চুয়াডাঙ্গা জেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র'''))
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''চুয়াডাঙ্গা জেলা''' ([[খুলনা বিভাগ|খুলনা বিভাগ]])  আয়তন: ১১৭৭.৪০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°২২´ থেকে ২৩°৫০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৩৯´ থেকে ৮৯°০০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর জেলা, পূর্ব এবং দক্ষিণে ঝিনাইদহ জেলা, পশ্চিমে মেহেরপুর জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য।
'''চুয়াডাঙ্গা জেলা''' ([[খুলনা বিভাগ|খুলনা বিভাগ]])  আয়তন: ১১৭৭.৪০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°২২´ থেকে ২৩°৫০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৩৯´ থেকে ৮৯°০০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর জেলা, পূর্ব এবং দক্ষিণে ঝিনাইদহ জেলা, পশ্চিমে মেহেরপুর জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য।


''জনসংখ্যা'' ১০০৭১৩০; পুরুষ ৫১৮১৮৮, মহিলা ৪৮৮৯৪২। মুসলিম ৯৭৯৬১২, হিন্দু ২৫৫০০, খ্রিস্টান ৫১, বৌদ্ধ ১৭০১ এবং অন্যান্য ২৬৬।
''জনসংখ্যা'' ১০০৭১৩০; পুরুষ ৫১৮১৮৮, মহিলা ৪৮৮৯৪২। মুসলিম ৯৭৯৬১২, হিন্দু ২৫৫০০, খ্রিস্টান ৫১, বৌদ্ধ ১৭০১ এবং অন্যান্য ২৬৬।


''জলাশয়'' প্রধান নদী: মাথাভাঙ্গা, ভৈরব, চিত্রা, নবগঙ্গা, কুমার। ভান্ডারদহ বিল, উজলপুর বিল, মাহেশ্বরী বিল, নেহালপুর বিল, ঝাঝরি বিল, নুরুল্লাপুর বিল এবং বেগমপুর ও চাঁদপুর বাওড় উল্লেখযোগ্য।
''জলাশয়'' প্রধান নদী: মাথাভাঙ্গা, ভৈরব, চিত্রা, নবগঙ্গা, কুমার। ভান্ডারদহ বিল, উজলপুর বিল, মাহেশ্বরী বিল, নেহালপুর বিল, ঝাঝরি বিল, নুরুল্লাপুর বিল এবং বেগমপুর ও চাঁদপুর বাওড় উল্লেখযোগ্য।


''প্রশাসন'' ভারত বিভাগের পূর্বে চুয়াডাঙ্গা মহকুমা নদীয়া জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের সময় কৃষ্ণগঞ্জ থানা বাদ দিয়ে সমগ্র চুয়াডাঙ্গা মহকুমা পূর্ব বাংলার কুষ্টিয়া জেলার অধীন হয়। ১৯৮৪ সালে চুয়াডাঙ্গা জেলায় উন্নীত হয়।
''প্রশাসন'' ভারত বিভাগের পূর্বে চুয়াডাঙ্গা মহকুমা নদীয়া জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের সময় কৃষ্ণগঞ্জ থানা বাদ দিয়ে সমগ্র চুয়াডাঙ্গা মহকুমা পূর্ব বাংলার কুষ্টিয়া জেলার অধীন হয়। ১৯৮৪ সালে চুয়াডাঙ্গা জেলায় উন্নীত হয়।


{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
! colspan= "10" | জেলা
| colspan= "10" | জেলা
|-
|-
| rowspan= "2" | আয়তন(বর্গ কিমি)  || rowspan= "2" | উপজেলা  || rowspan= "2" | পৌরসভা  || rowspan= "2" | ইউনিয়ন  || rowspan= "2" | মৌজা  || rowspan= "2" | গ্রাম  || colspan= "2" | জনসংখ্যা || rowspan= "2" | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি)  || rowspan= "2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan= "2" | আয়তন (বর্গ কিমি)  || rowspan= "2" | উপজেলা  || rowspan= "2" | পৌরসভা  || rowspan= "2" | ইউনিয়ন  || rowspan= "2" | মৌজা  || rowspan= "2" | গ্রাম  || colspan= "2" | জনসংখ্যা || rowspan= "2" | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || rowspan= "2" | শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| শহর  || গ্রাম  
| শহর  || গ্রাম  
|-  
|-  
| ১১৭৭.৪০  || ৪  || ৪  || ৩১  || ৩৬৪  || ৫১৪  || ২৭৫৪৮৪  || ৭৩১৬৪৬  || ৮৫৫  || ৪০.৮৮
| ১১৭৭.৪০  || ৪  || ৪  || ৩১  || ৩৬৪  || ৫১৪  || ২৭৫৪৮৪  || ৭৩১৬৪৬  || ৮৫৫  || ৪০.৮৮
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-  
|-  
| জেলার অন্যান্য তথ্য
| colspan= "5" | জেলার অন্যান্য তথ্য
 
|-  
|-  
| উপজেলা নাম  || আয়তন(বর্গ কিমি)  || পৌরসভা  || ইউনিয়ন  || মৌজা  || গ্রাম  || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| উপজেলা নাম  || আয়তন (বর্গ কিমি)  || পৌরসভা  || ইউনিয়ন  || মৌজা  || গ্রাম  || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
 
|-  
|-  
| আলমডাঙ্গা  || ৩৮০.৩৮  || ১  || ১৩  || ১২৬  || ২০৩  || ৩০৮৯১৭  || ৮১২  || ৩৯.৯৬
| আলমডাঙ্গা  || ৩৮০.৩৮  || ১  || ১৩  || ১২৬  || ২০৩  || ৩০৮৯১৭  || ৮১২  || ৩৯.৯৬
|-  
|-  
| চুয়াডাঙ্গা সদর  || ২৮৯.৫৯  || ১  || ৭  || ৯০  || ১২৯  || ২৭৮৭২৬  || ৯৬২  || ৪০.০৮
| চুয়াডাঙ্গা সদর  || ২৮৯.৫৯  || ১  || ৭  || ৯০  || ১২৯  || ২৭৮৭২৬  || ৯৬২  || ৪০.০৮
|-  
|-  
| জীবন নগর  || ১৯৯.৩২  || ১  || ৪  || ৭০  || ৮০  || ১৬৪২০৮  || ৮২৪  || ৪২.২৮
| জীবন নগর  || ১৯৯.৩২  || ১  || ৪  || ৭০  || ৮০  || ১৬৪২০৮  || ৮২৪  || ৪২.২৮
|-  
|-  
| দামুড়হুদা  || ৩০৮.১১  || ১  || ৭  || ৭৮  || ১০২  || ২৫৫২৭৯  || ৮২৯  || ৪২.০০
| দামুড়হুদা  || ৩০৮.১১  || ১  || ৭  || ৭৮  || ১০২  || ২৫৫২৭৯  || ৮২৯  || ৪২.০০
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' ঘোলদাড়ি জামে মসজিদ (আলমডাঙ্গা), চুয়াডাঙ্গা বড় মসজিদ, তিনগম্বুজবিশিষ্ট ধোপাখালী মসজিদ, ঠাকুরপুর মসজিদ (১৬৯৮), শিবনগর চার পীরের মাজার ও মসজিদ, পারেশ শাহের মাজার, জামজামি মসজিদ, তিয়রবিলা মসজিদ, সোনাতনপুর মন্দির, জগন্নাথপুর মন্দির, ঘোলদাড়ি নীলকুঠি, কার্পাসডাঙ্গা নীলকুঠি।
[[Image:ChuadangaDistrict.jpg|thumb|400px|right]]


''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি'' ব্রিটিশ শাসনের সূচনা থেকেই এ জেলার অধিবাসীরা বিভিন্ন বিদ্রোহ ও আন্দোলনে শামিল হয়েছে। ওহাবী আন্দোলন (১৮৩১), ফরায়েজী আন্দোলন (১৮৩৮-১৮৪৭), সিপাহী-আন্দোলন (১৮৫৭), নীলবিদ্রোহ (১৮৫৯-১৮৬১), স্বদেশীআন্দোলন (১৯০৬), খেলাফতআন্দোলন (১৯২০), অসহযোগ আন্দোলন, আইন অমান্য ও সত্যাগ্রহ-আন্দোলন (১৯২০-১৯৪০), আগস্ট-বিপ্লব (১৯৪২), কৃষক-আন্দোলন এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে চুয়াডাঙ্গার মানুষের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নেই চুয়াডাঙ্গায় তীব্র প্রতিরোধ গড়ে ওঠে এবং মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর সাথে শতাধিক ছোটবড় যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় আলমডাঙ্গা উপজেলার বালিয়াপুর ও বেনাগাড়ি গ্রামের সীমান্তে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াইয়ে বেশ কয়েকজন পাকসেনা ও রাজাকার হতাহত হয়। জীবননগর-দর্শনার মাঝামাঝি শিয়ালমারীতে মুক্তিবাহিনীর পেতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে ১০ জন পাকসেনা নিহত হয়। এছাড়া ধোপাখালি সীমান্তে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর লড়াইয়ে ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং ২ জন আহত হন। দামুড়হুদার মদনা গ্রামে পাকবাহিনী অসংখ্য ঘরবাড়ী পুড়িয়ে দেয় এবং বহু নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে।  মুক্তিযুদ্ধের সময় বর্তমান চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ছিল পাকবাহিনীর হেড কোয়ার্টার। সদর হাসপাতালের পিছনে বর্তমান শান্তিপাড়ায় পাকবাহিনী প্রায় তিন শতাধিক নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে। তাছাড়া পাকবাহিনী চুয়াডাঙ্গা ছেড়ে যাবার সময় বোমা বিস্ফোরণে করে মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর নির্মিত ব্রীজের এক অংশ উড়িয়ে দেয়।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' ঘোলদাড়ি জামে মসজিদ (আলমডাঙ্গা), চুয়াডাঙ্গা বড় মসজিদ, তিনগম্বুজবিশিষ্ট ধোপাখালী মসজিদ, ঠাকুরপুর মসজিদ (১৬৯৮), শিবনগর চার পীরের মাজার ও মসজিদ, পারেশ শাহের মাজার, জামজামি মসজিদ, তিয়রবিলা মসজিদ, সোনাতনপুর মন্দির, জগন্নাথপুর মন্দির, ঘোলদাড়ি নীলকুঠি, কার্পাসডাঙ্গা নীলকুঠি।


[[Image:ChuadangaDistrict.jpg|thumb|right|চুয়াডাঙ্গা জেলা]]
''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি''  ব্রিটিশ শাসনের সূচনা থেকেই এ জেলার অধিবাসীরা বিভিন্ন বিদ্রোহ ও আন্দোলনে শামিল হয়েছে। ওহাবী আন্দোলন (১৮৩১), ফরায়েজী আন্দোলন (১৮৩৮-১৮৪৭), সিপাহী-আন্দোলন (১৮৫৭), নীলবিদ্রোহ (১৮৫৯-১৮৬১), স্বদেশীআন্দোলন (১৯০৬), খেলাফতআন্দোলন (১৯২০), অসহযোগ আন্দোলন, আইন অমান্য ও সত্যাগ্রহ-আন্দোলন (১৯২০-১৯৪০), আগস্ট-বিপ্লব (১৯৪২), কৃষক-আন্দোলন এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে চুয়াডাঙ্গার মানুষের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নেই চুয়াডাঙ্গায় তীব্র প্রতিরোধ গড়ে ওঠে এবং মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর সাথে শতাধিক ছোটবড় যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় আলমডাঙ্গা উপজেলার বালিয়াপুর ও বেনাগাড়ি গ্রামের সীমান্তে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াইয়ে বেশ কয়েকজন পাকসেনা ও রাজাকার হতাহত হয়। জীবননগর-দর্শনার মাঝামাঝি শিয়ালমারীতে মুক্তিবাহিনীর পেতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে ১০ জন পাকসেনা নিহত হয়। এছাড়া ধোপাখালি সীমান্তে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর লড়াইয়ে ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং ২ জন আহত হন। দামুড়হুদার মদনা গ্রামে পাকবাহিনী অসংখ্য ঘরবাড়ী পুড়িয়ে দেয় এবং বহু নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে।  মুক্তিযুদ্ধের সময় বর্তমান চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ছিল পাকবাহিনীর হেড কোয়ার্টার। সদর হাসপাতালের পিছনে বর্তমান শান্তিপাড়ায় পাকবাহিনী প্রায় তিন শতাধিক নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে। তাছাড়া পাকবাহিনী চুয়াডাঙ্গা ছেড়ে যাবার সময় বোমা বিস্ফোরণে করে মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর নির্মিত ব্রীজের এক অংশ উড়িয়ে দেয়।


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন''  বধ্যভূমি ১ (চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের পেছনে); গণকবর ৩ (নাটুদহ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পেছনে, জীবননগর সীমান্তসংলগ্ন ধোপাখালি গ্রাম, আলমডাঙ্গা রেলস্টেশনের পার্শ্বে জি.কে খালের তীরবর্তী স্থান); স্মৃতিস্তম্ভ ৩।
''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন''  বধ্যভূমি ১ (চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের পেছনে); গণকবর ৩ (নাটুদহ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পেছনে, জীবননগর সীমান্তসংলগ্ন ধোপাখালি গ্রাম, আলমডাঙ্গা রেলস্টেশনের পার্শ্বে জি.কে খালের তীরবর্তী স্থান); স্মৃতিস্তম্ভ ৩।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪০.০৮%; পুরুষ ৪৩.৩৮%, মহিলা ৩৬.৬১%। কলেজ ১২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১১৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২৫৯, ভোকেশনাল ট্রেনিং কলেজ ০১, নার্সিং ইনস্টিটিউট ০১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ (১৯৬২), দর্শনা সরকারি কলেজ (১৯৬৯), চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজ (১৯৮৩), চুয়াডাঙ্গা আদর্শ মহিলা কলেজ (১৯৮৩), জীবননগর কলেজ (১৯৮৪), ভি. জে. (ভিক্টোরিয়া জুবিলি) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮০), নাটুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯০৬), দামুড়হুদা পাইলট হাইস্কুল (১৯১৩), আলমডাঙ্গা বহুমুখী (পাইলট) মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৪), মেমনগর বি.ডি. মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৬), কুড়লগাছি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৩), হাটবোয়ালিয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৫), কলাবাড়ি-রামনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৬), মুন্সিগঞ্জ একাডেমি (১৯৩৫), কার্পাসডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৪০), ওসমানপুর প্রাগপুর মাদ্রাসা (১৯৪৯), কুনিয়া-চাঁদপুর মাদ্রাসা (১৯৫৮), বদরগঞ্জ আলিয়া মাদ্রাসা (১৯৬৪)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪০.০৮%; পুরুষ ৪৩.৩৮%, মহিলা ৩৬.৬১%। কলেজ ১২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১১৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২৫৯, ভোকেশনাল ট্রেনিং কলেজ ০১, নার্সিং ইনস্টিটিউট ০১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ (১৯৬২), দর্শনা সরকারি কলেজ (১৯৬৯), চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজ (১৯৮৩), চুয়াডাঙ্গা আদর্শ মহিলা কলেজ (১৯৮৩), জীবননগর কলেজ (১৯৮৪), ভি. জে. (ভিক্টোরিয়া জুবিলি) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮০), নাটুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯০৬), দামুড়হুদা পাইলট হাইস্কুল (১৯১৩), আলমডাঙ্গা বহুমুখী (পাইলট) মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৪), মেমনগর বি.ডি. মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৬), কুড়লগাছি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৩), হাটবোয়ালিয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৫), কলাবাড়ি-রামনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৬), মুন্সিগঞ্জ একাডেমি (১৯৩৫), কার্পাসডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৪০), ওসমানপুর প্রাগপুর মাদ্রাসা (১৯৪৯), কুনিয়া-চাঁদপুর মাদ্রাসা (১৯৫৮), বদরগঞ্জ আলিয়া মাদ্রাসা (১৯৬৪)।


''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৬৫.১৪%, অকৃষি শ্রমিক ২.৯৯%, শিল্প ১.৪০%,  ব্যবসা ১৪.২৪%, পরিবহন ও যোগাযোগ ৩.৪৬%, চাকরি ৫.৫৭%, নির্মাণ ১.২৮%, ধর্মীয় সেবা ০.১৫%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩৯% এবং অন্যান্য ৫.৩৮%।
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৬৫.১৪%, অকৃষি শ্রমিক ২.৯৯%, শিল্প ১.৪০%,  ব্যবসা ১৪.২৪%, পরিবহন ও যোগাযোগ ৩.৪৬%, চাকরি ৫.৫৭%, নির্মাণ ১.২৮%, ধর্মীয় সেবা ০.১৫%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩৯% এবং অন্যান্য ৫.৩৮%।


''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' দৈনিক: মাথাভাঙ্গা, প্রথম রাজধানী; সাপ্তাহিক: চুয়াডাঙ্গা দর্পণ, চুয়াডাঙ্গা সমাচার, দিনবদলের কাগজ।
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' দৈনিক: মাথাভাঙ্গা, প্রথম রাজধানী; সাপ্তাহিক: চুয়াডাঙ্গা দর্পণ, চুয়াডাঙ্গা সমাচার, দিনবদলের কাগজ।


''লোকসংস্কৃতি'' মুর্শিদী, মারফতী ও বাউল গানচর্চা ছাড়াও যাত্রা, ভাব গান, ভাসান গান, কবিগান, মানিক পীরের গান, কৃষকের মেঠো গান, গাজীর গীত উল্লেখযোগ্য।  [রাজীব আহমেদ]
''লোকসংস্কৃতি'' মুর্শিদী, মারফতী ও বাউল গানচর্চা ছাড়াও যাত্রা, ভাব গান, ভাসান গান, কবিগান, মানিক পীরের গান, কৃষকের মেঠো গান, গাজীর গীত উল্লেখযোগ্য।  [রাজীব আহমেদ]


''আরও দেখুন''  সংশ্লিষ্ট উপজেলা।
''আরও দেখুন''  সংশ্লিষ্ট উপজেলা।


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১,বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; চুয়াডাঙ্গা জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; চুয়াডাঙ্গা জেলার উপজেলা সমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১,বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; চুয়াডাঙ্গা জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; চুয়াডাঙ্গা জেলার উপজেলা সমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Chuadanga District]]
[[en:Chuadanga District]]

০৯:২৯, ১৭ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

চুয়াডাঙ্গা জেলা (খুলনা বিভাগ)  আয়তন: ১১৭৭.৪০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°২২´ থেকে ২৩°৫০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৩৯´ থেকে ৮৯°০০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর জেলা, পূর্ব এবং দক্ষিণে ঝিনাইদহ জেলা, পশ্চিমে মেহেরপুর জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য।

জনসংখ্যা ১০০৭১৩০; পুরুষ ৫১৮১৮৮, মহিলা ৪৮৮৯৪২। মুসলিম ৯৭৯৬১২, হিন্দু ২৫৫০০, খ্রিস্টান ৫১, বৌদ্ধ ১৭০১ এবং অন্যান্য ২৬৬।

জলাশয় প্রধান নদী: মাথাভাঙ্গা, ভৈরব, চিত্রা, নবগঙ্গা, কুমার। ভান্ডারদহ বিল, উজলপুর বিল, মাহেশ্বরী বিল, নেহালপুর বিল, ঝাঝরি বিল, নুরুল্লাপুর বিল এবং বেগমপুর ও চাঁদপুর বাওড় উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন ভারত বিভাগের পূর্বে চুয়াডাঙ্গা মহকুমা নদীয়া জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের সময় কৃষ্ণগঞ্জ থানা বাদ দিয়ে সমগ্র চুয়াডাঙ্গা মহকুমা পূর্ব বাংলার কুষ্টিয়া জেলার অধীন হয়। ১৯৮৪ সালে চুয়াডাঙ্গা জেলায় উন্নীত হয়।

জেলা
আয়তন (বর্গ কিমি) উপজেলা পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম
১১৭৭.৪০ ৩১ ৩৬৪ ৫১৪ ২৭৫৪৮৪ ৭৩১৬৪৬ ৮৫৫ ৪০.৮৮
জেলার অন্যান্য তথ্য
উপজেলা নাম আয়তন (বর্গ কিমি) পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
আলমডাঙ্গা ৩৮০.৩৮ ১৩ ১২৬ ২০৩ ৩০৮৯১৭ ৮১২ ৩৯.৯৬
চুয়াডাঙ্গা সদর ২৮৯.৫৯ ৯০ ১২৯ ২৭৮৭২৬ ৯৬২ ৪০.০৮
জীবন নগর ১৯৯.৩২ ৭০ ৮০ ১৬৪২০৮ ৮২৪ ৪২.২৮
দামুড়হুদা ৩০৮.১১ ৭৮ ১০২ ২৫৫২৭৯ ৮২৯ ৪২.০০

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ ঘোলদাড়ি জামে মসজিদ (আলমডাঙ্গা), চুয়াডাঙ্গা বড় মসজিদ, তিনগম্বুজবিশিষ্ট ধোপাখালী মসজিদ, ঠাকুরপুর মসজিদ (১৬৯৮), শিবনগর চার পীরের মাজার ও মসজিদ, পারেশ শাহের মাজার, জামজামি মসজিদ, তিয়রবিলা মসজিদ, সোনাতনপুর মন্দির, জগন্নাথপুর মন্দির, ঘোলদাড়ি নীলকুঠি, কার্পাসডাঙ্গা নীলকুঠি।

ঐতিহাসিক ঘটনাবলি ব্রিটিশ শাসনের সূচনা থেকেই এ জেলার অধিবাসীরা বিভিন্ন বিদ্রোহ ও আন্দোলনে শামিল হয়েছে। ওহাবী আন্দোলন (১৮৩১), ফরায়েজী আন্দোলন (১৮৩৮-১৮৪৭), সিপাহী-আন্দোলন (১৮৫৭), নীলবিদ্রোহ (১৮৫৯-১৮৬১), স্বদেশীআন্দোলন (১৯০৬), খেলাফতআন্দোলন (১৯২০), অসহযোগ আন্দোলন, আইন অমান্য ও সত্যাগ্রহ-আন্দোলন (১৯২০-১৯৪০), আগস্ট-বিপ্লব (১৯৪২), কৃষক-আন্দোলন এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে চুয়াডাঙ্গার মানুষের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নেই চুয়াডাঙ্গায় তীব্র প্রতিরোধ গড়ে ওঠে এবং মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর সাথে শতাধিক ছোটবড় যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় আলমডাঙ্গা উপজেলার বালিয়াপুর ও বেনাগাড়ি গ্রামের সীমান্তে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াইয়ে বেশ কয়েকজন পাকসেনা ও রাজাকার হতাহত হয়। জীবননগর-দর্শনার মাঝামাঝি শিয়ালমারীতে মুক্তিবাহিনীর পেতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে ১০ জন পাকসেনা নিহত হয়। এছাড়া ধোপাখালি সীমান্তে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর লড়াইয়ে ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং ২ জন আহত হন। দামুড়হুদার মদনা গ্রামে পাকবাহিনী অসংখ্য ঘরবাড়ী পুড়িয়ে দেয় এবং বহু নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে।  মুক্তিযুদ্ধের সময় বর্তমান চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ছিল পাকবাহিনীর হেড কোয়ার্টার। সদর হাসপাতালের পিছনে বর্তমান শান্তিপাড়ায় পাকবাহিনী প্রায় তিন শতাধিক নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে। তাছাড়া পাকবাহিনী চুয়াডাঙ্গা ছেড়ে যাবার সময় বোমা বিস্ফোরণে করে মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর নির্মিত ব্রীজের এক অংশ উড়িয়ে দেয়।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন  বধ্যভূমি ১ (চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের পেছনে); গণকবর ৩ (নাটুদহ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পেছনে, জীবননগর সীমান্তসংলগ্ন ধোপাখালি গ্রাম, আলমডাঙ্গা রেলস্টেশনের পার্শ্বে জি.কে খালের তীরবর্তী স্থান); স্মৃতিস্তম্ভ ৩।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪০.০৮%; পুরুষ ৪৩.৩৮%, মহিলা ৩৬.৬১%। কলেজ ১২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১১৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২৫৯, ভোকেশনাল ট্রেনিং কলেজ ০১, নার্সিং ইনস্টিটিউট ০১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ (১৯৬২), দর্শনা সরকারি কলেজ (১৯৬৯), চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজ (১৯৮৩), চুয়াডাঙ্গা আদর্শ মহিলা কলেজ (১৯৮৩), জীবননগর কলেজ (১৯৮৪), ভি. জে. (ভিক্টোরিয়া জুবিলি) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮০), নাটুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯০৬), দামুড়হুদা পাইলট হাইস্কুল (১৯১৩), আলমডাঙ্গা বহুমুখী (পাইলট) মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৪), মেমনগর বি.ডি. মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৬), কুড়লগাছি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৩), হাটবোয়ালিয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৫), কলাবাড়ি-রামনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৬), মুন্সিগঞ্জ একাডেমি (১৯৩৫), কার্পাসডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৪০), ওসমানপুর প্রাগপুর মাদ্রাসা (১৯৪৯), কুনিয়া-চাঁদপুর মাদ্রাসা (১৯৫৮), বদরগঞ্জ আলিয়া মাদ্রাসা (১৯৬৪)।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৫.১৪%, অকৃষি শ্রমিক ২.৯৯%, শিল্প ১.৪০%,  ব্যবসা ১৪.২৪%, পরিবহন ও যোগাযোগ ৩.৪৬%, চাকরি ৫.৫৭%, নির্মাণ ১.২৮%, ধর্মীয় সেবা ০.১৫%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩৯% এবং অন্যান্য ৫.৩৮%।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: মাথাভাঙ্গা, প্রথম রাজধানী; সাপ্তাহিক: চুয়াডাঙ্গা দর্পণ, চুয়াডাঙ্গা সমাচার, দিনবদলের কাগজ।

লোকসংস্কৃতি মুর্শিদী, মারফতী ও বাউল গানচর্চা ছাড়াও যাত্রা, ভাব গান, ভাসান গান, কবিগান, মানিক পীরের গান, কৃষকের মেঠো গান, গাজীর গীত উল্লেখযোগ্য।  [রাজীব আহমেদ]

আরও দেখুন সংশ্লিষ্ট উপজেলা।

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১,বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; চুয়াডাঙ্গা জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; চুয়াডাঙ্গা জেলার উপজেলা সমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।