নাগরিকত্ব

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২১:৫৬, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

নাগরিকত্ব  সংবিধানের ৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়। ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর  সংবিধান বলবৎ হওয়ার পূর্বে বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব (অস্থায়ী বিধান) আদেশ ১৯৭২ (রাষ্ট্রপতির ১৯৭২ সালের ১৪৯ নং আদেশ) জারি করেন এবং এই আদেশ দ্বারা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে দেশের নাগরিকত্ব নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আদেশটির দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে বলা হয় যে, এমন ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক বলে গণ্য হবেন: (১) যিনি বা যার পিতা বা পিতামহ বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এমন এলাকায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং যিনি ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ এ এলাকার কোনো স্থানের স্থায়ী বাশিন্দা ছিলেন এবং এখনও বাশিন্দা আছেন; অথবা (২) যিনি বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্ভুক্ত এলাকায় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ স্থায়ী বাশিন্দা ছিলেন, এখনও আছেন এবং দেশে বলবৎ কোনো আইনের দ্বারা নাগরিক হওয়ার অযোগ্য ঘোষিত হন নি।

তবে শর্ত থাকে যে, যদি কোনো ব্যক্তি বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত কোনো এলাকার স্থায়ী বাশিন্দা হয়ে থাকেন এবং তিনি বা তার পোষ্য কোনো ব্যক্তি চাকরি বা অধ্যয়নের জন্য এমন কোনো দেশে বসবাস করতেন যে দেশ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অথবা সামরিক অভিযানে লিপ্ত ছিল এবং যাদের বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনে বাধা দেয়া হচ্ছিল, তবে তিনি বা তার পোষ্যগণ বাংলাদেশেই বসবাস করে আসছেন বলে গণ্য করা হবে।

আদেশটির ২(খ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি ভিন্ন কোন রাষ্ট্রের প্রতি প্রকাশ্যে বা আচরণের মাধ্যমে আনুগত্য পোষণ করে থাকলে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না। এ আদেশের বলে সরকার যেকোন ব্যক্তিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দিতে পারেন। এ আদেশের উদ্দেশ্য কার্যকর করার লক্ষ্যে আদেশে বর্ণিত বিধিমতে সরকার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব (অস্থায়ী বিধান) বিধি ১৯৭৮ জারি করেন। এই আদেশে নাগরিকত্ব লাভের জন্য এবং নাগরিকত্ব সনদের জন্য আবেদনের বিভিন্ন ফরম নির্ধারণ করে দেয়া হয়।

বাংলাদেশ বনাম অধ্যাপক গোলাম আযম মামলায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ নাগরিকের সংজ্ঞায় বলেন, নাগরিক এমন এক ব্যক্তি যিনি একটি স্বাধীন রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীর সদস্য, যিনি সংবিধান এবং দেশের আইনে বর্ণিত অধিকার ভোগ করেন ও যার ওপর নৈতিক আইনগত বাধ্যবাধকতা আছে। আপিল বিভাগ তাদের রায়ে আরও বলেন যে, সংবিধানের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে বাংলাদেশের নাগরিক বলে বিবেচিত কোনো ব্যক্তিকে আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করতে হবে না। তবে সংবিধানের তৃতীয় তফসিলে বর্ণিত কোনো পদে নির্বাচিত হলে বা নিয়োগপ্রাপ্ত হলে তাকে আনুগত্যের শপথ নিতে হবে। রায়ে আরও বলা হয়, পাসপোর্ট আপাতদৃষ্টিতে নাগরিকত্বের প্রমাণ, তবে অকাট্য প্রমাণ নয়; কারণ অধুনা পৃথিবীর বহু দেশেই ভিন্ন দেশিয় লোকদের পাসপোর্ট দেয়ার প্রথা ব্যাপকভাবে চালু আছে। বাংলাদেশ পাসপোর্ট আদেশ ১৯৭৩ (রাষ্ট্রপতির ১৯৭৩ সালের ৯নং আদেশ)-এর ১৫ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, সরকার বাংলাদেশের নাগরিক নন এমন ব্যক্তিকেও পাসপোর্ট বা ভ্রমণ দলিল প্রদান করতে পারেন।  [সাহিদা বেগম]