আজমিরিগঞ্জ উপজেলা

আজমিরিগঞ্জ উপজেলা (হবিগঞ্জ জেলা)  আয়তন: ২২৩.৯৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°২৭´থেকে ২৪°৪০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°০৯´ থেকে ৯১°২৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সাল্লাবানিয়াচং উপজেলা, দক্ষিণে বানিয়াচং ওমিটামইন উপজেলা, পূর্বে বানিয়াচং উপজেলা, পশ্চিমে ইটনা উপজেলা।

জনসংখ্যা ১১৪২৬৫; পুরুষ ৫৬৬১৫; মহিলা ৫৭৬৫০। মুসলিম ৮৫০০৪, হিন্দু ২৯২৫০, বৌদ্ধ ১, খ্রিস্টান ৭ এবং অন্যান্য ৩।

জলাশয় প্রধান নদী: কালনী, কুশিয়ারা  ও কৈখাল। ঘানিয়াভাঙ্গা বিল, বাঘা বিল ও দীঘা বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন ১৯২২ সালে আজমিরিগঞ্জ থানা প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৬৬ ১৩৩ ১৪৯০০ ৯৯৩৬৫ ৫১০ ৪৮.৮৯ (২০০১) ৩৬.১
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
- ৩১ ১৩৩৫৩ - ৪৪.১
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৫.৭৪ (২০০১) ১৫৪৭ ২৫০৫ (২০০১) ৩৫.৬
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আজমিরিগঞ্জ ১৩ ৩৩০৪ ৪৩৫১ ৪৫১৪ ২৮.২
কাকাইলসিও ৬৭ ৭৬১১ ১৪৪৮০ ১৪৫৬৭ ৩৯.২
জলশুকা ৫৪ ৬১৬১ ৮০২৪ ৮১৫৭ ৩৬.২
বাদলপুর ২৭ ১৭৪৬১ ১১১৯৭ ১১১৪৩ ৩৭.২
শিবপাশা ৮১ ৯৪১৪ ১১৯২২ ১২৫৫৭ ৩৩.৯

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ১৬ নভেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে মুক্তিবাহিনীর প্রায় ১৮ ঘণ্টা সম্মুখ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এতে জগৎজ্যোতি দাস শহীদ হন। এছাড়া পাকিস্তানি বাহিনী উপজেলার ১১ জন গ্রামবাসীকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

বিস্তারিত দেখুন আজমিরিগঞ্জ উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৬০, মন্দির ৩৫, মাযার ৫।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৭.১%; পুরুষ ৩৯.৫%, মহিলা ৩৪.৭%। কলেজ ২, মাধ্যামিক বিদ্যালয় ৬, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮৮, কিন্ডার গার্টেন ১, মাদ্রাসা ৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: জলসুখ কৃষ্ণগোবিন্দ পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৭৬), পাহাড়পুর বসন্তকুমার উচ্চ বিদ্যালয়।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২, সিনেমা হল ১, অডিটরিয়াম ১, সাহিত্য সংগঠন ১, খেলার মাঠ ২।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৪.৮৩%, অকৃষি শ্রমিক ৫.০২%, ব্যবসা ১৬.১৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ০.৩৬%, চাকরি ২.৭৭%, নির্মাণ ০.৮৩%, ধর্মীয় সেবা ০.৪৩%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৮৮% এবং অন্যান্য ৮.৭৩%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫১.৬২%, ভূমিহীন ৪৮.৩৮%। শহরে ২৮.৭২% এবং গ্রামে ৫৫.৩৯% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, আলু, চিনাবাদাম।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি আমন ধান, তিল, তিসি।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, নারিকেল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার  হাঁস-মুরগি ৩৯, গবাদিপশু ৪৪, মৎস্য ৪৩।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ২২ কিমি, আধাপাকা ৮ কিমি, কাঁচা রাস্তা ১৩৯ কিমি; নৌপথ ২৫ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।

শিল্প ও কলকারখানা মৎস হিমাগার ইন্ডাস্ট্রিজ, ফিস প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজ।

কুটিরশিল্প কাঠের কাজ, স্বর্ণশিল্প, লোহার কাজ, মৃৎশিল্প।

হাটবাজার, মেলা হাটবাজার ৫, মেলা ৪। আজমিরিগঞ্জ, কাকাইলসিও ও শিবপাশা বাজার উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   চিংড়ি মাছ, শুঁটকি মাছ, ধান।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১০.১৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৮২.৪%, ট্যাপ ০.৩% এবং অন্যান্য ১৭.৩%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ১১.৭৫% (গ্রামে ১০.০৮% ও শহরে ২১.৮৮%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৮০.৪৭% (গ্রামে ৮৩.১১% ও শহরে ৬৪.৪৪%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৭.৭৮% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই। (আদমশুমারি ২০০১)।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ২, কমিউনিটি ক্লিনিক ২, প্রাইভেট ক্লিনিক ১, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ১, দাতব্য চিকিৎসালয় ১, স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র ১, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১, বেসরকারি ক্লিনিক ১।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, কেয়ার, ভিশন। [জীবন কুমার চন্দ]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; আজমিরিগঞ্জ উপজেলার মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০১০।