হাইড্রোকার্বন

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২৩:১৬, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

হাইড্রোকার্বন শুধু কার্বন ও হাইড্রোজেনে গঠিত গ্যাসীয় (প্রাকৃতিক গ্যাস), তরল (অশোধিত তেল) ও কঠিন (অ্যাসফল্ট) জাতীয় যেকোন জৈবিক যৌগ। হাইড্রোকার্বন বেশ কয়েকটি শ্রেণীতে বিভক্ত। এর মধ্যে প্যারাফিন, সাইক্লোপ্যারাফিন ও অ্যারোমেটিক গ্রুপভুক্ত হাইড্রোকার্বনসমূহ ভূতত্ত্ববিদদের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ বিশেষ করে এর পূর্বাঞ্চল প্রাকৃতিক গ্যাসে সমৃদ্ধ। কিছু অশোধিত তেলও এখানে পাওয়া গেছে।

২০০০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ২২টি প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে, যার মোট প্রাথমিক মজুত (GIIP) প্রায় ২৬ ট্রিলিয়ন কিউবিক ফুট। এর মধ্যে ১৬ টিসিএফ-এর মতো উত্তোলনযোগ্য। ২০০০ সালের প্রথম দিকে মোট ৩.৫ টিসিএফ গ্যাস উৎপন্ন হয়েছে এবং প্রায় ১২.৫ টিসিএফ গ্যাস এখনও মজুত রয়েছে। ২২টি গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে ২টি বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী এলাকায় এবং বাদবাকি পূর্বাঞ্চলীয় স্থলভাগে অবস্থিত। হাইড্রোকার্বন গ্যাস মায়োসিন (৫০ লক্ষ থেকে ২ কোটি ৪০ লক্ষ বছর আগে) ও প­ায়োসিন (২০ লক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ বছর আগে) যুগের ভূ-পৃষ্ঠের প্রায় ১০০০ থেকে ৩৫০০ মিটার নিচে বেলেপাথরের আধারে সঞ্চিত হয়।

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক গ্যাস খুবই বিশুদ্ধ, প্রায় ৯৫% থেকে ৯৯% মিথেন এবং খুব সামান্য পরিমাণ সালফার। বাংলাদেশে প্রাপ্ত গ্যাসের গড় উপাদানসমূহ হচ্ছে ৯৭.৩৩% মিথেন, ১.৭২% ইথেন, ০.৩৫% প্রোপেন ও ০.১৯% উচ্চতর হাইড্রোকার্বন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গ্যাস শুষ্ক, যদিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা উলে­খযোগ্য পরিমাণ কন্ডেনসেটসহ আর্দ্র। উদাহরণস্বরূপ, বিয়ানীবাজার (১৬ bbl/mmcfg) জালালাবাদ (১৫ bbl/mmcfg) ও কৈলাশটিলায় (১৩ bbl/mmcfg) মোট কন্ডেনসেট মজুতের পরিমাণ আনুমানিক প্রায় ৬ কোটি ৫০ লক্ষ ব্যারেল।

ভূতাত্ত্বিক প্রমাণাদিতে দেখা যায় ইতোমধ্যে আবিষ্কৃত হাইড্রোকার্বন গ্যাস ছাড়াও দেশে আরও গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রাকৃতিক গ্যাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশে উৎপাদিত বিদ্যুতের প্রায় শতকরা ৮৯ ভাগ আসে গ্যাসচালিত শক্তি স্থাপনাসমূহ থেকে।

হাইড্রোকার্বনের তরলরূপ অশোধিত তেল বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কেবল সিলেটের হরিপুর তেলক্ষেত্রে পাওয়া গেছে। ওই ক্ষেত্রে তেলমজুতের পরিমাণ আনুমানিক ১ কোটি ব্যারেল, যার মধ্যে উত্তোলনযোগ্য প্রায় ৬০ লক্ষ ব্যারেল। ছয় বছরে উক্ত ক্ষেত্র থেকে ৫ লক্ষ ৬০ হাজার ব্যারেল তেল উৎপাদিত হয়। কিন্তু ১৯৯৪ সাল থেকে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। হরিপুর তেলক্ষেত্রের মূল্যায়ন পুরোপুরি হয় নি। বিশেষজ্ঞদের অভিমত যথাযথ মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার পর পূর্ণ মাত্রায় অনুসন্ধান চালানো যেতে পারে। অশোধিত তেলবাহী আধারস্তর কৈলাশটিলা ও ফেঞ্চুগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্রেও পাওয়া গেছে। তবে সেগুলোর বাণিজ্যিক সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখতে হবে।  [বদরুল ইমাম]