩.৬৬
| কয়রা ৫৫ || ১৫২৪৮৪ || ১৬৩২৭ || ১৬৯০৩ || ৫২.
|-
|-
| দক্ষিণ বেদকাশি ২২ || ৫৯৭১  || ৯৭৭৮  || ৯৬২২  || ৩৮.৩৫
| দক্ষিণ বেদকাশি ২২ || ১১০৪৫২ || ৮৩৭০ || ৮৩৮৫ || ৩৬.
|-
|-
| বাগালি ১১ || ১১৯৮৫  || ১৬১৭৯  || ১৬৯৭৯  || ৪৪.৮৭
| বাগালি ১১ || ১২০৫০ || ১৬৮৪০ || ১৭৬৩৭ || ৫০.
|-
|-
| মহারাজপুর ৭২ || ১০৪৭৪  || ১৫২১০  || ১৫২৬৭  || ৪৫.১৩
| মহারাজপুর ৭২ || ১৯৩২৯৮ || ১৪৯৯৪ || ১৬০৭৪ || ৪১.
|-
|-
| মহেশ্বরীপুর ৭৮ || ১২৫৪১  || ১৫৫৮১  || ১৪৮৬৮  || ৪৭.০৬
| মহেশ্বরীপুর ৭৮ || ২৩১৭৯৩ || ১৪৯৯৮ || ১৪৯৯৪ || ৫৬.
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' বুড়ো মসজিদ (আমাদি ইউনিয়ন, পঞ্চদশ শতাব্দী), পরিমালা মূর্তি (চামুন্ডা), মালি বাড়ি মসজিদ, ঢালী বাড়ি মসজিদ, মদিনাবাদ ফকিরবাড়ি মসজিদ, মসজিদ আল হেরা, বড়বাড়ি পূজা মন্দির (উত্তর বেদকাশি), বাঁশখালি বাহাদুর বাড়ি মন্দির (বাগালি), হরিপুর কালী মন্দির (উত্তর বেদকাশি), মঠবাড়ি দূর্গা মন্দির (মহারাজপুর), রাধা গোবিন্দ মন্দির (বাগালি), মদিনাবাদ মন্দির।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' বুড়ো মসজিদ (আমাদি ইউনিয়ন, পঞ্চদশ শতাব্দী), পরিমালা মূর্তি (চামুন্ডা), মালি বাড়ি মসজিদ, ঢালী বাড়ি মসজিদ, মদিনাবাদ ফকিরবাড়ি মসজিদ, মসজিদ আল হেরা, বড়বাড়ি পূজা মন্দির (উত্তর বেদকাশি), বাঁশখালি বাহাদুর বাড়ি মন্দির (বাগালি), হরিপুর কালী মন্দির (উত্তর বেদকাশি), মঠবাড়ি দূর্গা মন্দির (মহারাজপুর), রাধা গোবিন্দ মন্দির (বাগালি), মদিনাবাদ মন্দির।
[[Image:KoyraUpazila.jpg|thumb|right]]
[[Image:KoyraUpazila.jpg|thumb|400px|right]]
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলা ৯নং সেক্টরের অধীন ছিল। এখানে ৯নং সাব-সেক্টর হেডকোয়ার্টার স্থাপিত হয়েছিল এবং এখান থেকেই মুক্তিবাহিনী ও মুজিববাহিনীর অধিকাংশ অভিযান পরিচালিত হতো। স্থানীয়ভাবে এ ইউনিয়নো ঝিলে ঘাটা গ্রামে ও বাগলি ইউনিয়নের বামিয়া গ্রামে দুইটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। এই ক্যাম্প দুইটির নাম ছিল শহীদ নারায়ণ ক্যাম্প এবং সোহারওয়ার্দী ক্যাম্প। আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ডাঃ রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে জায়গীরমহলে গঠিত গোপন চিকিৎসা কেন্দ্রটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' বধ্যভূমি ১ (কয়রা ৪ নং লঞ্চঘাট এলাকায় মড়িঘাটা)।
''মুক্তিযুদ্ধ'' মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলা ৯নং সেক্টরের অধীন ছিল। এখানে ৯নং সাব-সেক্টর হেডকোয়ার্টার স্থাপিত হয়েছিল এবং এখান থেকেই মুক্তিবাহিনী ও মুজিববাহিনীর অধিকাংশ অভিযান পরিচালিত হতো। স্থানীয়ভাবে এ ইউনিয়নো ঝিলে ঘাটা গ্রামে ও বাগলি ইউনিয়নের বামিয়া গ্রামে দুইটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। এই ক্যাম্প দুইটির নাম ছিল শহীদ নারায়ণ ক্যাম্প এবং সোহারওয়ার্দী ক্যাম্প। আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ডাঃ রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে জায়গীরমহলে গঠিত গোপন চিকিৎসা কেন্দ্রটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কয়রা ৪ নং লঞ্চঘাট এলাকার মড়িঘাটায় ১টি বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া গেছে।


''উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' বুড়ো মসজিদ (আমাদী), মালি বাড়ি মসজিদ, ঢালী বাড়ি মসজিদ, মদিনাবাদ ফকিরবাড়ি মসজিদ, মসজিদ আল হেরা, বড়বাড়ি পূজা মন্দির (উত্তর বেদকাশি), বাঁশখালি বাহাদুর বাড়ি মন্দির, হরিপুর কালী মন্দির (উত্তর বেদকাশি), মঠবাড়ি দূর্গা মন্দির (মহারাজপুর), রাধা গোবিন্দ মন্দির (বাগালি), মদিনাবাদ মন্দির।
''বিস্তারিত দেখুন'' কয়রা উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ২।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩২.৪%; পুরুষ ৪৩.%, মহিলা ২১.%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১২, কমিউনিটি বিদ্যালয় ১১, স্যাটেলাইট বিদ্যালয় ৯, মাদ্রাসা ২৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয় (১৯৮৪), জোবেদা খানম কলেজ (১৯৯৬), কমরউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, কয়রা মদিনাবাদ হাইস্কুল, সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উত্তর বেদকাশি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ বেদকাশি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আমাদি হাইস্কুল।
''উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  বুড়ো মসজিদ(আমাদী), মালি বাড়ি মসজিদ, ঢালী বাড়ি মসজিদ, মদিনাবাদ ফকিরবাড়ি মসজিদ, মসজিদ আল হেরা, বড়বাড়ি পূজা মন্দির (উত্তর বেদকাশি), বাঁশখালি বাহাদুর বাড়ি মন্দির, হরিপুর কালী মন্দির (উত্তর বেদকাশি), মঠবাড়ি দূর্গা মন্দির (মহারাজপুর), রাধা গোবিন্দ মন্দির (বাগালি), মদিনাবাদ মন্দির।
 
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫০.৪%; পুরুষ ৫৫.%, মহিলা ৪৫.%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১২, কমিউনিটি বিদ্যালয় ১১, স্যাটেলাইট বিদ্যালয় ৯, মাদ্রাসা ২৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয় (১৯৮৪), জোবেদা খানম কলেজ (১৯৯৬), কমরউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, কয়রা মদিনাবাদ হাইস্কুল, সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উত্তর বেদকাশি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ বেদকাশি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আমাদি হাইস্কুল।


''পত্র-পত্রিকা  ও সাময়িকী'' কপোতাক্ষ (২০০২)।
''পত্র-পত্রিকা  ও সাময়িকী'' কপোতাক্ষ (২০০২)।
৭৮ নং লাইন: ৭৯ নং লাইন:
''মৎস্য খামার''  চিংড়ি ঘের ৩১৩৮, পোনা উৎপাদন খামার ৫, চিংড়ি ডিপো ২৭৩, নার্সারি ৬।
''মৎস্য খামার''  চিংড়ি ঘের ৩১৩৮, পোনা উৎপাদন খামার ৫, চিংড়ি ডিপো ২৭৩, নার্সারি ৬।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ২১ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৮০ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৪২ কিমি।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৪৬ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৭২ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩৯৪ কিমি; নৌপথ ৫ কিমি।  


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পালকি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পালকি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।
৮৮ নং লাইন: ৮৯ নং লাইন:
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  মাছের পোনা, সুন্দরবনের গাছ, গোলপাতা, মধু, কাঠ, হস্তশিল্প।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  মাছের পোনা, সুন্দরবনের গাছ, গোলপাতা, মধু, কাঠ, হস্তশিল্প।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিলবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে .৪৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৫.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৪৩.৮২%, ট্যাপ .০৮%, পুকুর ৫৪.৯৭% এবং অন্যান্য .১৩%। এ উপজেলায় ১৯৯ টি অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৪৪.%, ট্যাপ .% এবং অন্যান্য ৫৫.%। এ উপজেলায় ১৯৯ টি অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৩০.৯৭% (গ্রামে ৩২.৪৩% এবং শহরে ৭.৩৬%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৯.৮ু% (গ্রামে ৫৮.০৩% এবং শহরে ৮৮.২৯%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৯.২৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৫৮.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৩.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৮.৯% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' হাসপাতাল ১, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, দাতব্য চিকিৎসালয় ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ২, ক্লিনিক ৮।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' হাসপাতাল ১, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, দাতব্য চিকিৎসালয় ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ২, ক্লিনিক ৮।
৯৮ নং লাইন: ৯৯ নং লাইন:
''এনজিও'' ব্র্যাক, প্রশিকা, প্রদীপন।  [মোঃ আশরাফুল ইসলাম গোলদার]
''এনজিও'' ব্র্যাক, প্রশিকা, প্রদীপন।  [মোঃ আশরাফুল ইসলাম গোলদার]


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কয়রা উপজেলা মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কয়রা উপজেলা মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Koyra Upazila]]
[[en:Koyra Upazila]]

১০:৪৬, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

কয়রা উপজেলা (খুলনা জেলা)  আয়তন: ১৭৭৫.৪০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°১২´ থেকে ২২°৩১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°১৫´ থেকে ৮৯°২৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে পাইকগাছা উপজেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবন বনাঞ্চল, পুর্বে দাকোপ উপজেলা, পশ্চিমে আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৯৩৯৩১; পুরুষ ৯৫৩৯৩, মহিলা ৯৮৫৩৮। মুসলিম ১৫২৯৮০, হিন্দু ৪০১৯৭, খিস্টান ৪৭৬ এবং অন্যান্য ২৭৮।

জলাশয় ধরলা, পশুর, অর্পণগাছিয়া, তালধুপ নদী এবং কয়রা খাল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন কয়রা  থানা গঠিত হয় ১৯৮০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৭২ ১৩৩ ১১৫৯৪ ১৮২৩৩৭ ১০৯ ৫৮.১ ৪৯.৯
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১০.০৬ ১১৫৯৪ ১১৫২ ৫৮.১
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আমাদি ১০ ১০৩৪৭ ১৬৩৫২ ১৬৮৩২ ৫৬.৬
উত্তর বেদকাশি ৯৪ ১০২৫৪৮ ৭৫১২ ৭৭১৩ ৫৫.৫
কয়রা ৫৫ ১৫২৪৮৪ ১৬৩২৭ ১৬৯০৩ ৫২.৪
দক্ষিণ বেদকাশি ২২ ১১০৪৫২ ৮৩৭০ ৮৩৮৫ ৩৬.৬
বাগালি ১১ ১২০৫০ ১৬৮৪০ ১৭৬৩৭ ৫০.৩
মহারাজপুর ৭২ ১৯৩২৯৮ ১৪৯৯৪ ১৬০৭৪ ৪১.০
মহেশ্বরীপুর ৭৮ ২৩১৭৯৩ ১৪৯৯৮ ১৪৯৯৪ ৫৬.০

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ বুড়ো মসজিদ (আমাদি ইউনিয়ন, পঞ্চদশ শতাব্দী), পরিমালা মূর্তি (চামুন্ডা), মালি বাড়ি মসজিদ, ঢালী বাড়ি মসজিদ, মদিনাবাদ ফকিরবাড়ি মসজিদ, মসজিদ আল হেরা, বড়বাড়ি পূজা মন্দির (উত্তর বেদকাশি), বাঁশখালি বাহাদুর বাড়ি মন্দির (বাগালি), হরিপুর কালী মন্দির (উত্তর বেদকাশি), মঠবাড়ি দূর্গা মন্দির (মহারাজপুর), রাধা গোবিন্দ মন্দির (বাগালি), মদিনাবাদ মন্দির।

মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলা ৯নং সেক্টরের অধীন ছিল। এখানে ৯নং সাব-সেক্টর হেডকোয়ার্টার স্থাপিত হয়েছিল এবং এখান থেকেই মুক্তিবাহিনী ও মুজিববাহিনীর অধিকাংশ অভিযান পরিচালিত হতো। স্থানীয়ভাবে এ ইউনিয়নো ঝিলে ঘাটা গ্রামে ও বাগলি ইউনিয়নের বামিয়া গ্রামে দুইটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। এই ক্যাম্প দুইটির নাম ছিল শহীদ নারায়ণ ক্যাম্প এবং সোহারওয়ার্দী ক্যাম্প। আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ডাঃ রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে জায়গীরমহলে গঠিত গোপন চিকিৎসা কেন্দ্রটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কয়রা ৪ নং লঞ্চঘাট এলাকার মড়িঘাটায় ১টি বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া গেছে।

বিস্তারিত দেখুন কয়রা উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ২।

উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বুড়ো মসজিদ(আমাদী), মালি বাড়ি মসজিদ, ঢালী বাড়ি মসজিদ, মদিনাবাদ ফকিরবাড়ি মসজিদ, মসজিদ আল হেরা, বড়বাড়ি পূজা মন্দির (উত্তর বেদকাশি), বাঁশখালি বাহাদুর বাড়ি মন্দির, হরিপুর কালী মন্দির (উত্তর বেদকাশি), মঠবাড়ি দূর্গা মন্দির (মহারাজপুর), রাধা গোবিন্দ মন্দির (বাগালি), মদিনাবাদ মন্দির।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫০.৪%; পুরুষ ৫৫.৮%, মহিলা ৪৫.২%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১২, কমিউনিটি বিদ্যালয় ১১, স্যাটেলাইট বিদ্যালয় ৯, মাদ্রাসা ২৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয় (১৯৮৪), জোবেদা খানম কলেজ (১৯৯৬), কমরউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, কয়রা মদিনাবাদ হাইস্কুল, সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উত্তর বেদকাশি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ বেদকাশি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আমাদি হাইস্কুল।

পত্র-পত্রিকা  ও সাময়িকী কপোতাক্ষ (২০০২)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্র ১২।

দর্শনীয় স্থান পূর্ব ও দক্ষিণে বিস্তৃত সুন্দরবন এবং সুন্দরবনের প্রবেশদ্বারে (মহেশ্বরীপুর) পর্যটন কেন্দ্র উল্লেখযোগ্য।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৬.৬৪%, অকৃষি শ্রমিক ৭.১২%, শিল্প ০.৫১%, ব্যবসা ১২.৬৬%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৮৫%, চাকরি ৩.৫৪%, নির্মাণ ১.৩১%, ধর্মীয় সেবা ০.৩১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.০৯% এবং অন্যান্য ৫.৯৭%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬২.৭৬%, ভূমিহীন ৩৭.২৪%। শহরে ৬৩.৫১% এবং গ্রামে ৫০.৭৪% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, আলু, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি, কাউন, আখ।

প্রধান ফল-ফলাদিব আম, জাম, কলা, কাঁঠাল, নারিকেল, পেঁপে, সুপারি, তরমুজ।

মৎস্য খামার  চিংড়ি ঘের ৩১৩৮, পোনা উৎপাদন খামার ৫, চিংড়ি ডিপো ২৭৩, নার্সারি ৬।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৪৬ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৭২ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩৯৪ কিমি; নৌপথ ৫ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পালকি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা চাল কল, তেল কল, ময়দা কল, কাঠ চেরাই কল, বরফ কল।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৮। হুগলা হাট, আমাদি হাট, ঘড়িলাল হাট, সুতার হাট, গুগরোকাটি হাট, খোড়লকাটি হাট, জোরসিং বাজার এবং দক্ষিণ বেদকাশি বনবিবির মেলা, পদ্মপুকুর রথ মেলা, হরিহরপুর রথ মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  মাছের পোনা, সুন্দরবনের গাছ, গোলপাতা, মধু, কাঠ, হস্তশিল্প।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৫.২% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৪৪.৩%, ট্যাপ ০.৩% এবং অন্যান্য ৫৫.৪%। এ উপজেলায় ১৯৯ টি অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫৮.০% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৩.১% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৮.৯% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ১, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, দাতব্য চিকিৎসালয় ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ২, ক্লিনিক ৮।

এনজিও ব্র্যাক, প্রশিকা, প্রদীপন।  [মোঃ আশরাফুল ইসলাম গোলদার]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কয়রা উপজেলা মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০০৭।