এতিমখানা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
এতিমখানা  পিতৃ-মাতৃহীন শিশু এবং সন্তান পালনে আর্থিক সঙ্গতিহীন পিতামাতার সন্তানদের প্রতিপালনের জন্য পরিচালিত আবাসিক প্রতিষ্ঠান। দেশের বেশিরভাগ এতিমখানা যাকাত বা অন্যান্য ধর্মীয় দানের টাকায় চলে। এতিম শব্দের আভিধানিক অর্থ একাকী বা নিঃসঙ্গ হয়ে যাওয়া, অবজ্ঞা বা অযত্ন প্রদর্শন করা। যে বালক বা বালিকা প্রাপ্তবয়স্ক হবার পূর্বে পিতৃহারা হয়ে পিতৃস্নেহ বঞ্চিত হয়, পারিভাষিক অর্থে তাকে এতিম বলা হয়। বাংলায় এতিমের প্রতিশব্দ হলো অনাথ। ইসলামি সংস্কৃতিতে মাতৃহারা শিশু ও বালকবালিকাকে বলা হয় ‘আজিয্যু’। এতিম অবস্থা সাধারণত বয়ঃপ্রাপ্তির পর শেষ হয়ে যায়। ইসলামে এতিমদের প্রতি বিশেষ যত্নবান হওয়ার নির্দেশ রয়েছে। ইসলামের প্রাথমিকযুগে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সমস্যার অন্যতম ছিল এতিম শিশুদের প্রতিপালন, যারা অতি কম বয়সে পিতৃহারা হওয়ার কারণে পিতৃস্নেহ বঞ্চিত হয়েছিল।আবহমান কাল থেকে বঙ্গদেশে এতিম শিশুদের আশ্রয়দান ও প্রতিপালনের লক্ষ্যে ব্যক্তি উদ্যোগ ও সমষ্টিক পরিচালনায় গড়ে উঠেছে বহুসংখ্যক এতিমখানা। যাকাতের অর্থ এবং ব্যক্তিবিশেষের দানে পরিচালিত হয়ে আসছে এসব প্রতিষ্ঠান। ব্রিটিশ শাসনামল থেকেই এতিমখানা ও অনাথ আশ্রমে সরকারি অর্থমঞ্জুরী দানের বিধান চালু করা হয়। আমাদের দেশে বর্তমানে দু’ধরণের এতিমখানা চালু রয়েছে, কোনো মাদ্রাসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ‘লিল্লাহ বোর্ডিং’ নামীয় এতিমখানা এবং স্বতন্ত্র এতিমখানা যেখানে আশ্রয় প্রতিপালনসহ এতিম শিশুদের শিক্ষাদানের ব্যবস্থাও চালু রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে সরকারি শিশুসদন নামে সরকার পরিচালিত এতিমখানা।'''সরকারি শিশু সদন ''' এতিম শিশুদের প্রতিপালন, প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে ১৯৪৪ সালে এতিম এবং বিধবা-সদন আইন প্রণীত হয়। এ আইনে সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের অধীনে  সমাজসেবা অধিদফতরের আওতায় জেলা ও থানা সদরে সরকারি এতিমখানা চালু করা হয়। আর এসব এতিমখানাকে পরবর্তীকালে শিশুসদন এবং বর্তমানে শিশু পরিবার হিসেবে রূপান্তরের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৭৩টি এবং এসব প্রতিষ্ঠানে ৯৫০০ এতিম ছেলেমেয়েকে প্রতিপালন, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, কর্মসংস্থান ও অন্যান্য উপায়ে আর্থসামাজিকভাবে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। এছাড়াও ১৬৩০টি বেসরকারি এতিমখানার পরিচালনার দায়িত্ব ১৯৬১ সালে শিক্ষা দপ্তর হতে সমাজকল্যাণ পরিদপ্তরে ন্যস্ত করা হয়। পরবর্তীকালে সরকারি এতিমখানার নামকরণ করা হয় সরকারি শিশু সদন। এসকল প্রতিষ্ঠানকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও এর কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। সমাজসেবা অধিদপ্তর জাতি গঠনমূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে শিশুকল্যাণ ও উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। শিশুদের কল্যাণ এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রচলিত আইন, সাংবিধানিক অঙ্গিকার, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেয় প্রতিশ্রুতিকে সমাজসেবা অধিদপ্তর অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে শিশুকল্যাণ ও উন্নয়নের জন্য টেকসই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতির ১৫ (ঘ) অনুচ্ছেদে পিতৃ-মাতৃহীন এতিম ঘোষিত শিশুদের প্রতি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন এবং সমাজকল্যাণ দর্শনের আদর্শে ব্রতী হয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সমাজসেবা অধিদফতর সরকারি শিশু সদন/শিশু পরিবার পরিচালনা করে আসছে। ১৯৬১ সালে শিক্ষা দফতর হতে সরকারি এতিমখানাগুলিকে সরকারি শিশু সদন হিসেবে নামকরণ করা হয়। বর্তমানে পারিবারিক পরিবেশে এতিম শিশুদের ছোট ছোট দলে বিভক্ত করে সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান ও সাহচর্য প্রদানের মাধ্যমে প্রতিপালনের জন্য শিশু সদনগুলিকে সরকারি শিশু পরিবারে রূপান্তরের কাজ অব্যহত আছে। ১৯৪৪ সালে এতিমখানা এবং বিধবা সদন আইন, ১৯৭৪ সালের শিশু আইনের বিধান মোতাবেক পিতৃ-মাতৃহীন এতিম ও দুঃস্থ শিশুদের পূর্ণ মর্যাদা প্রদান, তাদের অধিকার এবং স্বার্থ সংরক্ষণ বিষয়ে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ২০১১ সালের মধ্যে নতুন ৯টি শিশু পরিবার স্থাপন করা হয়েছে। শিশু সদন/শিশু পরিবারে দরিদ্র পরিবারের ৬ বছর হতে ৯ বছর বয়সী এতিম ছেলেমেয়েরা ভর্তির যোগ্য।  [এ.কে.এম ইয়াকুব হোসাইন]
'''এতিমখানা'''  পিতৃ-মাতৃহীন শিশু এবং সন্তান পালনে আর্থিক সঙ্গতিহীন পিতামাতার সন্তানদের প্রতিপালনের জন্য পরিচালিত আবাসিক প্রতিষ্ঠান। দেশের বেশিরভাগ এতিমখানা যাকাত বা অন্যান্য ধর্মীয় দানের টাকায় চলে। এতিম শব্দের আভিধানিক অর্থ একাকী বা নিঃসঙ্গ হয়ে যাওয়া, অবজ্ঞা বা অযত্ন প্রদর্শন করা। যে বালক বা বালিকা প্রাপ্তবয়স্ক হবার পূর্বে পিতৃহারা হয়ে পিতৃস্নেহ বঞ্চিত হয়, পারিভাষিক অর্থে তাকে এতিম বলা হয়। বাংলায় এতিমের প্রতিশব্দ হলো অনাথ। ইসলামি সংস্কৃতিতে মাতৃহারা শিশু ও বালকবালিকাকে বলা হয় ‘আজিয্যু’। এতিম অবস্থা সাধারণত বয়ঃপ্রাপ্তির পর শেষ হয়ে যায়। ইসলামে এতিমদের প্রতি বিশেষ যত্নবান হওয়ার নির্দেশ রয়েছে। ইসলামের প্রাথমিকযুগে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সমস্যার অন্যতম ছিল এতিম শিশুদের প্রতিপালন, যারা অতি কম বয়সে পিতৃহারা হওয়ার কারণে পিতৃস্নেহ বঞ্চিত হয়েছিল।আবহমান কাল থেকে বঙ্গদেশে এতিম শিশুদের আশ্রয়দান ও প্রতিপালনের লক্ষ্যে ব্যক্তি উদ্যোগ ও সমষ্টিক পরিচালনায় গড়ে উঠেছে বহুসংখ্যক এতিমখানা। যাকাতের অর্থ এবং ব্যক্তিবিশেষের দানে পরিচালিত হয়ে আসছে এসব প্রতিষ্ঠান। ব্রিটিশ শাসনামল থেকেই এতিমখানা ও অনাথ আশ্রমে সরকারি অর্থমঞ্জুরী দানের বিধান চালু করা হয়। আমাদের দেশে বর্তমানে দু’ধরণের এতিমখানা চালু রয়েছে, কোনো মাদ্রাসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ‘লিল্লাহ বোর্ডিং’ নামীয় এতিমখানা এবং স্বতন্ত্র এতিমখানা যেখানে আশ্রয় প্রতিপালনসহ এতিম শিশুদের শিক্ষাদানের ব্যবস্থাও চালু রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে সরকারি শিশুসদন নামে সরকার পরিচালিত এতিমখানা।
 
'''''সরকারি শিশু সদন''''' এতিম শিশুদের প্রতিপালন, প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে ১৯৪৪ সালে এতিম এবং বিধবা-সদন আইন প্রণীত হয়। এ আইনে সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের অধীনে  সমাজসেবা অধিদফতরের আওতায় জেলা ও থানা সদরে সরকারি এতিমখানা চালু করা হয়। আর এসব এতিমখানাকে পরবর্তীকালে শিশুসদন এবং বর্তমানে শিশু পরিবার হিসেবে রূপান্তরের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৭৩টি এবং এসব প্রতিষ্ঠানে ৯৫০০ এতিম ছেলেমেয়েকে প্রতিপালন, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, কর্মসংস্থান ও অন্যান্য উপায়ে আর্থসামাজিকভাবে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। এছাড়াও ১৬৩০টি বেসরকারি এতিমখানার পরিচালনার দায়িত্ব ১৯৬১ সালে শিক্ষা দপ্তর হতে সমাজকল্যাণ পরিদপ্তরে ন্যস্ত করা হয়। পরবর্তীকালে সরকারি এতিমখানার নামকরণ করা হয় সরকারি শিশু সদন। এসকল প্রতিষ্ঠানকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও এর কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। সমাজসেবা অধিদপ্তর জাতি গঠনমূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে শিশুকল্যাণ ও উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। শিশুদের কল্যাণ এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রচলিত আইন, সাংবিধানিক অঙ্গিকার, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেয় প্রতিশ্রুতিকে সমাজসেবা অধিদপ্তর অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে শিশুকল্যাণ ও উন্নয়নের জন্য টেকসই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতির ১৫ (ঘ) অনুচ্ছেদে পিতৃ-মাতৃহীন এতিম ঘোষিত শিশুদের প্রতি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন এবং সমাজকল্যাণ দর্শনের আদর্শে ব্রতী হয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সমাজসেবা অধিদফতর সরকারি শিশু সদন/শিশু পরিবার পরিচালনা করে আসছে। ১৯৬১ সালে শিক্ষা দফতর হতে সরকারি এতিমখানাগুলিকে সরকারি শিশু সদন হিসেবে নামকরণ করা হয়। বর্তমানে পারিবারিক পরিবেশে এতিম শিশুদের ছোট ছোট দলে বিভক্ত করে সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান ও সাহচর্য প্রদানের মাধ্যমে প্রতিপালনের জন্য শিশু সদনগুলিকে সরকারি শিশু পরিবারে রূপান্তরের কাজ অব্যহত আছে। ১৯৪৪ সালে এতিমখানা এবং বিধবা সদন আইন, ১৯৭৪ সালের শিশু আইনের বিধান মোতাবেক পিতৃ-মাতৃহীন এতিম ও দুঃস্থ শিশুদের পূর্ণ মর্যাদা প্রদান, তাদের অধিকার এবং স্বার্থ সংরক্ষণ বিষয়ে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ২০১১ সালের মধ্যে নতুন ৯টি শিশু পরিবার স্থাপন করা হয়েছে। শিশু সদন/শিশু পরিবারে দরিদ্র পরিবারের ৬ বছর হতে ৯ বছর বয়সী এতিম ছেলেমেয়েরা ভর্তির যোগ্য।  [এ.কে.এম ইয়াকুব হোসাইন]


[[en:Orphanage]]
[[en:Orphanage]]

০৫:১৪, ৭ জুলাই ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

এতিমখানা  পিতৃ-মাতৃহীন শিশু এবং সন্তান পালনে আর্থিক সঙ্গতিহীন পিতামাতার সন্তানদের প্রতিপালনের জন্য পরিচালিত আবাসিক প্রতিষ্ঠান। দেশের বেশিরভাগ এতিমখানা যাকাত বা অন্যান্য ধর্মীয় দানের টাকায় চলে। এতিম শব্দের আভিধানিক অর্থ একাকী বা নিঃসঙ্গ হয়ে যাওয়া, অবজ্ঞা বা অযত্ন প্রদর্শন করা। যে বালক বা বালিকা প্রাপ্তবয়স্ক হবার পূর্বে পিতৃহারা হয়ে পিতৃস্নেহ বঞ্চিত হয়, পারিভাষিক অর্থে তাকে এতিম বলা হয়। বাংলায় এতিমের প্রতিশব্দ হলো অনাথ। ইসলামি সংস্কৃতিতে মাতৃহারা শিশু ও বালকবালিকাকে বলা হয় ‘আজিয্যু’। এতিম অবস্থা সাধারণত বয়ঃপ্রাপ্তির পর শেষ হয়ে যায়। ইসলামে এতিমদের প্রতি বিশেষ যত্নবান হওয়ার নির্দেশ রয়েছে। ইসলামের প্রাথমিকযুগে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সমস্যার অন্যতম ছিল এতিম শিশুদের প্রতিপালন, যারা অতি কম বয়সে পিতৃহারা হওয়ার কারণে পিতৃস্নেহ বঞ্চিত হয়েছিল।আবহমান কাল থেকে বঙ্গদেশে এতিম শিশুদের আশ্রয়দান ও প্রতিপালনের লক্ষ্যে ব্যক্তি উদ্যোগ ও সমষ্টিক পরিচালনায় গড়ে উঠেছে বহুসংখ্যক এতিমখানা। যাকাতের অর্থ এবং ব্যক্তিবিশেষের দানে পরিচালিত হয়ে আসছে এসব প্রতিষ্ঠান। ব্রিটিশ শাসনামল থেকেই এতিমখানা ও অনাথ আশ্রমে সরকারি অর্থমঞ্জুরী দানের বিধান চালু করা হয়। আমাদের দেশে বর্তমানে দু’ধরণের এতিমখানা চালু রয়েছে, কোনো মাদ্রাসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ‘লিল্লাহ বোর্ডিং’ নামীয় এতিমখানা এবং স্বতন্ত্র এতিমখানা যেখানে আশ্রয় প্রতিপালনসহ এতিম শিশুদের শিক্ষাদানের ব্যবস্থাও চালু রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে সরকারি শিশুসদন নামে সরকার পরিচালিত এতিমখানা।

সরকারি শিশু সদন এতিম শিশুদের প্রতিপালন, প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে ১৯৪৪ সালে এতিম এবং বিধবা-সদন আইন প্রণীত হয়। এ আইনে সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের অধীনে  সমাজসেবা অধিদফতরের আওতায় জেলা ও থানা সদরে সরকারি এতিমখানা চালু করা হয়। আর এসব এতিমখানাকে পরবর্তীকালে শিশুসদন এবং বর্তমানে শিশু পরিবার হিসেবে রূপান্তরের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৭৩টি এবং এসব প্রতিষ্ঠানে ৯৫০০ এতিম ছেলেমেয়েকে প্রতিপালন, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, কর্মসংস্থান ও অন্যান্য উপায়ে আর্থসামাজিকভাবে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। এছাড়াও ১৬৩০টি বেসরকারি এতিমখানার পরিচালনার দায়িত্ব ১৯৬১ সালে শিক্ষা দপ্তর হতে সমাজকল্যাণ পরিদপ্তরে ন্যস্ত করা হয়। পরবর্তীকালে সরকারি এতিমখানার নামকরণ করা হয় সরকারি শিশু সদন। এসকল প্রতিষ্ঠানকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও এর কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। সমাজসেবা অধিদপ্তর জাতি গঠনমূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে শিশুকল্যাণ ও উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। শিশুদের কল্যাণ এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রচলিত আইন, সাংবিধানিক অঙ্গিকার, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেয় প্রতিশ্রুতিকে সমাজসেবা অধিদপ্তর অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে শিশুকল্যাণ ও উন্নয়নের জন্য টেকসই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতির ১৫ (ঘ) অনুচ্ছেদে পিতৃ-মাতৃহীন এতিম ঘোষিত শিশুদের প্রতি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন এবং সমাজকল্যাণ দর্শনের আদর্শে ব্রতী হয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সমাজসেবা অধিদফতর সরকারি শিশু সদন/শিশু পরিবার পরিচালনা করে আসছে। ১৯৬১ সালে শিক্ষা দফতর হতে সরকারি এতিমখানাগুলিকে সরকারি শিশু সদন হিসেবে নামকরণ করা হয়। বর্তমানে পারিবারিক পরিবেশে এতিম শিশুদের ছোট ছোট দলে বিভক্ত করে সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান ও সাহচর্য প্রদানের মাধ্যমে প্রতিপালনের জন্য শিশু সদনগুলিকে সরকারি শিশু পরিবারে রূপান্তরের কাজ অব্যহত আছে। ১৯৪৪ সালে এতিমখানা এবং বিধবা সদন আইন, ১৯৭৪ সালের শিশু আইনের বিধান মোতাবেক পিতৃ-মাতৃহীন এতিম ও দুঃস্থ শিশুদের পূর্ণ মর্যাদা প্রদান, তাদের অধিকার এবং স্বার্থ সংরক্ষণ বিষয়ে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ২০১১ সালের মধ্যে নতুন ৯টি শিশু পরিবার স্থাপন করা হয়েছে। শিশু সদন/শিশু পরিবারে দরিদ্র পরিবারের ৬ বছর হতে ৯ বছর বয়সী এতিম ছেলেমেয়েরা ভর্তির যোগ্য।  [এ.কে.এম ইয়াকুব হোসাইন]