বাঁশখালী উপজেলা

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৯:৪৪, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

বাঁশখালী উপজেলা (চট্টগ্রাম জেলা)  আয়তন: ৩৭৬.৯০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°৫৩´ থেকে ২২°১১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫১´ থেকে ৯২°০৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে আনোয়ারা উপজেলা ও সাঙ্গু নদী, দক্ষিণে চকোরিয়া ও পেকুয়া উপজেলা, পূর্বে লোহাগড়া ও সাতকানিয়া উপজেলা, পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর।

জনসংখ্যা ৩৯১৩২০; পুরুষ ২০৫৪৮২, মহিলা ১৮৫৮৩৮। মুসলিম ৩৪২৩৪৭, হিন্দু ৪৪৩১১, বৌদ্ধ ১৯৫, খ্রিস্টান ৩৮৮২ এবং অন্যান্য ৫৮৫।

জলাশয় সাঙ্গু নদী উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন বাঁশখালী থানা গঠিত হয় ১৯৫৮ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১৫ ৭২ ১১৩ ১৮৬৪৫ ৩৭২৬৭৫ ১০৩৮ ৩৬.৩ ৩১.৬
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৮.৮৬ ১৮৬৪৫ ২১০৪ ৩৮.২
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কাঁঠালিয়া ৫০ ২৭১০ ১০০৯৯ ৯৩৫০ ২৮.৮২
কালীপুর ৪৪ ৫৬৯৪ ১৪৯০৬ ১৩৯২৩ ৩৭.৪৫
খানখানাবাদ ৫৬ ৬৫৬০ ১৫২৬৭ ১৩০৬০ ৩০.১৭
গন্ডামারা ৩১ ৭৩৪৩ ১৫১৬৫ ১৪২৫০ ২১.৩৯
চম্বল ১৮ ৮৮৪৮ ১৬৫৯৩ ১৪৮৩০ ২৪.৩৯
ছনুয়া ২৫ ৪৯৯১ ১২২২৫ ১০৭৬০ ২৭.৫২
জলদী ৩৭ ৭০২২ ১৫৭৮০ ১৪৬৯৮ ৩৪.৭৫
পুঁইছড়ি ৬৩ ১০৮১২ ১৬৮৩৮ ১৫৭৮৮ ২৭.২৪
পুকুরিয়া ৬৯ ৭৫৭৮ ১৩৯২৫ ১২২২৫ ৩৯.৪১
বাইলছড়ি ১২ ৩১৫৭ ৫৯১৩ ৫১৮৩ ৩৭.৭০
বাহারচর ০৬ ৫৪৯৬ ১৭৫২১ ১৪৯২১ ৩২.৭০
শিলকূপ ৯৪ ২৭৮১ ৯৭৭৮ ৯৮৬১ ২১.৭৬
শেখেরখিল ৮৮ ২৬০২ ৯৮১০ ৮৮৩০ ২৫.১৭
সরল ৮২ ৭৪৯৯ ১৯৩১১ ১৬৮১৭ ১৯.৩২
সাধনপুর ৭৫ ৭০৯১ ১২৩৫১ ১১৩৪২ ৩৭.৮৪

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ বখশী হামিদ মসজিদ (১৫৫৮), জাতেবী জামে মসজিদ, নবী মসজিদ (অষ্টাদশ শতক), নিম কালীবাড়ি (১৭১০), শিখ মন্দির (বাণীগ্রাম)।

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ১৯ মে পাকবাহিনী ৭৫ জন নারী-পুরুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তাছাড়া তারা জলদী, বাণীগ্রাম ও কালীপুরে অসংখ্য ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয় এবং অক্টোবর মাসে পাকবাহিনী বাঁশখালীর দক্ষিণপ্রান্তে নাপোড়া গ্রামে ৮৯ জন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে। পাকবাহিনী বাঁশখালীর পূর্বপ্রান্তে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় এবং বাইলছড়িতে মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফরহাদ চৌধুরী, সুজনকান্তি দাশ, ফ্লাইট সার্জেন্ট মহিউল আলম, আবু সাঈদ ও মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরীকে হত্যা করে।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ১ (বাঁশখালী ডিগ্রি কলেজের পিছনে); বধ্যভূমি ২।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৪৬৪, মন্দির ৫২, গির্জা ১, কেয়াং ২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: হাবিবুল্লাহ খান জামে মসজিদ, কাতেবী জামে মসজিদ, ঋষিধাম আশ্রম, জলদী ধর্মরত্ন বিহার।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ২৯.৫%; পুরুষ ৩৩.৮%, মহিলা ২৪.৮%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৪০, কমিউনিটি বিদ্যালয় ১০, স্যাটেলাইট বিদ্যালয় ১০, কিন্ডার গার্টেন ৫, মাদ্রাসা ২১৫। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: বাঁশখালী ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৭), আলাওল ডিগ্রি কলেজ, পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় কলেজ (১৯৯৫), বাণীগ্রাম সাধনপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), বাঁশখালী পাইলট হাইস্কুল (১৯৩২), কালীপুর এজাহারুল হক উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪২), সাধনপুর পল্লী উন্নয়ন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪২), চাম্বল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৬), বাণীগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৮১), জলদী হোছাইনিয়া মাদ্রাসা (১৯৬৭)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ক্লাব ৭৩, মহিলা সংগঠন ৯, খেলার মাঠ ২৪।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৮.৭৩%, অকৃষি শ্রমিক ৬.৬৮%, শিল্প ০.৫%, ব্যবসা ১১.৪২%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৭০%, চাকরি ৬.৭৮%, নির্মাণ ০.৫৮%, ধর্মীয় সেবা ০.৪৩%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.৫১% এবং অন্যান্য ১১.৬৭%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৪৭.১৬%, ভূমিহীন ৫২.৮৪%। শহরে ৪০.৩৪% এবং গ্রামে ৪৭.৫৩% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল পান, ধান, চা, আলু, আদা, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, সরিষা।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, পেঁপে, তরমুজ, লেবু, পেয়ারা।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৩৪, হাঁস-মুরগি ৮৬, হ্যাচারি ২৫।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৭৩ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৪৭ কিমি, কাঁচারাস্তা ৭১২ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা করাতকল ১৫, বরফকল ৩, ইটভাটা ৫, ওয়েল্ডিং কারখানা ৬।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, সূচিশিল্প।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৪৪, মেলা ৬। বেয়ান বাজার, রামদাস মুন্সীর হাট, মোশারফ আলী হাট, চৌধুরী হাট, ঈশ্বরবাবুর হাট, বহদ্দার হাট, সদর আমিন হাট, দারোগার হাট এবং কুম্ভমেলা (ঋষিধাম), সর্ষব্রত মেলা, রথযাত্রার মেলা (বাণীগ্রাম), উত্তরায়ণ সংক্রান্তি মেলা ও বলীখেলার মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  পান, লিচু, চা, আদা, চিংড়ি, সামুদ্রিক মাছ।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৪.১৪% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৪.৪৭%, ট্যাপ ০.৮৮%, পুকুর ২.৭৬% এবং অন্যান্য ১.৮৯%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ২৮.৫৫% (শহরে ৪৫.৫৭% এবং গ্রামে ২৭.৬৪%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৬২.৩৬% (শহরে ৩৭.৬৭% এবং গ্রামে ৬৩.৬৮%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ৯.০৯% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৩, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩।

এনজিও কেয়ার, প্রশিকা, ব্র্যাক, উদ্দীপন, স্বনির্ভর।  [উজ্জ্বল বিশ্বাস]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বাঁশখালী সদর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।