সমস্যাসঙ্কুল মৃত্তিকা

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৫:৪৭, ১৯ মার্চ ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

সমস্যাসঙ্কুল মৃত্তিকা (Problem Soils)  সফল শস্য উৎপাদনে অপারগ মৃত্তিকাতে বিদ্যমান মারাত্মক সীমাবদ্ধতা। মৃত্তিকার কোন কোন রাসায়নিক এবং/বা ভৌত ধর্মাবলির প্রতিকূল প্রভাবই এ সীমাবদ্ধতার কারণ। অম্ল সালফেট মৃত্তিকা, লবণাক্ত মৃত্তিকা, ক্ষার মৃত্তিকা, পিট মৃত্তিকা, পুষ্টি উপাদানের বিষাক্ততা (অতি সামান্য এলাকা) এবং পুষ্টি উপাদানের অভাবই হলো মৃত্তিকার রাসায়নিক ধর্মাবলি সংক্রান্ত সমস্যা। অন্যদিকে, অত্যন্ত খাড়া ঢালে অবস্থিত মৃত্তিকা, স্থূল গ্রথনের মৃত্তিকা, অগভীর মৃত্তিকা, অপর্যাপ্ত নিষ্কাশিত মৃত্তিকা, ভারী গ্রথনের মৃত্তিকা এবং প­াউপ্যানের উপস্থিতি মৃত্তিকার ভৌত সমস্যাতে অন্তর্ভুক্ত।

রাসায়নিক সমস্যা  অম্ল সালফেট মৃত্তিকা  এসব মৃত্তিকা চট্টগ্রাম উপকূলীয় সমভূমিতে উপকূলের নিকটে এবং গঙ্গা কটাল পললভূমি এলাকার দক্ষিণ-পশ্চিম অংশ, যেখানে ম্যানগ্রোভ বনকে কেটে চাষাবাদের আওতায় আনা হয়েছে এমন এলাকাতে পাওয়া যায়। চট্টগ্রামে এসব মৃত্তিকাকে ‘কস’ মৃত্তিকাও বলা হয়। পৃষ্ঠমৃত্তিকার অধিক অম্লত্ব (পিএইচ ৩.২-৪.০), লবণাক্ততা (১৪-৩৪ ds/m), অ্যালুমিনিয়াম দ্বারা সৃষ্ট বিষাক্ততা (৪-১০৩ পিপিএম), অল্প পরিমাণের জিঙ্ক ও বিনিময়যোগ্য ক্যালসিয়াম, মধ্যম মাত্রার জৈব পদার্থ ও দুর্বল কর্ষিতাবস্থাসহ প্রতিকূল ভৌত ও জৈব অবস্থা এবং স্বল্পমাত্রার অনুজীবের ক্রিয়া শস্যের বৃদ্ধি ব্যাহত করে। লবণাক্ত ও ঈষৎ লোনা-পানির (brackish water) অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে ভেড়িবাঁধ নির্মাণ, নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, পিএইচ মান বৃদ্ধি করতে চুন প্রয়োগ এবং ভেড়িবাঁধের আওতাধীন এলাকাতে স্বাদু-লবণ ঈষৎ লোনা পানি দ্বারা বিস্রাবণ এসব মৃত্তিকাকে পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম এবং জমিকে একাধিক শস্য (বর্তমানে কেবল একটি শস্য জন্মানো হয়) জন্মানোর জন্য উপযুক্ত করে তোলা যেতে পারে। কিন্তু পদ্ধতিগুলো ব্যয় সাপেক্ষ এবং কখনো কখনো আর্থিক দিক থেকে লাভজনক নাও হতে পারে।

লবণাক্ত মৃত্তিকা  লবণাক্ত মৃত্তিকার জন্য মৃত্তিকার পানি সম্পৃক্ত নির্যাসের বিদ্যুৎ পরিবাহিতা (EC) প্রতি মিটারে ৪ ডেসি সিমেনসের (ds/m) অধিক। এসব মৃত্তিকাতে বিনিময়যোগ্য সোডিয়ামের পরিমাণ ১৫ শতাংশের কম এবং পিএইচ মান সাধারণত ৮.৫-এর কম, কারণ মৃত্তিকাতে বিদ্যমান লবণগুলো নিরপেক্ষ প্রকৃতির। সোডিয়াম পরিশোষণ অনুপাত (SAR) ১৩-এর চেয়ে কম থাকে।

লবণাক্ত মৃত্তিকা প্রধানত গঙ্গা কটাল পললভূমি, নতুন মেঘনা মোহনাজ পললভূমি এবং চট্টগ্রামের উপকূলীয় সমতলভূমি ও উপকূলবর্তী দ্বীপসমূহের জোয়ারে নিমজ্জিত পললভূমি এলাকাতে পাওয়া যায়। অধিক লবণাক্ততা, স্বল্প পরিমাণের জৈব পদার্থ, নাইট্রোজেন, জিঙ্ক ও কপার, শীতকালে উন্নত মানের সেচের পানির অভাব, এক বছর থেকে অন্য বছরে বর্ষণের পরিমাণে পার্থক্য, স্বল্পকালীন শীতকাল, মৃত্তিকার ভারী গ্রথন (পলি এঁটেল থেকে এঁটেল) এবং অপর্যাপ্ত  নিষ্কাশনের কারণে স্থায়ী জলাবদ্ধতা শস্য উৎপাদনকে ব্যাহত করে। লবণ সহনশীল শস্যের আবাদ, গ্রীষ্মকালে আচ্ছাদন সৃষ্টি, নিষ্কাশনের উন্নতি এবং সমুদ্র থেকে লোনা পানির অনুপ্রবেশ রোধ এসব মৃত্তিকার অবস্থাকে উন্নত করে।

ক্ষার মৃত্তিকা  ক্ষার মৃত্তিকাতে বিনিয়মযোগ্য সোডিয়ামের পরিমাণ প্রায় ১৫ শতাংশের চেয়ে অধিক, মৃত্তিকার পানি সম্পৃক্ত নির্যাসের বিদ্যুৎ পরিবাহিতা প্রতি মিটারে ৪ ডেসিসিমেনসের (ds/m) কম এবং পিএইচ সাধারণত ৮.৫ বা নিরপেক্ষ লবণের উপস্থিতির কারণে এর চেয়ে কম এবং সোডিয়াম পরিশোষণ অনুপাত কমপেক্ষ ১৩ থাকে।

দৃঢ় ও ক্ষারীয়  পৃষ্ঠমৃত্তিকাসহ (পিএইচ ১৮.৫) এ প্রকারের মৃত্তিকা গঙ্গা নদী পললভূমির পশ্চিমে ব্যাপক বিচ্ছিন্ন এলাকাতে চুণযুক্ত দোঅাঁশ পশ্চাৎ পৃষ্ঠ (ridge) মৃত্তিকায় অতি অল্প এলাকাতে পাওয়া যায়। পৃষ্ঠমৃত্তিকার ক্ষারত্বই এ প্রকার মৃত্তিকার প্রধান সমস্যা। পৃষ্ঠমৃত্তিকাকে ভেঙ্গে ফেলার পর কয়েক বছরের জন্য দৃঢ় শিকড় বিশিষ্ট ঘাসের চাষ এবং যথেষ্ট পরিমাণে জৈব সার প্রয়োগ এসব মৃত্তিকাকে শস্য উৎপাদনের উপযুক্ত করে তোলে।

পিট মৃত্তিকা  গোপালগঞ্জ-খুলনা বিল, সিলেট অববাহিকার গভীর নিচু এলাকা এবং রংপুর ও ময়মনসিংহে পাওয়া যায়। পিট পৃষ্ঠমৃত্তিকার আয়তনী-ঘনত্বের মান কেবল ০.২০ থেকে ০.৩০ গ্রাম/ঘনসেন্টিমিটার (g/em3)। ভিজা অবস্থায় স্বল্প ভারবহন ক্ষমতা, প্রবল অম্লত্ব, স্বল্প পরিমাণের পুষ্টি উপাদান এবং স্থায়ী সিক্ততা শস্য উৎপাদনের অন্তরায়। পিট মৃত্তিকা শুকালে সঙ্কুচিত হয় এবং অম্লত্ব বৃদ্ধি পায়। নিয়ন্ত্রিত নিষ্কাশন মৃত্তিকাকে শুকাতে দেয় না, ফলে উঁচু করে নির্মিত স্তরে চাষাবাদ করা যায় এবং ভেড়িবাঁধের সাহায্যে মৃত্তিকাকে চাষের উপযুক্ত করা যেতে পারে।

ফসফেট আবদ্ধকারী মৃত্তিকা  এ প্রকারের মৃত্তিকাতে মধুপুর ও বরেন্দ্রভূমির কিছু সোপান মৃত্তিকা অন্তর্ভুক্ত। আয়রন ও অ্যালুমিনিয়াম সমৃদ্ধ প্রবল অম্লীয় মৃত্তিকা এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ চুনযুক্ত মৃত্তিকা ফসফেট আবদ্ধকরণ প্রবণ। ফসফেট সার প্রদানের যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ, খামারজাত সার বা কম্পোস্ট প্রয়োগ এবং পাতায় ফসফেট সার প্রয়োগ ফসফেট আবদ্ধকরণের ক্ষতিকর প্রভাব  হ্রাস করবে।

আয়রন, জিঙ্ক ও সালফারের ঘাটতি  আয়রন ও জিঙ্কের অভাব কেবল স্থানীয়ভাবে ঘটতে পারে, কিন্তু গঙ্গা নদী পললভূমির চুনযুক্ত মৃত্তিকা এবং বেলে মৃত্তিকা, পিট মৃত্তিকা, অধিক পিএইচ সংবলিত লবণাক্ত মৃত্তিকা ও হালকা গ্রথনের সানুদেশীয় মৃত্তিকাতে এদের ঘাটতি ব্যাপক বিস্তৃত হতে পারে।

সালফারের ঘাটতি হালকা গ্রথন ও সেচের সাহায্যে যেসব মৃত্তিকাতে উচ্চ ফলনশীল জাতের শস্য আবাদ করা হয় সেসব স্থানে মারাত্মক ও ব্যাপক বিস্তৃত। এর প্রধান কারণগুলো হলো: (ক) সালফার বিহীন সার, যেমন- ইউরিয়া, ট্রিপল সুপার ফসফেট সারের ব্যবহার বৃদ্ধি, (খ) উচ্চ ফলনশীল জাতের শস্য ব্যবহারের মাধ্যমে অধিক শস্য উৎপাদন এবং (গ) ভিজা অবস্থায় মৃত্তিকাতে অবিরতভাবে চাষাবাদ। জিঙ্ক ও সালফার সার প্রয়োগ করে সহজেই যথাক্রমে জিঙ্ক ও সালফারের সমস্যা দূর করা যায়।

ভৌত সমস্যা খাড়া ঢালে অবস্থিত মৃত্তিকা  এ ধরনের মৃত্তিকা পাহাড়ি এলাকায় ব্যাপক বিস্তৃত এবং বরেন্দ্র ও মধুপুর অঞ্চলের উপত্যকাতে সামান্য পরিমাণে পাওয়া যায়। প্রতিকূল ঢাল (প্রায়ই খাড়া থেকে অত্যন্ত খাড়া), মৃত্তিকা পরিলেখের অগভীরতা, শুষ্ক ঋতুতে মারাত্মক খরা, মধ্যম থেকে দ্রুত পানির প্রবেশ্যতা এবং মারাত্মক ভূমিক্ষয়ের প্রতি সংবেদনশীলতা শস্য আবাদে সমস্যা সৃষ্টি করে। অত্যন্ত খাড়া থেকে খাড়া ঢালে অবস্থিত মৃত্তিকা বনবৃক্ষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। চা, কফি, রাবার, কলা ইত্যাদি মৃদু ঢালসহ পাহাড়ের নিম্নাঞ্চল ও গভীর দোঅাঁশ মৃত্তিকা এবং একই প্রকার মৃত্তিকাতে কাঁঠাল সম্ভাব্য বেছে নেওয়া শস্য হতে পারে। জৈব পদার্থ বৃদ্ধির উদ্যোগ যেখানে সম্ভব আচ্ছাদন শস্য চাষ এবং মৃত্তিকা পৃষ্ঠকে যত কম সম্ভব উন্মুক্ত রেখে অধিকতর ক্ষতির কবল থেকে মৃত্তিকা সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্য যেকোনো বিকল্প ব্যবস্থা মারাত্মক ক্ষতি ঘটাতে পারে।

স্থূল গ্রথনের মৃত্তিকা  স্থূল গ্রথনের মৃত্তিকাসহ ভূমি, প­াবন-মুক্ত সানুদেশীয় প­াবনভূমি, সক্রিয় পললভূমি, পাহাড় ও নদী চরে পাওয়া যায়। সংযুতির স্বল্পমাত্রার স্থিতিশীলতা, স্বল্প পানি ধারণ ক্ষমতা, সামান্য পরিমাণের জৈব পদার্থ, জিঙ্ক ও সালফারের অপ্রতুলতা শস্য উৎপাদনের অন্তরায়। উঁচু ভূমির মৃত্তিকাতে বৃক্ষসহ খরা সহনশীল শস্য, আচ্ছাদন, নিয়ন্ত্রিত সেচ, খামার জাত সার, ধীরে উপাদান নির্গত হয় এমন সারসহ ফল, মশলা বা শাকসবজির চাষই হবে সর্বোত্তম ভূমি ব্যবহার।

অগভীর মৃত্তিকা  অগভীর মৃত্তিকাসহ (৫০ সেন্টিমিটারের চেয়েও কম গভীর) ভূমি পাহাড়ের শিখর অঞ্চলের ক্ষয়িষ্ণু অংশে পাওয়া যায়। নিম্নমাত্রার উর্বরতা, স্বল্প পরিমাণের পানি (বিশেষ করে শুষ্ক ঋতুতে), যথাযথ শিকড় বৃদ্ধির জন্য অপর্যাপ্ত জায়গা এবং ভূমিক্ষয় থেকে অরক্ষিত অবস্থা শস্য উৎপাদন ব্যাহত করে। এসব ভূমির কিছু অংশে ধান চাষ এবং অন্যান্য স্থানে শুষ্কাঞ্চলের শস্য আবাদ হয়। মৃত্তিকার অবনয়ন পরিহার করতে এ ধরনের ভূমিতে গুল্ম, তৃণ ও ছোট ছোট বাঁশ জন্মাতে দেওয়া উচিত।

অপর্যাপ্ত নিষ্কাশন  অপর্যাপ্ত নিষ্কাশন অবস্থা সংবলিত মৃত্তিকা অধিকাংশ সক্রিয় ও বিসর্প পললভূমি ও অববাহিকাতে পাওয়া যায়। অপর্যাপ্ত নিষ্কাশন মৃত্তিকাতে প্রতিকূল ভৌত, রাসায়নিক ও জৈব অবস্থার সৃষ্টি করে। অক্সিজেন বিহীন অবস্থায় অন্যান্য গ্যাস, যেমন-কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন ও নাইট্রোজেনের নির্গমন উঁচু জমিতে জন্মে এমন শস্যের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রন্থ করে। এসব মৃত্তিকা ধান চাষের উপযোগী এবং উঁচু ভূমির শস্য আবাদের জন্য নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রয়োজন।

পা­উপ্যানসহ মৃত্তিকা  কৃষি জমির পৃষ্ঠ মৃত্তিকার নিচে অবস্থিত একটি দৃঢ় মৃত্তিকা স্তর, যা লাঙ্গলের ফলার নিচ থেকে সৃষ্ট চাপের প্রভাবে সৃষ্টি হয়। অধিকাংশ মৃত্তিকাতে, বিশেষ করে পলি দোঅাঁশ মৃত্তিকাতে প­াউপ্যান পাওয়া যায়। প­াউপ্যান পাওয়া যায় এমন মৃত্তিকাকে ভিজা অবস্থায় চাষ করা হয় এবং রোপা ধান জন্মানোর জন্য কাদা করা (puddled) হয়। এ ধরনের দৃঢ় স্তর ধান চাষের জন্য সুবিধাজনক, কিন্তু উঁচু ভূমিতে জন্মে এমন শস্যের বৃদ্ধিতে সীমাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। উঁচু ভূমির শস্য আবাদের জন্য গভীর লাঙ্গল ব্যবহার করে প­াউপ্যানকে ভেঙ্গে ফেলা উচিত। কিন্তু শস্য পর্যায়ে একই জমিতে ধান ও উঁচু ভূমির শস্য আবাদের জন্য গভীর কর্ষণ-যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে অধিকতর গভীরে প­াউপ্যান সৃষ্টি করা যেতে পারে।

উপসংহারে বলা যায় যে, নিম্নমানের উর্বরতা (উত্তর ও পূর্বাঞ্চলীয় পাহাড়ি মৃত্তিকা এবং সোপান মৃত্তিকা), প্রবল অম্লত্ব (সানুদেশীয়, উত্তর ও পূর্বাঞ্চলীয় সানুদেশ, শুষ্ক ঋতুতে অববাহিকা মৃত্তিকা এবং অম্লসালফেট মৃত্তিকা), খরা (শুষ্ক ঋতুতে অববাহিকা মৃত্তিকা এবং উত্তর ও পূর্বাঞ্চলীয় সানুদেশীয় সমতলভূমি), সিক্ততা (পিট মৃত্তিকা, পাহাড়ি মৃত্তিকা এবং আগাম শুষ্ক ঋতুতে অববাহিকা মৃত্তিকা), জিঙ্কের ঘাটতি (অববাহিকা মৃত্তিকা, পিট মৃত্তিকা এবং মোহনাজ পললভূমি মৃত্তিকা), ফসফেট আবদ্ধকরণ (সোপান মৃত্তিকা), প­াউপ্যান (তিস্তা পললভূমি, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র পললভূমি, বরেন্দ্র ভূমি এবং মেঘনা মোহনাজ পললভূমি), অধিক পানি প্রবেশ্যতা (গঙ্গা পললভূমি মৃত্তিকা এবং ভঙ্গুর লাল এঁটেল সোপান মৃত্তিকা), স্বল্প পরিমাণের পানির উপস্থিতি (গঙ্গা পললভূমি মৃত্তিকা, বরেন্দ্র ভূমি এবং উত্তর ও পূর্বাঞ্চলীয় সানুদেশীয় মৃত্তিকা) এবং দৃঢ় সংবদ্ধতা (সোপান মৃত্তিকা) ও স্বল্প ভারবহন ক্ষমতা বাংলাদেশে শস্য উৎপাদনের জন্য মৃত্তিকাতে সৃষ্ট প্রধান প্রতিবন্ধক। যদিও উলি­খিত প্রতিবন্ধকতাগুলোই কেবলমাত্র বিদ্যমান তা নয়, কিন্তু এসব সমস্যা সৃষ্টি হয় এমন ভূমিতে অন্তর্ভুক্ত মোট এলাকার পরিমাণ অনেক। এসব সমস্যার পূর্ণ বা আংশিক প্রতিকারের জন্য সতর্ক পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন, কারণ বাংলাদেশ একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ এবং শস্য উৎপাদনে নামমাত্র স্বয়ম্ভর।  [আমিনুল ইসলাম]