প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রি

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২২:১৩, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রি  মোড়ক, বাক্স, কার্টন, লেবেল, ক্যালেন্ডার ইত্যাদি মুদ্রণের যে শিল্প-সংস্থাপন তাকেই সাধারণত প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রি বলা হয়ে থাকে। প্রকৃতপক্ষে মুদ্রণ শিল্প ও প্যাকেজিং শিল্পে অনেক ক্ষেত্রে একই যন্ত্র ব্যবহূত হয়। যখন অফসেট মুদ্রণ প্রদ্ধতি আবিষ্কৃত হয় নি তখন লেটার প্রেসেই এই সকল লেবেল, মোড়ক ও ক্যালেন্ডার ছাপা হতো। তবে তখনও লিথো প্রিন্টিং প্রসেস নামে আর একপ্রকার মুদ্রণ পদ্ধতির প্রচলন ছিল। এই পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য ছিল যে, এক খন্ড পাথরের উপর উল্টো করে লিখলে সেই লেখা সোজা হয়ে কাগজের উপর ছাপা হতো। কোন ছবি বা নকশা সরাসরি সেই পাথরের উপর অঙ্কন করলে তা থেকে সহজে সেই ছবি বা নকশা কাগজের উপর মুদ্রণ করা যেত। ঢাকায় সেকালে লিথো অফসেট প্রেস নামে একটি ছাপাখানা ছিল কোর্ট হাউস স্ট্রিটে। এই প্রেসে প্রধানত সিনেমার পোস্টার, লেবেল এবং উর্দু পত্রিকা ছাপা হতো। উর্দু বই, পত্র-পত্রিকা ও সংবাদপত্র লিথো প্রেসে ছাপা হতো। কারণ উর্দু টাইপের তেমন প্রচলন ছিল না। তবে ছোটখাটো লেবেল, লিফলেট ও দাওয়াত পত্র ইত্যাদি প্লাটেন ব্লকের সাহায্যে মুদ্রিত হতো। তাছাড়া কমসংখ্যক মুদ্রণের জন্য সিল্কস্ক্রিন পদ্ধতির মুদ্রণ ছিল উত্তম।

নানাবিধ শিল্পসামগ্রীর উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তার মোড়ক বা প্যাকেটের চাহিদা বৃদ্ধি পায়, সেই সঙ্গে তাল রেখেই প্যাকেজিং শিল্পের প্রসার ঘটে থাকে। কিন্তু পাকিস্তান আমলে এ অঞ্চলে শিল্পের উন্নয়ন দ্রুত না হওয়ায় প্যাকেজিং শিল্পেরও প্রসার ঘটে ধীর গতিতে।

ষাটের দশকে ঈগল বক্স নামক একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ প্যাকেজিং শিল্পের কারখানা ঢাকার উপকণ্ঠে স্থাপিত হয়। এদেশে এটি প্রথম প্যাকেজিং কারখানা। তারপর আতা খান অ্যান্ড কোং এবং হাশিম ক্যান নামে দুটি প্যাকেজিং শিল্পের কারখানা স্থাপিত হয় ও সেখানে কাগজ ছাড়াও টিন, প্লাস্টিক, কাপড় ইত্যাদি যেকোন বস্ত্তর মুদ্রণ সম্ভব ছিল। অন্যদিকে কো-অপারেটিভ ও পাইওনিয়ার প্রেসেও প্যাকেজিং শিল্পের কাজ হতো। কারণ তাদের অফসেট প্রেস ছিল। ষাটের দশকের শেষের দিকে অনেকগুলি প্যাকেজিং শিল্পের কারখানা স্থাপিত হয়, যেমন ইস্টার্ন রিগ্যাল, ফাইন আর্ট প্রেস, এলাইট প্রেস, পদ্মা প্রেস, জেনিথ প্রেস ইত্যাদি। এগুলি প্রধানত উন্নতমানের ক্যালেন্ডার, সিগারেটের প্যাকেট, ঔষধের বাক্স, ঔষধের স্ট্রিপ তৈরি করত। এ সকল প্রেস প্রধানত অফসেট যন্ত্রনির্ভর প্রেস, সেইসঙ্গে এসবে রয়েছে ক্রিজিং, ভাজকরণ ও কাটিং মেশিন-সংযুক্ত স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি ব্যবস্থা। বাংলাদেশে এ ধরনের শতাধিক প্রেস রয়েছে।  [ফজলে রাবিব]