মরিয়ম সালেহা মসজিদ

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২২:৪০, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

মরিয়ম সালেহা মসজিদ  ঢাকার নীলক্ষেত বাবুপুরা এলাকায় অবস্থিত তিন গম্বুজ বিশিষ্ট একটি মসজিদ। মসজিদটি বহুবার সংস্কার করা হয়েছে এবং পূর্বদিকে দুবার বৃদ্ধি করা হয়েছে। মসজিদের প্রধান প্রবেশপথের উপরে লাগানো একটি ফারসি  শিলালিপি থেকে জানা যায় যে, মসজিদটি জনৈক মরিয়ম সালেহা কর্তৃক ১৭০৬ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত।

বহির্ভাগে ১৩.৭২ × ৬.৭১ মি আয়তনের আয়তাকার পরিকল্পনায় নির্মিত মসজিদটি আস্তরণসহ ইটের তৈরী। ইমারতের চারটি পার্শ্ববুরুজ প্যারাপেট পর্যন্ত অষ্টকোণাকার; এরপর উপরের অংশটুকু গোলাকার আর এদের শীর্ষদেশে রয়েছে শিরতোলা গম্বুজ। পূর্বদিকের সম্মুখভাগ তিনটি খিলানযুক্ত প্রবেশপথ দ্বারা উন্মুক্ত। সবগুলি খিলানই বাইরের দিকে বহুখাঁজ বিশিষ্ট এবং অর্ধগম্বুজের নিচে উন্মুক্ত। প্রধান প্রবেশপথ অষ্টকোণাকার ক্ষুদ্র বুরুজ বিশিষ্ট আয়তাকার কাঠামোয় (fronton) প্রবিষ্ট। উত্তর ও দক্ষিণ দেয়ালও একটি করে খিলানপথ দ্বারা উন্মুক্ত ছিল যা বর্তমানে লোহার গ্রিল দ্বারা বন্ধ। অভ্যন্তরে কিবলা দেয়ালে পূর্ব দেয়ালের তিনটি প্রবেশপথের অক্ষ বরাবর অর্ধ-অষ্টভুজাকার মিহরাব রয়েছে। কেন্দ্রীয় মিহরাব পার্শ্ববর্তী অন্য দুটি থেকে বড় এবং প্রতিপার্শ্বে অলংকৃত ক্ষুদ্র বুরুজসহ বাইরের দিকে অভিক্ষিপ্ত। মসজিদটির অভ্যন্তরভাগ তিনভাগে বিভক্ত একটি বিস্তৃত হল- যার কেন্দ্রীয়টি বর্গাকৃতির এবং পার্শ্বস্থ দুটি আয়তাকার। ছাদের উপরে অষ্টভুজাকার ড্রামের উপর তিনটি সামান্য কন্দাকৃতি গম্বুজ রয়েছে। এদের মধ্যে কেন্দ্রীয়টি বড়। গম্বুজ নির্মাণে লালবাগ দুর্গের মসজিদে অনুসৃত পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে।

ইমারতের পূর্বদিকের সম্মুখভাগ সাধারণ মুগল পদ্ধতিতে কোটরগত আয়তাকার প্যানেল দ্বারা উন্নতরূপে অলংকৃত। গম্বুজের নিচে অষ্টভুজাকার ড্রাম এবং অনুভূমিক বপ্র বদ্ধ পদ্মপাপড়ির সারি দ্বারা সজ্জিত। ছাঁচে ঢালা ব্যান্ডনকশা একই দূরত্বে পার্শ্ববুরুজকে ভাগ করেছে। সমস্ত মিহরাবই বহুখাঁজ খিলানে তৈরি। বর্তমানে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় মিহরাবেই আয়তাকার ফ্রেম রয়েছে, বদ্ধ শীর্ষালংকারের ফ্রিজ দ্বারা ফ্রেম শীর্ষ সজ্জিত। উত্তর ও দক্ষিণ দেয়াল অভ্যন্তরীণভাবে একটি দীর্ঘ কোটরগত প্যানেলে শেষ হয়েছে; এর শীর্ষভাগ সাধারণ চতুষ্কেন্দ্রিক খিলানযুক্ত। সমস্ত গম্বুজই কলসচূড়াসহ পদ্মফুলের শীর্ষ দ্বারা অলংকৃত এবং গম্বুজের অভ্যন্তরভাগও অলংকৃত। বর্তমানে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় গম্বুজের চূড়ায় একটি প্রস্ফুটিত গোলাপের অস্তিত্ব রয়েছে। মসজিদটি সতেরো শতকের শেষভাগে বাংলায় অনুসৃত মুগল মসজিদ স্থাপত্যরীতির একটি নিদর্শন। [এম.এ বারি]