খন্দকারতলা মসজিদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''খন্দকারতলা মসজিদ'''  বগুড়া জেলার শেরপুরে [[খেরুয়া মসজিদ|খেরুয়া মসজিদ]]এর (১৫৮২) অর্ধ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। বর্তমানে এটি একেবারেই ভগ্নপ্রায় অবস্থায় পতিত। চার কোণের চারটি অষ্টভুজাকার বুরুজই বিলীন হয়ে গেছে। গম্বুজ ছাদটি ভেঙ্গে পড়েছে, পূর্ব দেওয়ালের বাইরের দিকে জায়গায় জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে এবং পশ্চিম দেওয়াল বর্তমানে ধ্বংসসূতপের মধ্যে হারিয়ে গিয়েছে। ঢেউখেলা টিন দ্বারা আচ্ছাদিত মসজিদটি বর্তমানে স্থানীয় অধিবাসীরা শুক্রবার ও প্রতিদিনের নামাযের জন্য ব্যবহার করছে।
'''খন্দকারতলা মসজিদ'''  বগুড়া জেলার শেরপুরে [[খেরুয়া মসজিদ|খেরুয়া মসজিদ]]এর (১৫৮২) অর্ধ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। বর্তমানে এটি একেবারেই ভগ্নপ্রায় অবস্থায় পতিত। চার কোণের চারটি অষ্টভুজাকার বুরুজই বিলীন হয়ে গেছে। গম্বুজ ছাদটি ভেঙ্গে পড়েছে, পূর্ব দেওয়ালের বাইরের দিকে জায়গায় জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে এবং পশ্চিম দেওয়াল বর্তমানে ধ্বংসসূতপের মধ্যে হারিয়ে গিয়েছে। ঢেউখেলা টিন দ্বারা আচ্ছাদিত মসজিদটি বর্তমানে স্থানীয় অধিবাসীরা শুক্রবার ও প্রতিদিনের নামাযের জন্য ব্যবহার করছে।


[[Image:Khandakartal%20Mosque.jpg|thumb|400px|right|ভূমি নকশা, খন্দকারতলা মসজিদ, বগুড়া]]
ইট নির্মিত আয়তাকার মসজিদটি বাইরের দিক দিয়ে ২৩.৭৭ মি × ৯.৩০ মি এবং ভেতরের দিক দিয়ে ২০.১২ মি × ৫.৬৪ মি পরিমাপের। পূর্ব দেওয়ালে তিনটি এবং উত্তর ও দক্ষিণ দেওয়ালে একটি করে খিলানপথ দ্বারা মসজিদ অভ্যন্তরে প্রবেশ করা যায়। পশ্চিম দেওয়ালে তিনটি অর্ধ-গোলাকার মিহরাব কুলুঙ্গি পূর্ব দেওয়ালে স্থাপিত কেন্দ্রীয় খিলানপথগুলির বরাবরে স্থাপিত। আদিতে কেন্দ্রীয় খিলানপথ এবং মিহরাবটিকে বাইরের দিকে অভিক্ষিপ্ত। বাইরের দিকে এর দুপাশে সংযোজিত অলংকৃত ছোট মিনার (minarets) স্থাপন করে এর গুরুত্ব বৃদ্ধি করা হয়েছে।
ইট নির্মিত আয়তাকার মসজিদটি বাইরের দিক দিয়ে ২৩.৭৭ মি × ৯.৩০ মি এবং ভেতরের দিক দিয়ে ২০.১২ মি × ৫.৬৪ মি পরিমাপের। পূর্ব দেওয়ালে তিনটি এবং উত্তর ও দক্ষিণ দেওয়ালে একটি করে খিলানপথ দ্বারা মসজিদ অভ্যন্তরে প্রবেশ করা যায়। পশ্চিম দেওয়ালে তিনটি অর্ধ-গোলাকার মিহরাব কুলুঙ্গি পূর্ব দেওয়ালে স্থাপিত কেন্দ্রীয় খিলানপথগুলির বরাবরে স্থাপিত। আদিতে কেন্দ্রীয় খিলানপথ এবং মিহরাবটিকে বাইরের দিকে অভিক্ষিপ্ত। বাইরের দিকে এর দুপাশে সংযোজিত অলংকৃত ছোট মিনার (minarets) স্থাপন করে এর গুরুত্ব বৃদ্ধি করা হয়েছে।
[[Image:Khandakartal%20Mosque.jpg|thumb|400px|right|ভূমি নকশা, খন্দকারতলা মসজিদ, বগুড়া]]


মসজিদের একক আয়তাকার হল ঘরটি অভ্যন্তরে প্রশস্ত খিলান দ্বারা তিনটি সমান বর্গাকার ‘বে’তে বিভক্ত ছিল। এখনও পূর্ব ও পশ্চিম দেওয়ালে এ খিলানগুলির অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রত্যেকটি বে’র উপরে স্থাপিত গম্বুজগুলি বর্তমানে ভেঙ্গে পড়েছে। বর্তমানে অবলুপ্ত কার্ণিসগুলি বাংলা স্টাইলে বাঁকানো ছিল। মিহরাবগুলিসহ মসজিদ দেওয়ালের বাইরে ও ভেতরে, উভয়দিকই পোড়ামাটির ফলক দ্বারা ব্যাপকভাবে অলংকৃত ছিল, তবে বর্তমানে সমস্ত মসজিদই সিমেন্ট প্লাস্টারে ঢাকা।
মসজিদের একক আয়তাকার হল ঘরটি অভ্যন্তরে প্রশস্ত খিলান দ্বারা তিনটি সমান বর্গাকার ‘বে’তে বিভক্ত ছিল। এখনও পূর্ব ও পশ্চিম দেওয়ালে এ খিলানগুলির অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রত্যেকটি বে’র উপরে স্থাপিত গম্বুজগুলি বর্তমানে ভেঙ্গে পড়েছে। বর্তমানে অবলুপ্ত কার্ণিসগুলি বাংলা স্টাইলে বাঁকানো ছিল। মিহরাবগুলিসহ মসজিদ দেওয়ালের বাইরে ও ভেতরে, উভয়দিকই পোড়ামাটির ফলক দ্বারা ব্যাপকভাবে অলংকৃত ছিল, তবে বর্তমানে সমস্ত মসজিদই সিমেন্ট প্লাস্টারে ঢাকা।

১০:৫০, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

খন্দকারতলা মসজিদ  বগুড়া জেলার শেরপুরে খেরুয়া মসজিদএর (১৫৮২) অর্ধ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। বর্তমানে এটি একেবারেই ভগ্নপ্রায় অবস্থায় পতিত। চার কোণের চারটি অষ্টভুজাকার বুরুজই বিলীন হয়ে গেছে। গম্বুজ ছাদটি ভেঙ্গে পড়েছে, পূর্ব দেওয়ালের বাইরের দিকে জায়গায় জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে এবং পশ্চিম দেওয়াল বর্তমানে ধ্বংসসূতপের মধ্যে হারিয়ে গিয়েছে। ঢেউখেলা টিন দ্বারা আচ্ছাদিত মসজিদটি বর্তমানে স্থানীয় অধিবাসীরা শুক্রবার ও প্রতিদিনের নামাযের জন্য ব্যবহার করছে।

ভূমি নকশা, খন্দকারতলা মসজিদ, বগুড়া

ইট নির্মিত আয়তাকার মসজিদটি বাইরের দিক দিয়ে ২৩.৭৭ মি × ৯.৩০ মি এবং ভেতরের দিক দিয়ে ২০.১২ মি × ৫.৬৪ মি পরিমাপের। পূর্ব দেওয়ালে তিনটি এবং উত্তর ও দক্ষিণ দেওয়ালে একটি করে খিলানপথ দ্বারা মসজিদ অভ্যন্তরে প্রবেশ করা যায়। পশ্চিম দেওয়ালে তিনটি অর্ধ-গোলাকার মিহরাব কুলুঙ্গি পূর্ব দেওয়ালে স্থাপিত কেন্দ্রীয় খিলানপথগুলির বরাবরে স্থাপিত। আদিতে কেন্দ্রীয় খিলানপথ এবং মিহরাবটিকে বাইরের দিকে অভিক্ষিপ্ত। বাইরের দিকে এর দুপাশে সংযোজিত অলংকৃত ছোট মিনার (minarets) স্থাপন করে এর গুরুত্ব বৃদ্ধি করা হয়েছে।

মসজিদের একক আয়তাকার হল ঘরটি অভ্যন্তরে প্রশস্ত খিলান দ্বারা তিনটি সমান বর্গাকার ‘বে’তে বিভক্ত ছিল। এখনও পূর্ব ও পশ্চিম দেওয়ালে এ খিলানগুলির অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রত্যেকটি বে’র উপরে স্থাপিত গম্বুজগুলি বর্তমানে ভেঙ্গে পড়েছে। বর্তমানে অবলুপ্ত কার্ণিসগুলি বাংলা স্টাইলে বাঁকানো ছিল। মিহরাবগুলিসহ মসজিদ দেওয়ালের বাইরে ও ভেতরে, উভয়দিকই পোড়ামাটির ফলক দ্বারা ব্যাপকভাবে অলংকৃত ছিল, তবে বর্তমানে সমস্ত মসজিদই সিমেন্ট প্লাস্টারে ঢাকা।

মসজিদ নকশা এবং নির্মাণশৈলী ও অলংকরণের বহু দিক থেকেই মসজিদটি নিকটবর্তী খেরুয়া মসজিদের (১৫৮২) অনুরূপ বলে মনে হয়। তবে মসজিদটি বিশেষভাবে উল্লেখের দাবি করতে পারে এর কেন্দ্রীয় খিলানপথের অভিক্ষিপ্ত কাঠামো এবং এর পার্শ্ববর্তী ছোট মিনারের উপস্থিতির জন্য। কেননা এর আগে এ রীতি বাংলায় ছিল অনুপস্থিত। এর পর থেকে রীতিটি, যা সম্ভবত উত্তর ভারতের মসজিদ স্থাপত্য থেকে সরাসরি গৃহীত, বাংলার মসজিদগুলিতে সচরাচরই চোখে পড়ে। মসজিদে প্রাপ্ত একটি উৎকীর্ণ শিলালিপি থেকে জানা যায় যে, জনৈক মুয়াজ্জম খান ১৬৩২ খ্রিস্টাব্দে এটি নির্মাণ করেন।  [এম.এ বারি]