ফিরিঙ্গি, এন্টনি

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২২:১৭, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

ফিরিঙ্গি, এন্টনি (?-১৮৩৬)  কবিয়াল। প্রকৃত নাম হেনসম্যান এন্টনি (Hensman Anthony)। তিনি জাতিতে ছিলেন পর্তুগিজ এবং ধর্মে খ্রিস্টান। পশ্চিমবঙ্গের চন্দননগরের ফরাসডাঙায় তিনি বসবাস করতেন।

পূর্বে এদেশে মগরা নিন্দার্থে ‘হার্মাদ’ ও পর্তুগিজরা ‘ফিরিঙ্গি’ নামে পরিচিত ছিল। তখন সাধারণভাবে ইউরোপীয়দেরও ফিরিঙ্গি বলা হতো। এন্টনি একজন হিন্দু বিধবাকে বিয়ে করেন। কলকাতার বউবাজারে ‘ফিরিঙ্গি কালী মন্দির’ প্রতিষ্ঠা করে তিনি হিন্দুধর্মের প্রতি অনুরাগ প্রদর্শন করেন। এন্টনির আমলে  কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে কবিয়ালদের বেশ প্রভাব প্রতিপত্তি ছিল।  হরু ঠাকুরভোলা ময়রাদাশরথি রায়, রাম বসু প্রমুখ বিখ্যাত কবিয়াল তাঁর সমসাময়িক ছিলেন। এন্টনি কবিগানের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে গান গাইতে শুরু করেন। প্রথমে জনৈক গোরক্ষনাথ তাঁর গান বেঁধে দিতেন। পরে তিনি নিজেই গান রচনা করে গাইতেন। একটি কবিগানে তিনি বলেন: ‘আমি ভজন সাধন জানি নে মা/ নিজে ত ফিরিঙ্গি। যদি দয়া করে কৃপা কর/ হে শিবে মাতঙ্গী\’ এতে হিন্দুধর্মের প্রতি তাঁর বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটে। তাঁর আগমনী পর্যায়ের গানেও (জয় যোগেন্দ্রজায়া মহামায়া মহিমা অসীম তোমার) হিন্দুধর্মের প্রতি গভীর শ্রদ্ধার ভাব প্রকাশ পেয়েছে।

এন্টনি একাধিক কবির লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করেন। তাতে ভোলা ময়রা, রাম বসু, ঠাকুর সিংহ প্রমুখ ছিলেন তাঁর প্রতিপক্ষ। কেবল  বাংলা ভাষা আয়ত্ত নয়, বাঙালির ধর্ম, সমাজ ও সংস্কৃতি সম্পর্কেও তিনি যে জ্ঞান অর্জন করেছিলেন, অন্য কোনো বিদেশীর ক্ষেত্রে সেযুগে এমনকি এর পরেও তেমন দেখা যায় না।  [ওয়াকিল আহমদ]