মতলব উত্তর উপজেলা

মতলব উত্তর উপজেলা (চাঁদপুর জেলা)  আয়তন: ২৭৭.৫৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°১৯´ থেকে ২৩°৩০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৩৪´ থেকে ৯০°৪৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে গজারিয়া উপজেলা (মুন্সিগঞ্জ), দক্ষিণে মতলব দক্ষিণ ও চাঁদপুর সদর উপজেলা, পূর্বে মতলব দক্ষিণ ও দাউদকান্দি উপজেলা, পশ্চিমে ভেদরগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা।

জনসংখ্যা ২৯৯৯৩৫; পুরুষ ১৩৫২৯০, মহিলা ১৩২৫১৫। মুসলিম ২৭৯৯৫১, হিন্দু ১৯৯৩৯, বৌদ্ধ ১৭ এবং অন্যান্য ২৮।

জলাশয় মেঘনা, গোমতী ও ধনাগোদা নদী উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন মতলব থানা গঠিত হয় ১৯১৮ সালে এবং থানাকে মতলব উত্তর উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ২০০০ সালের ৩০ এপ্রিল।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১ (ছেঙ্গারচর) ১৪ ১৪৭ ২৪৮ ৩২১৩০ ২৬৭৮০৫ ১০৮১ ৫০.২ ৪৭.৭
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২৭.২৫ ৪১ ৩২১৩০ ১১৭৯ ৫০.১৯
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
ইসলামাবাদ ২৫ ৩১৫৫ ৬৭০১ ৬৯১১ ৪৫.৭৬
একলাশপুর ২১ ৮৬৯৭ ১১২৯১ ৯৮৯২ ৪৭.০৯
কলাকান্দা ৩২ ২৯৭৭ ৫০২১ ৪৮৭৩ ৫০.৫৫
গজরা ৬৯২ ১৬২১ ১৪৮৮ ৫০.৩৭
জহিরাবাদ ৩০ ২৯৬৬ ৬৪৪৫ ৬০৪৫ ৪৪.৯৬
দূর্গাপুর ১৫ ৬২২৪ ১৪৯৬৭ ১৪৮৬৫ ৫৪.৮৯
পশ্চিম ফতেহপুর ৯৪ ৫১১০ ১৩৮৬৩ ১৩৬৫৮ ৪৭.৬৪
পূর্ব ফতেহপুর ২১ ৩৯৮৪ ৯৮২৫ ১০৫৫৩ ৪৫.৪৪
ফরাজীকান্দি ১৩ ৫৭০৪ ১৮২৭৩ ১৭৫৬৩ ৪২.৭৪
বাগানবাড়ী ১১ ৩৯৯২ ৯৫৭৫ ৯৯১২ ৪৬.৮৪
মোহনপুর ৩৮ ৩৫৬৫ ১৩১৫০ ১১২৯৩ ৪৯.৪২
ষাটনল ৭৩ ৩৮৬৫ ৭০০১ ৭৬৪৮ ৪৫.০৭
সাদুল্লাপুর ৬৪ ৪২৬২ ৯৫২৬ ৯৫০১ ৫০.৩৯
সুলতানাবাদ ৯০ ৩৮৫৬ ৮০৩১ ৮৩১৩ ৪৭.৭২

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ লুধুয়া জমিদারবাড়ি, ফরাজীকান্দির আল-ওয়ায়েসিয়া মসজিদ, কলাকান্দা মসজিদ, বদরপুরে লেংটা ফকিরের মাযার, নাউরী মন্দির ও রথ।

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলা সম্পূর্ণভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রনাধীন ছিল। পাকবাহিনী মাঝেমধ্যে এ উপজেলায় প্রবেশের চেষ্টা করলে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে খন্ডযুদ্ধ সংগঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ১ (হরিণা), স্মৃতিস্মম্ভ ১ (চান্দ্রকান্দি)।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ৪০১, মন্দির ৬৯, মাযার ১।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৭.৯%; পুরুষ ৫০.৮%, মহিলা ৪৫.১%। কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৫২, মাদ্রাসা ৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: লুধুয়া হাইস্কুল ও কলেজ, নিশ্চিন্তপুর হাইস্কুল ও কলেজ, কালীপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, চরকালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), ধনাগোদা তালতলী উচ্চ বিদ্যালয়, একলাশপুর উচ্চ বিদ্যালয়, নাউড়ি আহম্মদীয়া উচ্চ বিদ্যালয়, জীবনগাঁও জেনারেল হক উচ্চ বিদ্যালয়, ছেঙ্গারচর উচ্চ বিদ্যালয়, বাগানবাড়ী আইডিয়াল একাডেমী, ফরাজীকান্দি আল ওয়ায়েসিয়া মাদ্রাসা (নেদায়ে ইসলাম)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, নাট্যদল ২, সিনেমা হল ১, ক্লাব ১৫০।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫০.৪%, অকৃষি শ্রমিক ১.৬৮%, শিল্প ০.৭%, ব্যবসা ১৫.৪২%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.১২%, চাকরি ১৬.৪২%, নির্মাণ ১.০২%, ধর্মীয় সেবা ০.২৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৩.৫৮% এবং অন্যান্য ৮.৪%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৬.৮২%, ভূমিহীন ৩৩.১৮%। তবে শহরে ৭৫.৭২% এবং গ্রামে ৬৫.৬৫% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, আলু, পাট, আখ, সরিষা, তিল।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিসি।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, জাম, কাঁঠাল, পেয়ারা, নারিকেল, পেঁপে, জামরুল, আমড়া, কামরাঙ্গা।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ২০৯০, গবাদিপশু ২০, হাঁস-মুরগি ৩০, হ্যাচারি ১।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১২০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪৫৪ কিমি; নৌপথ ২৬.৯৯ নটিক্যাল মাইল। লঞ্চঘাট ১৬।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা হিমাগার ৩।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, বাঁশের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২২, মেলা ৮। কালিকুর বাজার, কালির বাজার, দাশের বাজার ও নয়া বাজার এবং ছেঙ্গার চর মেলা, বেলতলী মেলা, বোয়ালিয়া রথের মেলা ও বদরপুর মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  আলু, মাছ, পাট।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৮.৩৯% (শহরে ২০.৬৮% এবং গ্রামে ১৮.০৯%) পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯২.৩৩%, ট্যাপ ০.৬%, পুকুর ৩.০৭% এবং অন্যান্য ৪%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫০.৭৭% (শহরে ৪৯.৮৬% এবং গ্রামে ৫০.৮৯%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৩.৯৬% (শহরে ৪৩.৭৫% এবং গ্রামে ৪৩.৯৯%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ৫.২৭% (শহরে ৬.৩৯% এবং গ্রামে ৫.২৭%) পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৬, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১৪, ক্লিনিক ৪।

এনজিও ব্র্যাক, আশা।  [মাসুম পাটোয়ারী]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; মতলব উত্তর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।