বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেড

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২২:২৩, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)

বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেড (বিসিবিএল)  একটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক। কোম্পানি আইন ১৯৯৪-এর অধীনে ১৯৯৮ সালের ১ জুন একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত হয়। ব্যাংকটি যথাক্রমে ২০০০ মিলিয়ন ও ৯২০ মিলিয়ন টাকা অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন নিয়ে ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯ তারিখে ব্যবসায় আরম্ভ করে। এর শেয়ার মূলধনের মধ্যে ৩০০ মিলিয়ন টাকা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ কর্তৃক পরিশোধিত এবং ৫২০ মিলিয়ন টাকার শেয়ার ব্যাংকটির পূর্বসূরি প্রতিষ্ঠান সাবেক বাংলাদেশ কমার্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (বিসিআইএল)-এর শেয়ারহোল্ডারদের অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট ১০০ মিলিয়ন টাকার শেয়ার মূলধন কয়েকটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ করা হয়েছে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে তা পরিশোধের প্রক্রিয়া চলছে।

একটি অব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে অবলুপ্ত বাংলাদেশ কমার্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ২৭ জানুয়ারি ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত ব্যবসায় অব্যাহত রাখে। কিন্তু তরল সম্পদের সংকটে পড়ে এটি কার্যক্রম চালাতে ব্যর্থ হওয়ায় এপ্রিল ১৯৯২-এ বাংলাদেশ ব্যাংক এর ব্যবসায়িক কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ কমার্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড-এর আমানতকারীরা দুর্ভোগে পড়ে এবং কর্মকর্তা-কমচারীরা তাদের চাকরি হারায়। ভুক্তভোগী আমানতকারী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোম্পানিটি যেকোনোভাবে পুনরায় চালু করে তাদের স্বার্থরক্ষা ও দুর্ভোগ লাঘবের জন্য জোরালো আন্দোলন শুরু করে। অবশেষে দেশের গোটা ব্যাংকিং খাতকে সংক্রমণজনিত ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশ কমার্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডকে বিলুপ্ত করে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে। বিসিআইএল-কে বিসিবিএল-এ রূপান্তর এবং এর ব্যবসায়িক ও প্রশাসনিক পুনর্গঠন, কার্যসম্পাদন এবং পরিচালনার জন্য ৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৮ তারিখে সরকার ১০ সদস্যবিশিষ্ট একটি পরিচালক পর্ষদ গঠন করে। সাবেক বিসিআইএল-এর ২৪টি শাখাকে পুনর্গঠন করে বিসিবিএল-এর পূর্ণাঙ্গ শাখা হিসেবে চালু করা হয়। একটি তফশিলি বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেড ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯ তারিখে বাণিজ্যিক ব্যাংকিং ব্যবসায় আরম্ভ করে।

বিভিন্ন পেশা ও গ্রুপের আমানতকারীদের আকর্ষণ এবং উদ্বুদ্ধ করার জন্য বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেড বেশ কয়েকটি নতুন ধরনের আমানত স্কিম চালু করে। এগুলির মধ্যে মাসিক মুনাফা-ভিত্তিক আমানত স্কিম, পেনসন সঞ্চয় স্কিম, সুদবিহীন আমানত ও ঋণ স্কিম, ভোক্তা ঋণ স্কিম এবং সঞ্চয় সার্টিফিকেট-এর বিপরীতে মানি প্লান্টেশন স্কিম উল্লেখযোগ্য।

মৌল তথ্য ও পরিসংখ্যান (মিলিয়ন টাকায়)
বিবরণ ২০০৪ ২০০৫ ২০০৬ ২০০৭ ২০০৮ ২০০৯
অনুমোদিত মূলধন ২০০০ ২০০০ ২০০০ ২০০০ ২০০০ ২০০০
পরিশোধিত মূলধন ৯২০ ৯২০ ৯২০ ৯২০ ৯২০ ৯২০
রিজার্ভ ৭৯ ১০২ ১০৮ ১০২ ১০২ ১৮৯
আমানত ৪২৮২ ৪২৩০ ৪৬৫৯ ৫৬৭৯ ৬৭৮৬ ৭৬০৪
(ক) তলবি আমানত ১৩৫৫ ১৩৫০ ১৪৯১ ৮৪৩ ১১২৫ ১৩৩৬
(খ) মেয়াদি আমানত ২৯২৭ ২৮৮০ ৩১৬৮ ৪৮৩৬ ৫৬৬১ ৬২৬৮
ঋণ ও অগ্রিম ৪১৩৬ ৩৯৯২ ৪৬৭০ ৫০১০ ৫৭৮৬ ৬২৫৬
বিনিয়োগ ২৬০ ৩২৯ ৪২৫ ৫০৮ ৬৫৬ ৭১০
মোট পরিসম্পদ ৫৬১৩ ৫৭৩০ ৬২৭১ ৭২৫০ ৮৫২১ ৯৪২০
মোট আয় ২১২ ২৩৯ ৫৭৮ ৯৩৯ ১২৩৭ ১৫৩৬
মোট ব্যয় ১২৮ ১২৩ ৪৭৯ ৯৬৮ ১২০৫ ১২৪৮
বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবসা পরিচালনা ৮৯০১ ৭১৯৩ ৩৩৫০ ৩৬৪০ ৩৪১০৯ ৪৫৭৭৪
(ক) রপ্তানি ২৩৪৩ ১৭৫০ ১২৫০ ৮৯৯ ৯৭৯৩ ১০২১২
(খ) আমদানি ৪৮০৬ ৩৬০০ ১১৭৫ ২৫৫২ ২২৭৬৮ ৩৫১৩৭
(গ) রেমিট্যান্স ১৭৫২ ১৮৪৩ ৯২৫ ১৮৯ ১৫৪৮ ১২৫
মোট জনশক্তি (সংখ্যায়) ৪৪৭ ৪২৫ ৪৪৯ ৪৩৩ ৪২৭ ৪৫৪
(ক) কর্মকর্তা ২৫৪ ২৫৬ ২৭৫ ২৬২ ২৫২ ২৬০
(খ) কর্মচারী ১৯৩ ১৬৯ ১৭৪ ১৭১ ১৭৫ ১৯৪
বিদেশি প্রতিসঙ্গী ব্যাংক (সংখ্যায়)
শাখা (সংখ্যায়) ২৫ ২৫ ২৫ ২৫ ২৫ ২৫
(ক) দেশে ২৫ ২৫ ২৫ ২৫ ২৫ ২৫
(খ) বিদেশে - - - - - -
কৃষিখাতে
(ক) ঋণ বিতরণ - - - ৮৩ ১৭৭
(খ) আদায় - - - ৪৪ ৮৬
শিল্প খাতে
(ক) ঋণ বিতরণ ৪২৫ ৩৫০ ৪৫০ ৭২৯ ৯৯২ ১০৪৬
(খ) আদায় ৫০ ৩৬০ ৯১ ১৫৫ ৯৩১ ৫৬৩
খাতভিত্তিক  ঋণের স্থিতি
(ক) কৃষি ও মৎস্য - - - ৮১ ২৪৫ ১৫৮
খ) শিল্প - ২৭০ ১২৭১ ১০৪৪ ৭৮৩ ৭৭৯
(গ) ব্যবসাবাণিজ্য ২৯২৯ ২৪১২ ১৮৪৮ ১৫৭১ ২৯৫৪ ৩২৯৯
(ঘ) দারিদ্র্য বিমোচন - -

উৎস  অর্থবিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলী, ২০০৪-০৫ থেকে ২০০৯-১০।

সরকার কর্তৃক মনোনীত ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি পরিচালক পর্ষদ ব্যাংকটির সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ ও নীতিকৌশল অনুমোদন করে। ব্যবস্থাপনা পরিচালক এর প্রধান কার্যনির্বাহী। বর্তমানে (২০১০) ব্যাংকটির কর্মকর্তাকর্মচারীর সংখ্যা ৪৫৪ এবং শাখার সংখ্যা ২৫। সাবেক বিসিআইএল-এর প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটটি ব্যাংকটি উত্তরাধিকারসূত্রে লাভ করে। বর্তমানে এটিকে পুনর্গঠন ও সংস্কার করে এখানে নিজস্ব কর্মকর্তাকর্মচারীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।  [এস.এম মাহফুজুর রহমান]