হিউমাস

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২৩:১৭, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

হিউমাস (Humus)  জটিল ও মোটামুটিভাবে প্রতিরোধী (resistant) বাদামি, গাঢ় বাদামি বা কালো অনিয়তাকার ও কলয়ডীয় বস্ত্ত। উৎস গাছপালা ও প্রাণীর কোষকলার রূপান্তর ঘটিয়ে বা মৃত্তিকা অণুজীব দ্বারা সংশে­ষিত হয়ে এসব বস্ত্ত উৎপন্ন হয়। হিউমাস পানিতে প্রায় অদ্রবণীয়, কিন্তু লঘু ক্ষার (সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড বা পটাসিয়াম হাইড্রোক্সাইড) দ্রবণে দ্রবণীয়। এতে নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ প্রোটিন, ধীরে বিয়োজিত লিগনিন এবং জটিল চিনি (পলিইউরেনাইড) এ তিনটি উপাদানের প্রতিটির পরিমাণ প্রায় ৩০ শতাংশ। পলিইউরেনাইডগুলো বিভিন্ন জৈব বস্ত্ত দিয়ে গঠিত, যা মৃত্তিকার সংযুতিকে একত্রে জমাটবদ্ধ করে। হিউমাসে প্রায় ৫০ শতাংশ কার্বন, কিছু অক্সিজেন, ৫ শতাংশ নাইট্রোজেন  এবং তুলনামূলকভাবে কম পরিমাণে সালফার, ফসফরাস এবং অন্যান্য মৌল থাকে।

বাংলাদেশের মৃত্তিকাতে জলমগ্নতার সময় বৃদ্ধির সঙ্গে হিউমাসে বিদ্যমান হিউমিক অ্যাসিড এবং হিউমিক/কালভিক অ্যাসিডের অনুপাত বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়েছে। সাধারণত বাংলাদেশের বনাঞ্চলের মৃত্তিকাতে হিউমিক অ্যাসিডের উপর কালভিক অ্যাসিডের প্রাধান্য দেখা গিয়েছে। বনাঞ্চলের মৃত্তিকাতে হিউমিক অ্যাসিডের উপর কালভিক অ্যাসিডের এ প্রাধান্যের কারণগুলো হলো গাছপালার পাতা অল্প পরিমাণে মৃত্তিকার সঙ্গে মিশ্রিত হওয়া, মৃত্তিকার অম্লীয় বিক্রিয়া, অল্প পরিমাণে পানির উপস্থিতি এবং অতি সহজে জৈব পদার্থের জারণ হওয়া। হিউমাসে বিদ্যমান হিউমিক ও কালভিক অ্যাসিডের উপর হিউমিনের প্রাধান্য বাংলাদেশের বনাঞ্চল ও চাষাবাদের কাজে ব্যবহূত মৃত্তিকাতে সুস্পষ্ট।

বাংলাদেশের বিভিন্ন মৃত্তিকাতে হিউমাসের পরিমাণ ও এদের গাঠনিক উপাদান মৃত্তিকাতে সংঘটিত বিভিন্ন রাসায়নিক ও প্রাণরাসায়নিক প্রক্রিয়া, ভৌত-রাসায়নিক ধর্মাবলি এবং কৃষিকাজে মৃত্তিকার ব্যবহার প্রভাবকারী একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক।  [মোঃ খলিলুর রহমান]