অ্যাসক্যারিয়াসিস

Nasirkhan (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৮:১৬, ৮ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

অ্যাসক্যারিয়াসিস (Ascariasis)  পেটে গোলকৃমিজনিত রোগ। Ascaridae গোত্রের পরজীবী Ascaris lumbricoides স্মরণাতীতকাল থেকে সম্ভবত শূকর পোষার শুরুতে গোলকৃমি নামে মানুষের সঙ্গী হয়ে আছে। গোলকৃমি মানুষ ও শূকরের ক্ষুদ্রান্ত্রবাসী বড় আকারের একটি নিমাটোড (nematode)। প্রাপ্তবয়স্ক গোলকৃমি সর্বাধিক ৩০ সেমি পর্যন্ত লম্বা। মুখ ৩টি ঠোঁট দ্বারা সুরক্ষিত, একটি পৃষ্ঠের ও অন্য দুটি পার্শত-অঙ্কভাগে অবস্থিত এবং সবগুলিই ক্ষুদ্র পিড়কাযুক্ত। সাধারণত ভ্রূণযুক্ত ডিম গলাধঃকরণে রোগসংক্রমণ হয় এবং আঙুলের সাহায্যেই তা মুখে পৌঁছায়। বাংলাদেশের কয়েকটি অঞ্চলে এ রোগের ব্যাপক প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে দূষিত পানি সরবরাহ সরাসরি জড়িত। বস্তি এলাকায় ও গ্রামাঞ্চলের কাদাভরা মেঝে বা ঘরে প্রচুর পরিমাণে গোলকৃমির ডিম থাকে এবং মেঝেতে বসা, শোওয়া, খাওয়া ও খেলাধুলার সময় রোগ সংক্রমণের ব্যাপক সুযোগ ঘটে। নোংরা মাঠে খেলাধুলার সময় ডিমগুলি বাচ্চাদের হাতে পায়ে লেগে ঘরে আসে এবং খাবারের আগে ভালভাবে হাত ও রান্না প্রয়োজন নয় এমন খাদ্যদ্রব্য না ধোয়ার কারণে ডিম পেটে ঢোকে আর এটি হলো এ রোগের ব্যাপক প্রাদুর্ভাবের অন্যতম প্রধান কারণ। গোলকৃমিজ রোগে অন্ত্রের অধঃশ্লেষ্মাস্তরে রক্তক্ষরণ এবং অন্ত্রে ক্ষত সৃষ্টি হয়। লার্ভাগুলি ফুসফুস, ও ক্লোমনালীতে প্রদাহ ও রক্তক্ষরণ ঘটায়। এছাড়া গোলকৃমি পেটের অস্বস্তি, তীব্র শূলবেদনা, বমি ইত্যাদি এবং অত্যধিক সংখ্যক হলে পিত্তনালী বা অন্ত্রে অবরোধও সৃষ্টি করতে পারে।

বাংলাদেশে গ্রামাঞ্চলের ১২-১৪ বছর পর্যন্ত বয়সের শিশুরা সচরাচর এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। খাবারে ভাগ বসিয়ে এরা শিশুদের অপুষ্টিতে ভোগায়। এ রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বাস্থ্যরক্ষার উত্তম পরিবেশ ও স্বাস্থবিধি মানা আবশ্যক।  [এ.ডব্লিউ.এম শামসুল ইসলাম]