ঊর্ধ্বতন বাছাই বোর্ড
ঊর্ধ্বতন বাছাই বোর্ড (এস.এস.বি) সরকার কর্তৃক সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ে গঠিত একটি প্রশাসনিক বোর্ড। স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাসহ সরকারি কর্মকর্তাদের চাকুরির নথি নিরীক্ষা করে সিভিল সার্ভিসের উচ্চতর পর্যায়ে তাদের পদোন্নতির সুপারিশ করাই বোর্ডের কাজ। ১৯৭২ সালে কেবিনেট সচিবকে চেয়ারম্যান এবং স্বরাষ্ট্র, আইন, সংস্থাপন ও অর্থ মন্ত্রণালয়/বিভাগের সচিবগণকে সদস্য করে বোর্ডটি প্রথম গঠিত হয়। কোনো মন্ত্রণালয়/বিভাগের কর্মকর্তাদের পদোন্নতির প্রস্তাব বিবেচনার ক্ষেত্রে বোর্ডের সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগের সচিবকে (তিনি বোর্ডের সদস্য না হয়ে থাকলে) আমন্ত্রণ জানাতে হয়।
ঊর্ধ্বতন বাছাই বোর্ড গঠনের পর থেকে ১৯৯১ সালের আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বোর্ডের গঠন কাঠামোতে পরির্বতন সাধিত হয়েছে। ১৯৯১ সালে মুখ্য অর্থসচিব, মহা হিসাবনিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং পেশাজীবী/টেকনোক্র্যাট হিসেবে অভিজ্ঞ দুজন অতিরিক্ত সচিবসহ ৪ জন নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্ত করে বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়। ১৯৯১ সালের নভেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবকে এ বোর্ডের সদস্য করা হয়। সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সচিব বোর্ডের সদস্য-সচিব হিসেবে কাজ করেন।
এ বোর্ডের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণির কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও পদোন্নতির বিষয় বিবেচনা ও সুপারিশ প্রণয়ন যেমন, সচিবালয়ে উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদে পদোন্নতি; বিভিন্ন সার্ভিস ক্যাডারভুক্ত ও ক্যাডারবহির্ভূত কর্মকর্তাদের ৩, ২ ও ১ বেতন গ্রেড প্রদান; বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত সংস্থায় প্রেষণে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তাদের ৩, ২ ও ১ বেতন গ্রেড প্রদান; বিভিন্ন সরকারি বিভাগ ও অধিদপ্তরের নির্বাহি প্রধান পদে নিয়োগ; নির্বাচিত কিছুসংখ্যক স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার ব্যবস্থাপনা প্রধান এবং এসকল সংস্থার ব্যবস্থাপনা বোর্ডের সার্বক্ষণিক পরিচালক পদে নিয়োগ; এবং উল্লিখিত কর্মকর্তাদের টাইমস্কেল প্রদান।
বিশ শতকের নববইয়ের দশকের প্রথমদিক পর্যন্ত পদোন্নতি ও নিয়োগ সংক্রান্ত কাউন্সিল কমিটি ঊর্ধ্বতন বাছাই বোর্ডের সুপারিশসমূহ পুনর্বিবেচনা করত। এ কমিটি নির্দিষ্ট সংখ্যক সিনিয়র মন্ত্রীদের সমন্বয়ে গঠিত হতো। কিন্তু নববইয়ের দশকের শেষদিকে হাইকোর্টের একটি রায়ের ভিত্তিতে এ কাউন্সিল কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। বর্তমানে এ বোর্ডের সুপারিশসমূহ সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর নিকট পাঠানো হয় এবং এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হয়। [এ.এম.এম শওকত আলী]