সিলেট সদর উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র'''))
 
(হালনাগাদ)
 
(একজন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''সিলেট সদর উপজেলা''' (সিলেট জেলা)  আয়তন: ৩২৩.১৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৫২´ থেকে ২৫°০২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং  ৯১°৪০´ থেকে ৯১°০১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলা, দক্ষিণে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা, পূর্বে জৈন্তাপুর ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে ছাতক ও বিশ্বনাথ উপজেলা।
'''সিলেট সদর উপজেলা''' ([[সিলেট জেলা|সিলেট জেলা]])  আয়তন: ৩০১.৮০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৫২´ থেকে ২৫°০২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং  ৯১°৪০´ থেকে ৯১°০১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলা, দক্ষিণে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা, পূর্বে জৈন্তাপুর ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে ছাতক ও বিশ্বনাথ উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ৪৯৩৭৮৪; পুরুষ ২৬৬৭০১, মহিলা ২২৭০৮৩। মুসলিম ৪৪১৫৩৯, হিন্দু ৫০৯১৯, বৌদ্ধ ৭১৭, খ্রিস্টান ২৩৯ এবং অন্যান্য ৩৭০। এ উপজেলায় খাসিয়া ও মনিপুরী আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
''জনসংখ্যা'' ৮২৯১০৩; পুরুষ ৪৩৬৬৭৯, মহিলা ৩৯২৪২৪। মুসলিম ৭৩৮৯৫৮, হিন্দু ৮৮০৭১, বৌদ্ধ ৩২৮, খ্রিস্টান ৯৮৮ এবং অন্যান্য ৭৫৮। এ উপজেলায় খাসিয়া ও মনিপুরী আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।


''জলাশয়'' প্রধান নদী: সুরমা, কুশিয়ারা, সিংড়া। ডবু বিল, বাগোলা বিল ও পাতামোড়া বিল উল্লেখযোগ্য।
''জলাশয়'' প্রধান নদী: সুরমা, কুশিয়ারা, সিংড়া। ডবু বিল, বাগোলা বিল ও পাতামোড়া বিল উল্লেখযোগ্য।
১০ নং লাইন: ১০ নং লাইন:
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
! colspan="9" | উপজেলা
| colspan="9" | উপজেলা
|-
|-
! rowspan="2" | পৌরসভা  || rowspan="2" | ইউনিয়ন  || rowspan="2" | মৌজা  || rowspan="2" | গ্রাম  || rowspan="2" | জনসংখ্যা || colspan="2" | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি)  || colspan="2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan="2" | পৌরসভা  || rowspan="2" | ইউনিয়ন  || rowspan="2" | মৌজা  || rowspan="2" | গ্রাম  || rowspan="2" | জনসংখ্যা || colspan="2" | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || colspan="2" | শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| ১ || ৮ || ৮৪  || ৩৭২  || ৩১৬৩১১  || ২৩০৫৮৭  || ১৫২৮  || ৬৭.৮৮ || ৪৫.১৩
| ১ || ৮ || ৮৮ || ৩৫৩ || ৫২৬৪১২ || ৩০২৬৯১ || ২৭৪৭ || ৬৭.৮৮ (২০০১) || ৪৯.
 
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
| colspan="9" | সিটি কর্পোরেশন
|-
|-
| সিটি কর্পোরেশন
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  || মহল্লা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
 
|-
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি) || ওয়ার্ড  || মহল্লা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| ২১.০৯ (২০০১) || ২৭ || ২০৭ || ৪৮৫১৩৮ || ১২৪৮০ (২০০১)  || ৬৭.৮
 
|-
|-
| ২১.০৯  || ২৭  || ২০৭  || ২৬৩১৯৭  || ১২৪৮০  || ৬৯.৭৩
|}
 
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| সিটি কর্পোরেশনের বাইরে উপজেলা শহর
| colspan="9" | সিটি কর্পোরেশনের বাইরে উপজেলা শহর
 
|-
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ৩১.১৪ || ১৪  || ৫৩১১৪  || ৯৫১ || ৬৬.০০
| ৩১.১৪ (২০০১) || || ৪১২৭৪ || ৯৫১(২০০১) || ৬৫.
 
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| ইউনিয়ন
| colspan="9" | ইউনিয়ন
|-  
|-  
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
৪৭ নং লাইন: ৪৩ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-  
|-  
| কান্দিগাঁও ৩৮ || ৮৬৭২ || ১৬৬৪২ || ১৬২৪২  || ৪০.১৪
| কান্দিগাঁও ৩৮ || ৮৬৭২ || ২০৬৫৭ || ২০৩৩১ || ৪৫.
 
|-
|-
| খাদিমনগর ৪০ || ১৮৮৪৪ || ২০১৫৮ || ১৮৬৬৩  || ৩৯.৭৪
| খাদিমনগর ৪০ || ১৮৮৪৪ || ২৯৩৩৯ || ২৭১২১ || ৪৭.
 
|-
|-
| খাদিমপাড়া ৪২ || ১১৩০৩ || ২৭৫১৮ || ২৫০০৩  || ৫৬.৯৫
| খাদিমপাড়া ৪২ || ১১৩০৩ || ৪৫৩১৭ || ৪৩৪৭৬ || ৬১.
 
|-
|-
| জালালাবাদ ৩৪ || ৮৪৭৩ || ৭১০৭ || ৬৯১১  || ৩৪.২৮
| জালালাবাদ ৩৪ || ৮৪৭৩ || ৮৭৯৭ || ৯১৭১ || ৩৫.
 
|-
|-
| টুকের বাজার ৯০ || ৮৩৪২ || ১৯৪০৩ || ১৬৬৪৬  || ৪৯.৭৯
| টুকের বাজার ৯০ || ৮৩৪২ || ২৮১৫৮ || ২৫৬৭৪ || ৫৭.
 
|-
|-
| টুলটিকর ৯৫ || ৩৬৬৮  || ৪৪০৪ || ৩৫০৮  || ৬৩.৭৭
| টুলটিকর ৯৫ || ২৭২৭ || ১৪৪২৯ || ১২৪৭৪ || ৫৬.
 
|-
|-
| মোগলগাঁও ৫৫ || ৭৫৬৮ || ১১১৩৪ || ১০৯৯১  || ৩৬.৯৯
| মোগলগাঁও ৫৫ || ৭৫৬৮ || ১৫১৯২ || ১৫৩৫৮ || ৪৩.
 
|-
|-
| হাটখোলা ৩২ || ৮৬৪৯ || ১১৩৬৫ || ১১৪৩০  || ৩৯.৪২
| হাটখোলা ৩২ || ৮৬৪৯ || ১৪১৩৪ || ১৪৩৩৭ || ৪১.
|}
|}
'''সূত্র '''''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। '''
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।  


[[Image:SylhetSadarUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' শাহজালাল (রহ) মাযারের শিলালিপি, গড়দোয়ার নবাবী মসজিদ, বিশ্বম্ভর আখড়ায় রক্ষিত কষ্টি পাথরের মূর্তি, শাহী ঈদগাহের শিলালিপি, ক্রীন ব্রিজ।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' শাহজালাল (রহ) মাযারের শিলালিপি, গড়দোয়ার নবাবী মসজিদ, বিশ্বম্ভর আখড়ায় রক্ষিত কষ্টি পাথরের মূর্তি, শাহী ঈদগাহের শিলালিপি, ক্রীন ব্রিজ।


''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল সিটি হাসপাতাল এলাকায় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে বেশসংখ্যক পাকসেনা ও মুক্তিযোদ্ধা নিহত হন। ৫ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধারা সিলেট বিমানবন্দরে বোমা হামলা চালায়। এতে বিমানবন্দরের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় সকল পাকসেনা বিমানবন্দর এলাকায় চলে যায়। এই সুযোগে মুক্তিযোদ্ধারা সিলেট কারাগার থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারন মানুষসহ প্রায় ২৫০০ জনকে মুক্ত করে আনেন। ১৯ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধারা পুনরায় বিমানবন্দর আক্রমণ করেন। লালটিলা, উরিয়াটিলা, মালনীছড়া চা বাগান, টুলটিকর, জিন্দাবাজার পুলিশ লাইন, জালালাবাদ প্রভৃতি স্থানে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘর্ষে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষ হতাহত হয়। ১৬ ডিসেম্বর সিলেট শহর শত্রুমুক্ত হয়।
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল সিটি হাসপাতাল এলাকায় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে বেশসংখ্যক পাকসেনা ও মুক্তিযোদ্ধা নিহত হন। ৫ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধারা সিলেট বিমানবন্দরে বোমা হামলা চালায়। এতে বিমানবন্দরের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় সকল পাকসেনা বিমানবন্দর এলাকায় চলে যায়। এই সুযোগে মুক্তিযোদ্ধারা সিলেট কারাগার থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারন মানুষসহ প্রায় ২৫০০ জনকে মুক্ত করে আনেন। ১৯ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধারা পুনরায় বিমানবন্দর আক্রমণ করেন। লালটিলা, উরিয়াটিলা, মালনীছড়া চা বাগান, টুলটিকর, জিন্দাবাজার পুলিশ লাইন, জালালাবাদ প্রভৃতি স্থানে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘর্ষে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষ হতাহত হয়। ১৬ ডিসেম্বর সিলেট শহর শত্রুমুক্ত হয়। উপজেলার ৬টি স্থানে (সিলেট ক্যাডেট কলেজ, সিভিল সার্জন বাংলো, লালটিলা, উড়িয়াটিলা, খাদিমনগর, শেখ বুরহান উদ্দিন রোড) বধ্যভূমি এবং জিন্দাবাজার পুলিশ লাইন, মালনীছড়া চা বাগান, ক্যাডেট কলেজ ও টুলটিকরে ৬টি গণকবর রয়েছে; বিভিন্ন স্থানে ৬টি স্মৃতিস্তম্ভ, সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এবং জালালাবাদ সেনানিবাসে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিভাস্কর্য স্থাপিত হয়েছে।
 
 
'''[[Image:SylhetSadarUpazila.jpg|thumb|right|সিলেট সদর উপজেলা]]'''
 


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' বধ্যভূমি ৬ (সিলেট ক্যাডেট কলেজ, সিভিল সার্জন বাংলো, লালটিলা, উড়িয়াটিলা, খাদিমনগর, শেখ বুরহান উদ্দিন রোড); গণকবর ৬ (জিন্দাবাজার পুলিশ লাইন, মালনীছড়া চা বাগান, ক্যাডেট কলেজ, টুলটিকর); স্মৃতিস্তম্ভ ৬; স্মৃতিসৌধ ১ (সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার); ভাস্কর্য ১ (জালালাবাদ সেনানিবাসে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিভাস্কর্য)।
''বিস্তারিত দেখুন'' সিলেট সদর উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১০।


ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ৩৭৫, মন্দির ১২, গির্জা ২, মঠ ২, মাযার ৬। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: শেখ সুনাউল্লাহ মসজিদ, নবাবী মসজিদ, দরগাহ মসজিদ, কুদরত উল্লাহ মসজিদ, শাহপরাণ মসজিদ, আবু তুরাব মসজিদ, হযরত শাহজালালের (রহ) মাযার, হযরত শাহ পরানের (রহ) মাযার, গরম দেওয়ানের মাযার, পাঁচ পীরের মাযার, জিন্দা পীরের মাযার, গোটাটিক শিব মন্দির, কালীঘাটের কালী মন্দির, সতীর পীঠস্থান, জৈনপুরের পীঠস্থান, সৎসঙ্গ বিহার, রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ, প্রেসবিটেরিয়ান চার্চ (১৮৯৭), নয়াসড়কের গির্জা।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ৩৭৫, মন্দির ১২, গির্জা ২, মঠ ২, মাযার ৬। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: শেখ সুনাউল্লাহ মসজিদ, নবাবী মসজিদ, দরগাহ মসজিদ, কুদরত উল্লাহ মসজিদ, শাহপরাণ মসজিদ, আবু তুরাব মসজিদ, হযরত শাহজালালের (রহ) মাযার, হযরত শাহ পরানের (রহ) মাযার, গরম দেওয়ানের মাযার, পাঁচ পীরের মাযার, জিন্দা পীরের মাযার, গোটাটিক শিব মন্দির, কালীঘাটের কালী মন্দির, সতীর পীঠস্থান, জৈনপুরের পীঠস্থান, সৎসঙ্গ বিহার, রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ, প্রেসবিটেরিয়ান চার্চ (১৮৯৭), নয়াসড়কের গির্জা।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫৯.১৪%; পুরুষ ৬৩.০৯%, মহিলা ৫৪.৬১%। বিশ্ববিদ্যালয় ৫, মেডিকেল কলেজ ৪, কারিগরি কলেজ ৩, কলেজ ৭, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৫, কমিউনিটি বিদ্যালয় ৬, কিন্ডার গার্টেন ৮০, মাদ্রাসা ৩০। উলে­খযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৮৭), সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, দারুল আহসান বিশ্ববিদ্যালয়, এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ (১৯৭৫), সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, জালালাবাদ পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, এম সি কলেজ (১৮৮৯), সিলেট সংস্কৃত কলেজ (১৯০২), সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৩৬), রাজা জিমি হাইস্কুল (১৮৮৬), সরকারি অগ্রগামী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯০৩), মডেল হাইস্কুল (১৯৩২), সরকারি মদন মোহন কলেজ (১৯৪০), দি এইডেড হাইস্কুল (১৯৪২), কিশোরী মোহন বালিকা বিদ্যালয় (১৯৪৪), হযরত শাহজালাল (রহ) উচ্চ বিদ্যালয়, হযরত শাহ পরান (রহ) উচ্চ বিদ্যালয়, সিলেট সরকারি আলীয়া মাদ্রাসা (১৯৪৮)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৬১.%; পুরুষ ৬৪.%, মহিলা ৫৭.%। বিশ্ববিদ্যালয় ৫, মেডিকেল কলেজ ৪, কারিগরি কলেজ ৩, কলেজ ৭, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৫, কমিউনিটি বিদ্যালয় ৬, কিন্ডার গার্টেন ৮০, মাদ্রাসা ৩০। উলে­খযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৮৭), সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, দারুল আহসান বিশ্ববিদ্যালয়, এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ (১৯৭৫), সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, জালালাবাদ পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, এম সি কলেজ (১৮৮৯), সিলেট সংস্কৃত কলেজ (১৯০২), সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৩৬), রাজা জিমি হাইস্কুল (১৮৮৬), সরকারি অগ্রগামী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯০৩), মডেল হাইস্কুল (১৯৩২), সরকারি মদন মোহন কলেজ (১৯৪০), দি এইডেড হাইস্কুল (১৯৪২), কিশোরী মোহন বালিকা বিদ্যালয় (১৯৪৪), হযরত শাহজালাল (রহ) উচ্চ বিদ্যালয়, হযরত শাহ পরান (রহ) উচ্চ বিদ্যালয়, সিলেট সরকারি আলীয়া মাদ্রাসা (১৯৪৮)।


''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' দৈনিক: সিলেটের ডাক, সবুজ সিলেট, সিলেট সংলাপ, মানচিত্র, যুগভেরী, সিলেট বাণী, আলোকিত সিলেট, জালালাবাদ; অবলুপ্ত: শ্রীহট্ট প্রকাশ (১৮৭৫), পরিদর্শক (১৮৭৫-৮০), শ্রীহট্টমিহির (১৮৮৯), শ্রীহট্টবাসী (১৮৯৫), জনশক্তি (১৯২০), যুগবাণী (১৯২৫), জ্ঞানান্বেষন (১৯৩১), জাগরণ (১৯৩৮), আল জালাল (১৯৪১), সিলেট সমাচার (১৯৭৭), সিলেট কণ্ঠ (১৯৮১), সাপ্তাহিক জালালাবাদ (১৯৮২), দৈনিক জালালাবাদী (১৯৮৪), দৈনিক সুদিন (১৯৯২), আজকের সিলেট (১৯৯২), আজকের বিশ্ব সংবাদ (১৯৯২)।
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' দৈনিক: সিলেটের ডাক, সবুজ সিলেট, সিলেট সংলাপ, মানচিত্র, যুগভেরী, সিলেট বাণী, আলোকিত সিলেট, জালালাবাদ; অবলুপ্ত: শ্রীহট্ট প্রকাশ (১৮৭৫), পরিদর্শক (১৮৭৫-৮০), শ্রীহট্টমিহির (১৮৮৯), শ্রীহট্টবাসী (১৮৯৫), জনশক্তি (১৯২০), যুগবাণী (১৯২৫), জ্ঞানান্বেষন (১৯৩১), জাগরণ (১৯৩৮), আল জালাল (১৯৪১), সিলেট সমাচার (১৯৭৭), সিলেট কণ্ঠ (১৯৮১), সাপ্তাহিক জালালাবাদ (১৯৮২), দৈনিক জালালাবাদী (১৯৮৪), দৈনিক সুদিন (১৯৯২), আজকের সিলেট (১৯৯২), আজকের বিশ্ব সংবাদ (১৯৯২)।
১০০ নং লাইন: ৮৬ নং লাইন:
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  তিল, তিসি, সরিষা, কাউন, গোল মরিচ।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  তিল, তিসি, সরিষা, কাউন, গোল মরিচ।


''প্রধান ফল-ফলাদিব'' আনারস, ডালিম, কমলালেবু, কতবেল।
''প্রধান ফল-ফলাদি'' আনারস, ডালিম, কমলালেবু, কতবেল।


''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ৫০, গবাদিপশু ৫, হাঁস-মুরগি ১০০, হ্যাচারি ১৫।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ৫০, গবাদিপশু ৫, হাঁস-মুরগি ১০০, হ্যাচারি ১৫।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ২০১.৪১ কিমি, আধা-পাকারাস্তা কিমি, কাঁচারাস্তা ৬৫০ কিমি। রেলপথ ৪৯.০৭ কিমি;  কালভার্ট ৭৫০, ব্রিজ ১৫; বিমানবন্দর ১।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ১৯৮ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১২ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪১৭ কিমি; রেলপথ ৪৯.০৭ কিমি। কালভার্ট ৭৫০, ব্রিজ ১৫; বিমানবন্দর ১।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি।
১১৪ নং লাইন: ১০০ নং লাইন:
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ৩২, মেলা ৬। কাজীর বাজার, জালালাবাদ বাজার, হাটখোলা বাজার, কালিঘাট বাজার, লাল বাজার, রিকাবী বাজার, মিরা বাজার, জিন্দাবাজার, শিবগঞ্জ বাজার, শাহপরান বাজার, খাদিমনগর বাজার, সালুটিকর বাজার এবং ইসলামপুর মনিপুরী রাজবাড়ির মেলা, রথযাত্রার মেলা, চৈত্র মেলা, চালিবন্দর চড়ক মেলা ও মহররমের মেলা (শাহী ঈদগাহ) উল্লেখযোগ্য।
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ৩২, মেলা ৬। কাজীর বাজার, জালালাবাদ বাজার, হাটখোলা বাজার, কালিঘাট বাজার, লাল বাজার, রিকাবী বাজার, মিরা বাজার, জিন্দাবাজার, শিবগঞ্জ বাজার, শাহপরান বাজার, খাদিমনগর বাজার, সালুটিকর বাজার এবং ইসলামপুর মনিপুরী রাজবাড়ির মেলা, রথযাত্রার মেলা, চৈত্র মেলা, চালিবন্দর চড়ক মেলা ও মহররমের মেলা (শাহী ঈদগাহ) উল্লেখযোগ্য।


''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   প্রাকৃতিক গ্যাস, চা, পান, কমলালেবু, শুঁটকি মাছ, মনিপুরী তাঁত সামগ্রী, বাঁশ ও বেতের তৈরি আসবাবপত্র, শীতলপাটি।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  প্রাকৃতিক গ্যাস, চা, পান, কমলালেবু, শুঁটকি মাছ, মনিপুরী তাঁত সামগ্রী, বাঁশ ও বেতের তৈরি আসবাবপত্র, শীতলপাটি।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৬২.৩০% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৯৯.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


প্রাকৃতিক সম্পদ  প্রাকৃতিক গ্যাস।
''প্রাকৃতিক সম্পদ''  প্রাকৃতিক গ্যাস।


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৭২.১১%, ট্যাপ ১৬.০৮%, পুকুর .৬৭% এবং অন্যান্য .১৪%।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৪৬.%, ট্যাপ .৭% এবং অন্যান্য ৫২.%।  


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৬৩.৯৮% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৮.৮৮% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। .১৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৪৯.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৮.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। .% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' হাসপাতাল ৫, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৭,  কমিউনিটি ক্লিনিক ২০, ক্লিনিক ২২, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' হাসপাতাল ৫, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৭,  কমিউনিটি ক্লিনিক ২০, ক্লিনিক ২২, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫।


''এনজিও'' ব্র্যাক, কেয়ার, আশা, সেভ দ্য চিলড্রেন।  [মো. ফররখ আহমদ চৌধুরী]
''এনজিও'' ব্র্যাক, কেয়ার, আশা, সেভ দ্য চিলড্রেন।  [মো. ফররখ আহমদ চৌধুরী]


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সিলেট সদর উপজেলার মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০১০।
'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সিলেট সদর উপজেলার মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০১০।
 
[[en:Sylhet Sadar Upazila]]
 
[[en:Sylhet Sadar Upazila]]


[[en:Sylhet Sadar Upazila]]
[[en:Sylhet Sadar Upazila]]

১৯:৫৬, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

সিলেট সদর উপজেলা (সিলেট জেলা)  আয়তন: ৩০১.৮০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৫২´ থেকে ২৫°০২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং  ৯১°৪০´ থেকে ৯১°০১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলা, দক্ষিণে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা, পূর্বে জৈন্তাপুর ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে ছাতক ও বিশ্বনাথ উপজেলা।

জনসংখ্যা ৮২৯১০৩; পুরুষ ৪৩৬৬৭৯, মহিলা ৩৯২৪২৪। মুসলিম ৭৩৮৯৫৮, হিন্দু ৮৮০৭১, বৌদ্ধ ৩২৮, খ্রিস্টান ৯৮৮ এবং অন্যান্য ৭৫৮। এ উপজেলায় খাসিয়া ও মনিপুরী আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয় প্রধান নদী: সুরমা, কুশিয়ারা, সিংড়া। ডবু বিল, বাগোলা বিল ও পাতামোড়া বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন সিলেট সদর থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
৮৮ ৩৫৩ ৫২৬৪১২ ৩০২৬৯১ ২৭৪৭ ৬৭.৮৮ (২০০১) ৪৯.৭
সিটি কর্পোরেশন
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২১.০৯ (২০০১) ২৭ ২০৭ ৪৮৫১৩৮ ১২৪৮০ (২০০১) ৬৭.৮
সিটি কর্পোরেশনের বাইরে উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৩১.১৪ (২০০১) ৪১২৭৪ ৯৫১(২০০১) ৬৫.৫
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কান্দিগাঁও ৩৮ ৮৬৭২ ২০৬৫৭ ২০৩৩১ ৪৫.৬
খাদিমনগর ৪০ ১৮৮৪৪ ২৯৩৩৯ ২৭১২১ ৪৭.০
খাদিমপাড়া ৪২ ১১৩০৩ ৪৫৩১৭ ৪৩৪৭৬ ৬১.০
জালালাবাদ ৩৪ ৮৪৭৩ ৮৭৯৭ ৯১৭১ ৩৫.৬
টুকের বাজার ৯০ ৮৩৪২ ২৮১৫৮ ২৫৬৭৪ ৫৭.৬
টুলটিকর ৯৫ ২৭২৭ ১৪৪২৯ ১২৪৭৪ ৫৬.৩
মোগলগাঁও ৫৫ ৭৫৬৮ ১৫১৯২ ১৫৩৫৮ ৪৩.৫
হাটখোলা ৩২ ৮৬৪৯ ১৪১৩৪ ১৪৩৩৭ ৪১.৫

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ শাহজালাল (রহ) মাযারের শিলালিপি, গড়দোয়ার নবাবী মসজিদ, বিশ্বম্ভর আখড়ায় রক্ষিত কষ্টি পাথরের মূর্তি, শাহী ঈদগাহের শিলালিপি, ক্রীন ব্রিজ।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল সিটি হাসপাতাল এলাকায় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে বেশসংখ্যক পাকসেনা ও মুক্তিযোদ্ধা নিহত হন। ৫ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধারা সিলেট বিমানবন্দরে বোমা হামলা চালায়। এতে বিমানবন্দরের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় সকল পাকসেনা বিমানবন্দর এলাকায় চলে যায়। এই সুযোগে মুক্তিযোদ্ধারা সিলেট কারাগার থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারন মানুষসহ প্রায় ২৫০০ জনকে মুক্ত করে আনেন। ১৯ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধারা পুনরায় বিমানবন্দর আক্রমণ করেন। লালটিলা, উরিয়াটিলা, মালনীছড়া চা বাগান, টুলটিকর, জিন্দাবাজার পুলিশ লাইন, জালালাবাদ প্রভৃতি স্থানে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘর্ষে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষ হতাহত হয়। ১৬ ডিসেম্বর সিলেট শহর শত্রুমুক্ত হয়। উপজেলার ৬টি স্থানে (সিলেট ক্যাডেট কলেজ, সিভিল সার্জন বাংলো, লালটিলা, উড়িয়াটিলা, খাদিমনগর, শেখ বুরহান উদ্দিন রোড) বধ্যভূমি এবং জিন্দাবাজার পুলিশ লাইন, মালনীছড়া চা বাগান, ক্যাডেট কলেজ ও টুলটিকরে ৬টি গণকবর রয়েছে; বিভিন্ন স্থানে ৬টি স্মৃতিস্তম্ভ, সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এবং জালালাবাদ সেনানিবাসে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিভাস্কর্য স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন সিলেট সদর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১০।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ৩৭৫, মন্দির ১২, গির্জা ২, মঠ ২, মাযার ৬। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: শেখ সুনাউল্লাহ মসজিদ, নবাবী মসজিদ, দরগাহ মসজিদ, কুদরত উল্লাহ মসজিদ, শাহপরাণ মসজিদ, আবু তুরাব মসজিদ, হযরত শাহজালালের (রহ) মাযার, হযরত শাহ পরানের (রহ) মাযার, গরম দেওয়ানের মাযার, পাঁচ পীরের মাযার, জিন্দা পীরের মাযার, গোটাটিক শিব মন্দির, কালীঘাটের কালী মন্দির, সতীর পীঠস্থান, জৈনপুরের পীঠস্থান, সৎসঙ্গ বিহার, রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ, প্রেসবিটেরিয়ান চার্চ (১৮৯৭), নয়াসড়কের গির্জা।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৬১.৩%; পুরুষ ৬৪.৬%, মহিলা ৫৭.৬%। বিশ্ববিদ্যালয় ৫, মেডিকেল কলেজ ৪, কারিগরি কলেজ ৩, কলেজ ৭, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৫, কমিউনিটি বিদ্যালয় ৬, কিন্ডার গার্টেন ৮০, মাদ্রাসা ৩০। উলে­খযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৮৭), সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, দারুল আহসান বিশ্ববিদ্যালয়, এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ (১৯৭৫), সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, জালালাবাদ পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, এম সি কলেজ (১৮৮৯), সিলেট সংস্কৃত কলেজ (১৯০২), সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৩৬), রাজা জিমি হাইস্কুল (১৮৮৬), সরকারি অগ্রগামী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯০৩), মডেল হাইস্কুল (১৯৩২), সরকারি মদন মোহন কলেজ (১৯৪০), দি এইডেড হাইস্কুল (১৯৪২), কিশোরী মোহন বালিকা বিদ্যালয় (১৯৪৪), হযরত শাহজালাল (রহ) উচ্চ বিদ্যালয়, হযরত শাহ পরান (রহ) উচ্চ বিদ্যালয়, সিলেট সরকারি আলীয়া মাদ্রাসা (১৯৪৮)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: সিলেটের ডাক, সবুজ সিলেট, সিলেট সংলাপ, মানচিত্র, যুগভেরী, সিলেট বাণী, আলোকিত সিলেট, জালালাবাদ; অবলুপ্ত: শ্রীহট্ট প্রকাশ (১৮৭৫), পরিদর্শক (১৮৭৫-৮০), শ্রীহট্টমিহির (১৮৮৯), শ্রীহট্টবাসী (১৮৯৫), জনশক্তি (১৯২০), যুগবাণী (১৯২৫), জ্ঞানান্বেষন (১৯৩১), জাগরণ (১৯৩৮), আল জালাল (১৯৪১), সিলেট সমাচার (১৯৭৭), সিলেট কণ্ঠ (১৯৮১), সাপ্তাহিক জালালাবাদ (১৯৮২), দৈনিক জালালাবাদী (১৯৮৪), দৈনিক সুদিন (১৯৯২), আজকের সিলেট (১৯৯২), আজকের বিশ্ব সংবাদ (১৯৯২)।

দর্শনীয় স্থান হযরত শাহজালালের (রহ) মাযার, হযরত শাহ পরানের (রহ) মাযার, গৌর গোবিন্দের ফোর্ট, মালনী ছড়া চা বাগান, এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ওসমানী যাদুঘর, মিউজিয়াম অব রাজার্স, পর্যটন মোটেল।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, জাদুঘর ৩, সিনেমা হল ৮, অডিটোরিয়াম ৫, নাট্যমঞ্চ ৩, নাট্যদল ১০, মহিলা সংগঠন ৩, সাহিত্য সংগঠন ৬, খেলার মাঠ ৪।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ১৬.৪৪%, অকৃষি শ্রমিক ৫.৩১%, শিল্প ১.৬১%, ব্যবসা ২৪.৪৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৫.৯১%, চাকরি ১৭.১৪%, নির্মাণ ৩.০০%, ধর্মীয় সেবা ০.৩২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৬.৩৮% এবং অন্যান্য ১৯.৪৪%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৩৬.৩০%, ভূমিহীন ৬৩.৭০%।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, চা, আলু, শাকসবজি, পিঁয়াজ, রসুন, পান।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  তিল, তিসি, সরিষা, কাউন, গোল মরিচ।

প্রধান ফল-ফলাদি আনারস, ডালিম, কমলালেবু, কতবেল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৫০, গবাদিপশু ৫, হাঁস-মুরগি ১০০, হ্যাচারি ১৫।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৯৮ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১২ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪১৭ কিমি; রেলপথ ৪৯.০৭ কিমি। কালভার্ট ৭৫০, ব্রিজ ১৫; বিমানবন্দর ১।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা রাইস মিল, ফ্লাওয়ার মিল, আইস মিল, টেক্সটাইল মিল, বিড়ি ফ্যাক্টরি।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, দারুশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৩২, মেলা ৬। কাজীর বাজার, জালালাবাদ বাজার, হাটখোলা বাজার, কালিঘাট বাজার, লাল বাজার, রিকাবী বাজার, মিরা বাজার, জিন্দাবাজার, শিবগঞ্জ বাজার, শাহপরান বাজার, খাদিমনগর বাজার, সালুটিকর বাজার এবং ইসলামপুর মনিপুরী রাজবাড়ির মেলা, রথযাত্রার মেলা, চৈত্র মেলা, চালিবন্দর চড়ক মেলা ও মহররমের মেলা (শাহী ঈদগাহ) উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  প্রাকৃতিক গ্যাস, চা, পান, কমলালেবু, শুঁটকি মাছ, মনিপুরী তাঁত সামগ্রী, বাঁশ ও বেতের তৈরি আসবাবপত্র, শীতলপাটি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৯৯.৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

প্রাকৃতিক সম্পদ প্রাকৃতিক গ্যাস।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৪৬.০%, ট্যাপ ১.৭% এবং অন্যান্য ৫২.৩%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৪৯.২% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৮.৭% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২.১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ৫, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৭,  কমিউনিটি ক্লিনিক ২০, ক্লিনিক ২২, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫।

এনজিও ব্র্যাক, কেয়ার, আশা, সেভ দ্য চিলড্রেন।  [মো. ফররখ আহমদ চৌধুরী]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সিলেট সদর উপজেলার মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০১০।