হাদীস

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২৩:১৭, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

হাদীস শব্দটি  আরবি, অর্থ কথা বা বাণী। বিশেষ অর্থে মহানবী (স.)-এর কথা, কাজ ও তাঁর সমর্থনকেই হাদীস বলা হয়। সাহাবী ও তাবি‘ঈদের কথা, কাজ ও সমর্থনকেও হাদীস বলা হয়। হাদীসের দুটি অংশ সনদ ও মতন; হাদীস যারা বর্ণনা করেন তাঁদেরকে রাবী, এবং কাবীদের নামের পরম্পরাকে সনদ এবং হাদীসের ভাষ্যকে মতন বলা হয়।

হাদীস প্রধানত তিন প্রকার কাওলী, ফি‘লী ও তাক্রীরী, বক্তব্যমূলক হাদীসকে কাওলী, কার্যসূচক হাদীসকে ফি‘লী এবং সম্মতিসূচক হাদীসকে তাক্রীরী বলে। এছাড়া হাদীসের অন্যরকম বিভাজনও আছে। স্বয়ং রাসুলের (স.) হাদীস মারফূ‘, সাহাবীর হাদীস ‘মাওকূফ’ এবং তাবি‘ঈর হাদীস মাকতু‘ নামে অভিহিত।

বর্ণনাকারীদের সংখ্যার তারতম্যের দিক দিয়ে হাদীস প্রধানত দুপ্রকার মুতাওয়াতির ও আহাদ। সনদের সকল স্তরে বর্ণনাকারীর সংখ্যা অধিক হলে তাকে মুতাওয়াতির এবং বর্ণনাকারীর সংখ্যা মুতাওয়াতির থেকে কম হলে তাকে আহাদ হাদীস বলে। বর্ণনাকারীদের সংখ্যার ভিত্তিতে হাদীসকে আরও তিন ভাগে (মাশহুর, ‘আযীয ও গরীব) ভাগ করা হয়। বর্ণনাকারীদের গুণভেদেও হাদীস তিন প্রকার সহীহ, হাসান ও যাঈফ।

রাসুলুল্লাহ (স.)-এর জীবদ্দশায় হাদীস সংকলিত হয়নি। সাহাবীগণ হাদীস লিখতে শুরু করলে মহানবী (স.) কুরআনের সঙ্গে হাদীসের সংমিশ্রণের আশঙ্কার হাদীস লিখতে নিষেধ করেন। তবে পরে তিনি বিশেষ কয়েকজন সাহাবীকে হাদীস লিখতে অনুমতি দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে খলীফা ‘উমর’ ইব্ন ‘আবদুল আযীয কুরআনের সঠিক মর্মোপলব্ধি করার জন্য হাদীস সংগ্রহ ও সংকলন করার আহবান জানান। তাঁর আহবানে সর্বপ্রথম ইব্ন শিহাব যুহরী, আবূ বকর ইব্ন হাফ্স প্রমুখ হাদীস সংগ্রহ ও সংকলনে এগিয়ে আসেন। পরে ইমাম মালিক ‘মুআত্তা’, ইমাম শাফিঈ ‘মুসনাদ’ এবং ইমাম আহমদ ‘মুসনাদ’ নামে হাদীস সংকলন করেন। পরে ছয়টি বিশুদ্ধ হাদীস গ্রন্থ সংকলিত হয়, যা ‘সিহাহ সিত্তা’ নামে খ্যাত।

বাংলাদেশে হাদীসের ব্যাপক ব্যবহার আছে। কুরআনের মর্মার্থ বুঝতে হলে হাদীসের সাহায্য নিতে হয়। হাদীসের আলোকে কুরআনের ব্যাখ্যা না করলে সত্যিকার তফসীর হয় না। এজন্য আলীমগণ কুরআনের তফসীর করার সময় হাদীসের সাহায্য নেন। জুম‘আর নামাযের খুতবায় ও ওয়াজ মাহফিলে তাঁরা হাদীস বর্ণনা করেন। দেশের মাদ্রাসা ও বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে হাদীস শিক্ষা দেওয়া হয়।  [মুহাম্মদ আবদুল বাকী]