গঙ্গাধর সেনরায়: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''গঙ্গাধর সেনরায় '''(১৭৯৮-১৮৮৫)  আয়ুর্বেদ শাস্ত্রজ্ঞ।  [[যশোর জেলা|যশোর]] জেলার মাগুরায় তাঁর জন্ম। পিতা ভবানীপ্রসাদ সেনরায় ছিলেন একজন কবিরাজ। গঙ্গাধর প্রথমে রাজশাহীর প্রসিদ্ধ আয়ুর্বেদজ্ঞ রামকান্ত সেনের নিকট আয়ুর্বেদশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। পরে একুশ বছর বয়সে তিনি  [[মুর্শিদাবাদ|মুর্শিদাবাদ]] গিয়ে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শুরু করেন এবং ক্রমে একজন বিশিষ্ট আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। তিনি কায় ও শল্য উভয় চিকিৎসায়ই পারদর্শী ছিলেন। চিকিৎসায় তিনি এতই সফলতা অর্জন করেন যে, তিনি ‘কলিযুগের ধন্বন্তরি’ নামে প্রসিদ্ধ হন।
'''গঙ্গাধর সেনরায়''' (১৭৯৮-১৮৮৫)  আয়ুর্বেদ শাস্ত্রজ্ঞ।  [[যশোর জেলা|যশোর]] জেলার মাগুরায় তাঁর জন্ম। পিতা ভবানীপ্রসাদ সেনরায় ছিলেন একজন কবিরাজ। গঙ্গাধর প্রথমে রাজশাহীর প্রসিদ্ধ আয়ুর্বেদজ্ঞ রামকান্ত সেনের নিকট আয়ুর্বেদশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। পরে একুশ বছর বয়সে তিনি  [[মুর্শিদাবাদ|মুর্শিদাবাদ]] গিয়ে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শুরু করেন এবং ক্রমে একজন বিশিষ্ট আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। তিনি কায় ও শল্য উভয় চিকিৎসায়ই পারদর্শী ছিলেন। চিকিৎসায় তিনি এতই সফলতা অর্জন করেন যে, তিনি ‘কলিযুগের ধন্বন্তরি’ নামে প্রসিদ্ধ হন।


আয়ুর্বেদশাস্ত্রের ওপর তাঁর বেশ কয়েকটি মূল্যবান গ্রন্থ আছে। বিখ্যাত চরকসংহিতার টীকা জল্পকল্পতরু (১৮৭৯) তাঁর এক অক্ষয় কীর্তি। এতে ষোলো হাজারেরও বেশি শ্লোক আছে। আয়ুর্বেদশাস্ত্রে এটি একটি প্রামাণ্য গ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃত। নাড়ীবিজ্ঞান, প্রয়োগচন্দ্রোদয় প্রভৃতি গ্রন্থেরও তিনি টীকা রচনা করেন।
আয়ুর্বেদশাস্ত্রের ওপর তাঁর বেশ কয়েকটি মূল্যবান গ্রন্থ আছে। বিখ্যাত চরকসংহিতার টীকা জল্পকল্পতরু (১৮৭৯) তাঁর এক অক্ষয় কীর্তি। এতে ষোলো হাজারেরও বেশি শ্লোক আছে। আয়ুর্বেদশাস্ত্রে এটি একটি প্রামাণ্য গ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃত। নাড়ীবিজ্ঞান, প্রয়োগচন্দ্রোদয় প্রভৃতি গ্রন্থেরও তিনি টীকা রচনা করেন।


গঙ্গাধর  [[সংস্কৃত|সংস্কৃত]] ব্যাকরণ, অলঙ্কার ও সাহিত্যেও পারদর্শী ছিলেন। সংস্কৃত ভাষায় রচিত তাঁর কয়েকটি কাব্য ও নাটক রয়েছে। সেসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: কাব্যপ্রভা (অলঙ্কার), লোকালোকপুরুষীয় (মহাকাব্য, ১৭ খন্ডে রচিত), রাজবিজয় (কাব্য), তারাবতীস্বয়ংবর (নাটক), প্রমাদভঞ্জনী (মনুসংহিতার টীকা, ১৮৮২), মুগ্ধবোধমহাবৃত্তি (মুগ্ধবোধ ব্যাকরণের ব্যাখ্যা), তৈত্তিরীয়োপনিষদ্বৃত্তি (১৮৮৪), হর্ষোদয় (চিত্রকাব্য), দুর্গবধ (মহাকাব্য), বেদান্তসর্বস্ব, আরোগ্যস্তোত্র, সংস্কারবাদ, স্মৃতিসেতু, শব্দশক্তিপ্রভা, তত্ত্ববিদ্যাকর (পাতঞ্জলাদি ষড়দর্শনের ব্যাখ্যা) প্রভৃতি। তাঁর গ্রন্থসমূহ প্রকাশের উদ্দেশ্যে ১৯১১ সালে গঙ্গাধর মনীষা নামে একটি পত্রিকা কিছুকাল প্রকাশিত হয়।  [সত্যনারায়ণ চক্রবর্তী]
গঙ্গাধর  [[সংস্কৃত|সংস্কৃত]] ব্যাকরণ, অলঙ্কার ও সাহিত্যেও পারদর্শী ছিলেন। সংস্কৃত ভাষায় রচিত তাঁর কয়েকটি কাব্য ও নাটক রয়েছে। সেসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: কাব্যপ্রভা (অলঙ্কার), লোকালোকপুরুষীয় (মহাকাব্য, ১৭ খন্ডে রচিত), রাজবিজয় (কাব্য), তারাবতীস্বয়ংবর (নাটক), প্রমাদভঞ্জনী (মনুসংহিতার টীকা, ১৮৮২), মুগ্ধবোধমহাবৃত্তি (মুগ্ধবোধ ব্যাকরণের ব্যাখ্যা), তৈত্তিরীয়োপনিষদ্বৃত্তি (১৮৮৪), হর্ষোদয় (চিত্রকাব্য), দুর্গবধ (মহাকাব্য), বেদান্তসর্বস্ব, আরোগ্যস্তোত্র, সংস্কারবাদ, স্মৃতিসেতু, শব্দশক্তিপ্রভা, তত্ত্ববিদ্যাকর (পাতঞ্জলাদি ষড়দর্শনের ব্যাখ্যা) প্রভৃতি। তাঁর গ্রন্থসমূহ প্রকাশের উদ্দেশ্যে ১৯১১ সালে গঙ্গাধর মনীষা নামে একটি পত্রিকা কিছুকাল প্রকাশিত হয়।  [সত্যনারায়ণ চক্রবর্তী]
[[en:Gangadhar Sen Roy]]


[[en:Gangadhar Sen Roy]]
[[en:Gangadhar Sen Roy]]

১০:৫০, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

গঙ্গাধর সেনরায় (১৭৯৮-১৮৮৫)  আয়ুর্বেদ শাস্ত্রজ্ঞ।  যশোর জেলার মাগুরায় তাঁর জন্ম। পিতা ভবানীপ্রসাদ সেনরায় ছিলেন একজন কবিরাজ। গঙ্গাধর প্রথমে রাজশাহীর প্রসিদ্ধ আয়ুর্বেদজ্ঞ রামকান্ত সেনের নিকট আয়ুর্বেদশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। পরে একুশ বছর বয়সে তিনি  মুর্শিদাবাদ গিয়ে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শুরু করেন এবং ক্রমে একজন বিশিষ্ট আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। তিনি কায় ও শল্য উভয় চিকিৎসায়ই পারদর্শী ছিলেন। চিকিৎসায় তিনি এতই সফলতা অর্জন করেন যে, তিনি ‘কলিযুগের ধন্বন্তরি’ নামে প্রসিদ্ধ হন।

আয়ুর্বেদশাস্ত্রের ওপর তাঁর বেশ কয়েকটি মূল্যবান গ্রন্থ আছে। বিখ্যাত চরকসংহিতার টীকা জল্পকল্পতরু (১৮৭৯) তাঁর এক অক্ষয় কীর্তি। এতে ষোলো হাজারেরও বেশি শ্লোক আছে। আয়ুর্বেদশাস্ত্রে এটি একটি প্রামাণ্য গ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃত। নাড়ীবিজ্ঞান, প্রয়োগচন্দ্রোদয় প্রভৃতি গ্রন্থেরও তিনি টীকা রচনা করেন।

গঙ্গাধর  সংস্কৃত ব্যাকরণ, অলঙ্কার ও সাহিত্যেও পারদর্শী ছিলেন। সংস্কৃত ভাষায় রচিত তাঁর কয়েকটি কাব্য ও নাটক রয়েছে। সেসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: কাব্যপ্রভা (অলঙ্কার), লোকালোকপুরুষীয় (মহাকাব্য, ১৭ খন্ডে রচিত), রাজবিজয় (কাব্য), তারাবতীস্বয়ংবর (নাটক), প্রমাদভঞ্জনী (মনুসংহিতার টীকা, ১৮৮২), মুগ্ধবোধমহাবৃত্তি (মুগ্ধবোধ ব্যাকরণের ব্যাখ্যা), তৈত্তিরীয়োপনিষদ্বৃত্তি (১৮৮৪), হর্ষোদয় (চিত্রকাব্য), দুর্গবধ (মহাকাব্য), বেদান্তসর্বস্ব, আরোগ্যস্তোত্র, সংস্কারবাদ, স্মৃতিসেতু, শব্দশক্তিপ্রভা, তত্ত্ববিদ্যাকর (পাতঞ্জলাদি ষড়দর্শনের ব্যাখ্যা) প্রভৃতি। তাঁর গ্রন্থসমূহ প্রকাশের উদ্দেশ্যে ১৯১১ সালে গঙ্গাধর মনীষা নামে একটি পত্রিকা কিছুকাল প্রকাশিত হয়।  [সত্যনারায়ণ চক্রবর্তী]