আলম, মাহবুবে

আলম, মাহবুবে (১৯৪৯-২০২০) বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আনইজীবী, বাংলাদেশের এটর্নি জেনারেল, সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি। এডভোকেট মাহবুবে আলম ১৯৪৯ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি বর্তমান মুন্সিগঞ্জ জেলার অন্তর্গত লৌহজং উপজেলাধীন মৌচামান্দ্রা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম শেখ ওয়াজিউদ্দিন এবং মাতা মতিজান বিবি। মাহবুবে আলম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৯৬৮ সালে বি.এ (অনার্স) এবং ১৯৬৯ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭২ সালে তিনি এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন।

মাহবুবে আলম

শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৭৩ সালে প্রথমে তিনি ঢাকা জেলা বারের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৭৫ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে আইন পেশায় নিয়োজিত হন। তিনি ১৯৯৩-১৯৯৪ সময়ে সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০৭-২০০৮ সময়ে এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০৯ থেকে ২০২০ সালে মৃত্যুর পূর্ব-পর্যন্ত বাংলাদশের এটর্নি জেনারেল ছিলেন। মাহবুবে আলম এটর্নি জেনারেলদের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে ঐ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। এরপূর্বে, ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি ডেপুটি এটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একাধিক টার্মে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ছিলেন।

সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় (২০০৭-২০০৮), মাহবুবে আলম অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়ান এবং সর্বাত্মক আইনি সহায়তা প্রদান করেন। এটর্নি জেনারেল পদে অধিষ্ঠিত থাকাকালীন তিনি অত্যন্ত দক্ষতা ও সাফল্যের সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকারী ও ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর সহযোগী মানবতাবিরোধী অপরাধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অনুষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করেন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির অবসানকল্পে তাঁর ভূমিকা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়।

কোভিট-১৯ আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ ২৬ দিন জীবন-মরন সংগ্রাম শেষে ২০২০ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপালে (সিএমএইচ) ৭১ বছর বয়সে এই পথিতযশা আইনজীবীর জীবনের অবসান ঘটে। তাঁর মৃতদেহ মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। তাঁর স্ত্রীর নাম বিনতা মাহবুব। মৃতকালে তিনি স্ত্রী, এক কন্যা ও এক পুত্র সন্তান রেখে গেছেন। [হারুন-অর-রশিদ]