ধর্মবংশ মহাস্থবির, অগ্গমহাপন্ডিত: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
'''ধর্মবংশ মহাস্থবির'''''', ''''''অগ্গমহাপন্ডিত''' (১৮৭২-১৯৩৯)  ধর্মপ্রচারক ও শিক্ষাবিদ। তাঁর পিতৃদত্ত নাম প্রাণকৃষ্ণ বড়ুয়া; ভিক্ষুব্রত গ্রহণের পর তাঁর নতুন নামকরণ করা হয় ‘ধর্মবংশ’। ১৮৭২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর কলকাতায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস  [[১০১৬৭৪|চট্টগ্রাম]] জেলার  [[১০৪২১৯|বোয়ালখালী]] উপজেলার বেঙ্গুরা গ্রামে। ধর্মবংশ কলকাতার বউবাজার মিশনারি বিদ্যালয় থকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন। পরে আঠারো বছর বয়সে তিনি বউবাজারের নবীন বিহারে শ্রামণ্যধর্মে দীক্ষিত হন এবং  [[১০৪২৩৬|বৌদ্ধধর্ম]] ও দর্শনে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য ব্রহ্মদেশ গমন করেন। সেখানে মৌলমেনস্থ বৈজয়ন্তী বিহারের অধ্যক্ষ সাগরা মহাস্থবিরের নিকট তিনি  [[১০০৬৬২|উপসম্পদা]] গ্রহণ করেন।
'''ধর্মবংশ মহাস্থবির, অগ্গমহাপন্ডিত''' (১৮৭২-১৯৩৯)  ধর্মপ্রচারক ও শিক্ষাবিদ। তাঁর পিতৃদত্ত নাম প্রাণকৃষ্ণ বড়ুয়া; ভিক্ষুব্রত গ্রহণের পর তাঁর নতুন নামকরণ করা হয় ‘ধর্মবংশ’। ১৮৭২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর কলকাতায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস  [[চট্টগ্রাম জেলা|চট্টগ্রাম]] জেলার  [[বোয়ালখালী উপজেলা|বোয়ালখালী]] উপজেলার বেঙ্গুরা গ্রামে। ধর্মবংশ কলকাতার বউবাজার মিশনারি বিদ্যালয় থকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন। পরে আঠারো বছর বয়সে তিনি বউবাজারের নবীন বিহারে শ্রামণ্যধর্মে দীক্ষিত হন এবং  [[বৌদ্ধধর্ম|বৌদ্ধধর্ম]] ও দর্শনে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য ব্রহ্মদেশ গমন করেন। সেখানে মৌলমেনস্থ বৈজয়ন্তী বিহারের অধ্যক্ষ সাগরা মহাস্থবিরের নিকট তিনি  [[উপসম্পদা|উপসম্পদা]] গ্রহণ করেন।


বার্মায় অধ্যয়নশেষে আরও উচ্চতর শিক্ষালাভের জন্য ধর্মবংশ শ্রীলঙ্কা গমন করেন। ১৯০৪ সালে দেশে ফিরে তিনি চট্টগ্রামে একটি বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। একই সঙ্গে তিনি চট্টগ্রাম সরকারি কলেজিয়েট স্কুলে  [[১০৩১৯২|পালি]] শিক্ষকেরও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম সরকারি মহাবিদ্যালয়ে পালি বিভাগ খোলা হলে তিনি তার প্রথম প্রভাষক নিযুক্ত হন। ষোলো বছর এ পদে অধিষ্ঠিত থেকে ধর্মবংশ চট্টগ্রামে পালি শিক্ষার পথ প্রশস্ত করেন।
বার্মায় অধ্যয়নশেষে আরও উচ্চতর শিক্ষালাভের জন্য ধর্মবংশ শ্রীলঙ্কা গমন করেন। ১৯০৪ সালে দেশে ফিরে তিনি চট্টগ্রামে একটি বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। একই সঙ্গে তিনি চট্টগ্রাম সরকারি কলেজিয়েট স্কুলে  [[পালি|পালি]] শিক্ষকেরও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম সরকারি মহাবিদ্যালয়ে পালি বিভাগ খোলা হলে তিনি তার প্রথম প্রভাষক নিযুক্ত হন। ষোলো বছর এ পদে অধিষ্ঠিত থেকে ধর্মবংশ চট্টগ্রামে পালি শিক্ষার পথ প্রশস্ত করেন।


১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে ধর্মবংশ ত্রিপুরারাজ বীরেন্দ্রকিশোর ও অন্যদের আর্থিক সহযোগিতায় বিহার উন্নয়নের কাজে হাত দেন। চট্টগ্রামে বিভিন্ন সময়ে বুদ্ধদেব ও বৌদ্ধ দেবদেবীদের যেসব মূর্তি আবিষ্কৃত হয়েছে, তিনি সেগুলির কিছু কিছু বৌদ্ধ বিহার ও মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন। এসব কাজে তাঁর নেতৃত্ব ও দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ বার্মা সরকার তাঁকে ‘অগ্গমহাপন্ডিত’ (১৯২৭) উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৩৯ সালের ৩ ডিসেম্বর সাতবাড়িয়া বৌদ্ধবিহারে তাঁর মৃত্যু হয়।  [ভিক্ষু সুনীথানন্দ]
১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে ধর্মবংশ ত্রিপুরারাজ বীরেন্দ্রকিশোর ও অন্যদের আর্থিক সহযোগিতায় বিহার উন্নয়নের কাজে হাত দেন। চট্টগ্রামে বিভিন্ন সময়ে বুদ্ধদেব ও বৌদ্ধ দেবদেবীদের যেসব মূর্তি আবিষ্কৃত হয়েছে, তিনি সেগুলির কিছু কিছু বৌদ্ধ বিহার ও মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন। এসব কাজে তাঁর নেতৃত্ব ও দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ বার্মা সরকার তাঁকে ‘অগ্গমহাপন্ডিত’ (১৯২৭) উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৩৯ সালের ৩ ডিসেম্বর সাতবাড়িয়া বৌদ্ধবিহারে তাঁর মৃত্যু হয়।  [ভিক্ষু সুনীথানন্দ]
<!-- imported from file: ধর্মবংশ মহাস্থবির, অগ্গমহাপন্ডিত.html-->
[[en:Dharmabangsha Mahasthavir, Aggamahapandit]]


[[en:Dharmabangsha Mahasthavir, Aggamahapandit]]
[[en:Dharmabangsha Mahasthavir, Aggamahapandit]]

০৯:৪২, ২০ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

ধর্মবংশ মহাস্থবির, অগ্গমহাপন্ডিত (১৮৭২-১৯৩৯)  ধর্মপ্রচারক ও শিক্ষাবিদ। তাঁর পিতৃদত্ত নাম প্রাণকৃষ্ণ বড়ুয়া; ভিক্ষুব্রত গ্রহণের পর তাঁর নতুন নামকরণ করা হয় ‘ধর্মবংশ’। ১৮৭২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর কলকাতায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস  চট্টগ্রাম জেলার  বোয়ালখালী উপজেলার বেঙ্গুরা গ্রামে। ধর্মবংশ কলকাতার বউবাজার মিশনারি বিদ্যালয় থকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন। পরে আঠারো বছর বয়সে তিনি বউবাজারের নবীন বিহারে শ্রামণ্যধর্মে দীক্ষিত হন এবং  বৌদ্ধধর্ম ও দর্শনে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য ব্রহ্মদেশ গমন করেন। সেখানে মৌলমেনস্থ বৈজয়ন্তী বিহারের অধ্যক্ষ সাগরা মহাস্থবিরের নিকট তিনি  উপসম্পদা গ্রহণ করেন।

বার্মায় অধ্যয়নশেষে আরও উচ্চতর শিক্ষালাভের জন্য ধর্মবংশ শ্রীলঙ্কা গমন করেন। ১৯০৪ সালে দেশে ফিরে তিনি চট্টগ্রামে একটি বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। একই সঙ্গে তিনি চট্টগ্রাম সরকারি কলেজিয়েট স্কুলে  পালি শিক্ষকেরও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম সরকারি মহাবিদ্যালয়ে পালি বিভাগ খোলা হলে তিনি তার প্রথম প্রভাষক নিযুক্ত হন। ষোলো বছর এ পদে অধিষ্ঠিত থেকে ধর্মবংশ চট্টগ্রামে পালি শিক্ষার পথ প্রশস্ত করেন।

১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে ধর্মবংশ ত্রিপুরারাজ বীরেন্দ্রকিশোর ও অন্যদের আর্থিক সহযোগিতায় বিহার উন্নয়নের কাজে হাত দেন। চট্টগ্রামে বিভিন্ন সময়ে বুদ্ধদেব ও বৌদ্ধ দেবদেবীদের যেসব মূর্তি আবিষ্কৃত হয়েছে, তিনি সেগুলির কিছু কিছু বৌদ্ধ বিহার ও মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন। এসব কাজে তাঁর নেতৃত্ব ও দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ বার্মা সরকার তাঁকে ‘অগ্গমহাপন্ডিত’ (১৯২৭) উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৩৯ সালের ৩ ডিসেম্বর সাতবাড়িয়া বৌদ্ধবিহারে তাঁর মৃত্যু হয়।  [ভিক্ষু সুনীথানন্দ]