ইব্রাহিম, এম
ইব্রাহিম, এম (১৯৩৩-২০০০) সাহিত্যিক। পুরো নাম মোহাম্মদ ইব্রাহিম। ১৯৩৩ সালে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুরহুদা থানার কোমরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ময়েজুদ্দিন এবং মায়ের নাম আকিরন নেছা। মোহাম্মদ ইব্রাহিম কোমরপুরের কালীপদ বিশ্বাসের পাঠশালা ও কার্পাসডাঙ্গার রাধাবল্লভ প্রতিষ্ঠিত মাধ্যমিক ইংরেজি স্কুলে পড়াশুনা করেন ও শেষে কুড়ালগাছি হাই স্কুল হতে ১৯৪৮ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। এরপর তিনি কিছুদিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও আনছার কমান্ডার হিসেবে চাকুরি করেন। পরে তিনি নৌবাহিনীতে যোগ দিয়ে করাচি চলে যান। নৌবাহিনীতে চাকুরিরত অবস্থায় তিনি করাচির ইসলামিয়া কলেজ থেকে ১৯৬৪ সালে বি.এ পাস করেন। এরপর ১৯৬৯ সালে করাচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এম.এ পাশ করেন।
মোহাম্মদ ইব্রাহিম ১৯৬৭ সালে নৌবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর পরিবারসহ স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। কিন্তু ভাল চাকুরি না পাওয়ায় এবং পুত্র-কন্যাদের উচ্চশিক্ষার স্বার্থে তিনি আবার করাচি চলে যান।
মোহাম্মদ ইব্রাহিম নৌবাহিনীর চাকুরি জীবনে অসংখ্য কবিতা, গল্প ও গান রচনা করেন। কিন্তু সেগুলি অপ্রকাশিত থেকে যায়। ১৯৭১ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে তাঁর লেখা ‘সুন্দরবনের যাত্রী’ নামক ছোট গল্পগ্রন্থ করাচি থেকে প্রকাশ করা হয়। তিনি ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করে ‘অনুশীলন সাহিত্য সমিতি’ গঠন করে নিজেকে সাহিত্যসেবায় নিয়োজিত করেন। তিনি চুয়াডাঙ্গার সাহিত্য সংগঠন ‘সাহিত্য পরিষদ’ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের ১৯২২ সালে কার্পাসডাঙ্গায় আগমণ, অবস্থান ও তাঁর কর্মকান্ড সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য প্রকাশ করেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে আছে উপন্যাস জিয়ালার হাট, জলাবর্ত, বাহাত্তরের বন্দী, মীনা কম্পাউন্ড, ছোটগল্পগ্রন্থ সুন্দর বনের যাত্রী, কবিতাগ্রন্থ শিশিরের সান্ত্বনা, বিবি ফতেমা, নাটকখেয়াঘাট, শিশু উন্নয়নে জারী ও জাগরণী গীতিকাব্য ইত্যাদি। তাঁর সম্পাদিত চুয়াডাঙ্গার ইতিহাস সংকলন বনস্পতি একটি উল্লেখযোগ্য তথ্য নির্ভর গ্রন্থ। ২০০০ সালের ১৯ ডিসেম্বর মোহাম্মদ ইব্রাহিম মারা যান। [ম. ইনামুল হক]