চক্রবর্তী, তারাপদ

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৬:৫৬, ২ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)
তারাপদ চক্রবর্তী

চক্রবর্তী, তারাপদ (১৯০৮-১৯৭৫)  কণ্ঠশিল্পী।  ফরিদপুর জেলার কোটালিপাড়ায় এক সঙ্গীতশিল্পী-পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা, পিতামহ এবং প্রপিতামহ তিন পুরুষ ছিলেন সঙ্গীতজ্ঞ। তারাপদর সঙ্গীতে  হাতেখড়ি হয় পিতা পন্ডিত ধ্রুবচন্দ্রের নিকট। পরে সাতকড়ি মালাকার ও গিরিজাশঙ্কর চক্রবর্তীর নিকট তিনি সঙ্গীতে তালিম নেন।

সতেরো বছর বয়সে তারাপদ  কলকাতা যান। তবে তাঁর সঙ্গীতচর্চা থেমে থাকেনি। ওই সময় তবলাশিল্পী হিসেবে তিনি বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। কিছুকাল পরে রাইচাঁদ বড়ালের সহায়তায় তবলাশিল্পী হিসেবে কলকাতা বেতারে তাঁর চাকরি হয়। চাকরির পাশাপাশি তিনি সঙ্গীতচর্চাও চালিয়ে যান। কঠোর সাধনা ও অধ্যবসায়ের ফলে তারাপদ এক সময় বাদক থেকে গায়কে পরিণত হন এবং কণ্ঠশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। বাংলা সঙ্গীতে তাঁর অসামান্য কীর্তি বাংলা  খেয়ালঠুংরি গানের প্রবর্তন। খেয়াল গান পরিবেশন করে তিনি ভারতের সর্বত্র অসামান্য খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি ছায়াহিন্দোল, নবমালিকা, নবশ্রী প্রভৃতি রাগ-রাগিণীতে সঙ্গীত চর্চা করেন এবং কয়েকটি নতুন রাগ-রাগিণীও সৃষ্টি করেন। এসব কারণে বাংলা সঙ্গীতজগতে তারাপদ অমর হয়ে আছেন।

তারাপদ বিভিন্ন সময়ে ওস্তাদ  এনায়েত খাঁ, ওস্তাদ  আলাউদ্দিন খাঁ, ওস্তাদ হাফিজ আলী খাঁ প্রমুখ সঙ্গীত সম্রাটের সঙ্গে তবলা সঙ্গীত করেন। তিনি সঙ্গীতশিক্ষকের দায়িত্বও পালন করেন। সঙ্গীতগুণীরূপে বিভিন্ন সংগঠন তাঁকে বিভিন্ন উপাধিতে ভূষিত করে। পশ্চিমবঙ্গের ভাটপাড়ার পন্ডিত সমাজ তাঁকে ‘সঙ্গীতাচার্য’, কুমিল্লার সঙ্গীত পরিষদ ‘সঙ্গীতার্ণব’ এবং বিদ্বৎ সম্মিলনী ‘সঙ্গীতরত্নাকর’ উপাধি দেয়। সঙ্গীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭২ সালে তিনি দিল্লির সঙ্গীত-নাটক আকাদেমির সদস্য নির্বাচিত হন এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের আকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। তিনি বিশ্বভারতীয় নির্বাচন-বোর্ডের সদস্য ছিলেন। ১৯৭৩ সালে ভারত সরকার তাঁকে ‘পদ্মশ্রী’ উপাধিতে ভূষিত করে; কিন্ত ব্যক্তিগত কারণে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি সুরতীর্থ নামে একটি সঙ্গীতগ্রন্থ রচনা করেন।  [মোবারক হোসেন খান]