সদরপুর উপজেলা

সদরপুর উপজেলা (ফরিদপুর জেলা)  আয়তন: ২৯০.২০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°২৪´ থেকে ২৩°৩৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৫৭´ থেকে ৯০°১১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে চরভদ্রাসন ও দোহার উপজেলা, দক্ষিণে ভাঙ্গা উপজেলা, পূর্বে শিবচর ও শ্রীনগর উপজেলা, পশ্চিমে নগরকান্দা উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৮৮৭৫৭; পুরুষ ৯৪৯৮২, মহিলা ৯৩৭৭৫। মুসলিম ১৭৭৭৭৯, হিন্দু ১০৯৪৬, বৌদ্ধ ৯, খ্রিস্টান ১১ এবং অন্যান্য ১২।

জলাশয় প্রধান নদী: পদ্মা, আড়িয়াল খাঁ ও ভুবনেশ্বর।

প্রশাসন সদরপুর থানা গঠিত হয় ১৮৬৩ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৮৮ ২৯৬ ৫৫৪৮ ১৮৩২০৯ ৬৫০ ৫৪.৫ ৩৫.৮
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৩.০১ ৫৫৪৮ ১৮৪৩ ৫৪.৫
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আকোটের চর ৯ ৮০৯২ ১০৫৮৬ ১১৪২৬ ৩৪.৫৫
কৃষ্ণপুর ৬৬ ৭০১১ ১৬৪৯১ ১৫৭৮৫ ৩৮.০১
চর নাসিরপুর ৪৭ ৬৭৯১ ৭৬১৫ ৬৪৪২ ৩৪.৬৯
চর বিষ্ণুপুর ২৮ ৮৫২৫ ১০৩২৫ ১১১৩৫ ৩৩.৭২
চর মোনাই ৩৮ ১০৫৮৩ ৬৮১৮ ৬৬৫৬ ৩৪.৩৬
দেউখালী ৫৭ ৬৮২৮ ১১৩৮৬ ১১২৯৯ ৩৫.৫১
নারিকেলবাড়ীয়া ৭৬ ১১৪৮২ ৭৮৯৮ ৭৫২২ ১৭.৯৩
ভাষাণচর ১৯ ১০৯৩৮ ১১৪৮২ ১১৫৩৩ ৩৩.৪৫
সদরপুর ৮৫ ৪০২৭ ১২৩৮১ ১১৯৭৭ ৫৩.৬৫

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ বাইশরশি জমিদার বাড়ি (রায় বাহাদুর রাজেন্দ্র রায়চৌধুরী), কৃষ্ণপুর কালীমন্দির, বাইশরশি মঠ (সমাধিস্থল), বাইশরশি শিবসুন্দরী একাডেমী।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ২৯৪, মন্দির ১৪, খানকাহ ৩।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষার হার  গড় ৩৬.৩%; পুরুষ ৪০.৩%, মহিলা ৩২.৪%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৭, মাদ্রাসা ৮। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কৃষ্ণপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১০), বাইশরশি শিবসুন্দরী একাডেমি (১৯১৪)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২, সিনেমা হল ১, সাহিত্য সংগঠন ৩, মহিলা সংগঠন ২, ক্লাব ৩৮, খেলার মাঠ ৮।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৭.৭৯%, অকৃষি শ্রমিক ২.৩৩%, শিল্প ০.৭৪%, ব্যবসা ১১.৪১%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৪২%, চাকরি ৫.৬৮%, নির্মাণ ০.৭০%, ধর্মীয় সেবা ০.১১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৩.২৫% এবং অন্যান্য ৫.৫৭%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৬.৩৩%, ভূমিহীন ৩৩.৬৭%। শহরে ৫৪.০২% এবং গ্রামে ৬৬.৬৯% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, তৈলবীজ, ডাল, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  কুসুম ফুল, কাউন, কালিজিরা, তামাক, চীনা, শনপাট।

প্রধান ফল-ফলাদি তাল, জাম, কাঁঠাল, নারিকেল, সফেদা, খেজুর।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৮০, হাঁস-মুরগি ৪০, হ্যাচারি ৪।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১১০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৫৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪১০ কিমি; নৌপথ ৬০ নটিক্যাল মাইল।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন ঘোড়ার গাড়ি, পাল্কি।

শিল্প ও কলকারখানা ধানকল, আটাকল, বরফকল, তেলকল, স্পিনিং মিলস, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, ঘানিশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ, কাঠের কাজ, সেলাই কাজ, জাল বুনন।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৬, মেলা ৩। কৃষ্ণপুর হাট, পিয়াজখালী হাট, সাড়ে সাতরশি হাট ও চৌদ্দরশি হাট এবং দেউখালী মেলা ও আটরশির মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  পাট, তালের গুড়, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লীবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১১.৮১% (শহরে ৩৭.৮৪% এবং গ্রামে ১১.০৫%) পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৪.৮৯%, ট্যাপ ০.১৬%, পুকুর ১.১৬% এবং অন্যান্য ৩.৭৯%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৩৯.৭৯% (শহরে ৭৬.৯২% এবং গ্রামে ৩৮.৬৯%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫১.৯১% (শহরে ১২.২৬% এবং গ্রামে ৫৩.০৮%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ৮.৩১% (শহরে ১০.৮২% এবং গ্রামে ৮.২৩%) পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, হাসপাতাল ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৫, ক্লিনিক ২।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা, ভিডা।  [মাসুদ রেজা]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সদরপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।