হাফিজ, মির্জা গোলাম

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২৩:১৭, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

হাফিজ, মির্জা গোলাম (১৯২০-২০০০)  আইনজীবী, রাজনীতিক। জন্ম ১৯২০ সালের ২ জানুয়ারি পঞ্চগড় জেলার মির্জাপুর গ্রামে। তাঁর পিতা মির্জা আজিমউদ্দিন সরকার। মির্জা গোলাম হাফিজ ১৯৪১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এম.এ এবং ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন।

মির্জা গোলাম হাফিজ ছাত্রাবস্থা থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৩৮ সালে তিনি নিখিল ভারত মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনের জলপাইগুঁড়ি জেলা শাখার সভাপতি ছিলেন। পরে তিনি ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং বাংলা প্রাদেশিক শাখার সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৪৫-৪৭ সালে ন্যাশনাল গার্ডের উপ-প্রধান বা নায়েবে সালারে সুবা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির সময় পঞ্চগড়, তেঁতুলিয়া, বোদা, দেবীগঞ্জ এবং পাটগ্রাম এ পাঁচটি থানাকে পূর্ববাংলার অন্তর্ভুক্ত করার জন্য গড়ে ওঠা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন মির্জা গোলাম হাফিজ। পরে র‌্যাডক্লিফ কমিশন থানাগুলোকে পাকিস্তানভুক্ত করে। নাগরিক অধিকারের প্রবক্তা মির্জা গোলাম হাফিজ ১৯৪৮-৫৮ সালে আন্তর্জাতিক সিভিল লিবার্টিজ লীগের পাকিস্তান শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ১৯৫১-৫৮ সাল পর্যন্ত গণতন্ত্রী দলের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গোলাম হাফিজ সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সদস্য ছিলেন। ভাষা আন্দোলনে  ভূমিকার জন্য ১৯৫২ সালে তিনি কারাবরণ করেন। ১৯৫৩ সালে গোলাম হাফিজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য নির্বাচিত হন।

মির্জা গোলাম হাফিজ ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে পূর্ববাংলা প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সালে সরকারের ৯২-ক ধারা জারীর প্রতিবাদে গড়ে উঠা আন্দোলনকালে তিনি কারাবরণ করেন। তিনি ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান-চীন মৈত্রী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৭ সালে মির্জা গোলাম হাফিজ পূর্ব পকিস্তান বার কাউন্সিল এবং নিখিল পাকিস্তান বার কাউন্সিলের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। গোলাম হাফিজ ১৯৬৮ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামীপক্ষে আইনি সহায়তা প্রদান করেন।

মির্জা গোলাম হাফিজ ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় ভূমি প্রশাসন মন্ত্রী নিযুক্ত হন। ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-এর প্রার্থী হিসেবে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ সংসদে তিনি স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালের নিবাচনে তিনি পুনরায় জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং বেগম খালেদা জিয়ার মন্ত্রিসভায় আইন ও বিচার মন্ত্রী নিযুক্ত হন।

মির্জা গোলাম হাফিজ শিক্ষার অগ্রগতি ও সমাজসেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তিনি আটোয়ারী উপজেলায় মির্জা গোলাম হাফিজ কলেজ, পঞ্চগড় শহরে ড. আবেদা হাফিজ গার্লস স্কুল, মির্জাপুর শিশুসদন ও মওলানা আজিমউদ্দিন মাদ্রাসা, তেঁতুলিয়ায় মির্জা গোলাম হাফিজ হাইস্কুল এবং ডিগ্রি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০০ সালের ২০ ডিসেম্বর ঢাকায় তাঁর মৃত্যু হয়।  [আবু মো. দেলোয়ার হোসেন]