এগারো দফা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
(Text replacement - "\[মুয়ায্যম হুসায়ন খান\]" to "[মুয়ায্‌যম হুসায়ন খান]")
 
৭৩ নং লাইন: ৭৩ নং লাইন:
|}
|}


ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের এগারো দফা দাবির মধ্যে আওয়ামী লীগের ছয়দফা দাবির ব্যাপক প্রতিফলন ঘটে। এগারো দফায় বাঙালি মধ্যবিত্ত কৃষক-শ্রমিকের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট দাবিও অন্তর্ভুক্ত হয়। ফলে এগারো দফার আন্দোলন পূর্ব পাকিস্তানে ব্যাপক গণসমর্থন লাভ করে এবং আইউব বিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব কার্যত চলে আসে ছাত্র-নেতৃবৃন্দের হাতে। ছাত্র আন্দোলন ১৯৬৮ সালের অক্টোবর মাসে শুরু হয় এবং ১৯৬৯ সালের জানুয়ারিতে তুঙ্গে উঠে এবং মধ্য জানুয়ারিতে গণআন্দোলনের রূপ নেয়। মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি রচনায় ছাত্র সমাজের এগারো দফা আন্দোলন প্রত্যক্ষ অবদান রাখে। [মুয়ায্যম হুসায়ন খান]
ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের এগারো দফা দাবির মধ্যে আওয়ামী লীগের ছয়দফা দাবির ব্যাপক প্রতিফলন ঘটে। এগারো দফায় বাঙালি মধ্যবিত্ত কৃষক-শ্রমিকের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট দাবিও অন্তর্ভুক্ত হয়। ফলে এগারো দফার আন্দোলন পূর্ব পাকিস্তানে ব্যাপক গণসমর্থন লাভ করে এবং আইউব বিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব কার্যত চলে আসে ছাত্র-নেতৃবৃন্দের হাতে। ছাত্র আন্দোলন ১৯৬৮ সালের অক্টোবর মাসে শুরু হয় এবং ১৯৬৯ সালের জানুয়ারিতে তুঙ্গে উঠে এবং মধ্য জানুয়ারিতে গণআন্দোলনের রূপ নেয়। মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি রচনায় ছাত্র সমাজের এগারো দফা আন্দোলন প্রত্যক্ষ অবদান রাখে। [মুয়ায্‌যম হুসায়ন খান]


''আরও দেখুন''  [[ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান|ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান]]।
''আরও দেখুন''  [[ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান|ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান]]।


[[en:Eleven Points Programme]]
[[en:Eleven Points Programme]]

১৬:২৫, ১৭ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

এগারো দফা  পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যকার বৈষম্যের পটভূমিতে একদিকে পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের দাবির বাস্তবায়ন এবং অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট আইউব খানের স্বৈরাচারী শাসনের অবসানের লক্ষ্যে আন্দোলন গড়ে তোলার প্রয়াস বিশ শতকের ষাটের দশকের প্রথম দিকেই লক্ষ্য করা যায়। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ছয়দফা আন্দোলনের সূচনা হলেও বঙ্গবন্ধুসহ গণহারে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের গ্রেফতার, ১৯৬৮ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের এবং আওয়ামী লীগ কর্মিদের উপর নির্যাতনের ফলে ছয়দফা কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্তিমিত হয়ে পড়ে। এরই পটভূমিতে গড়ে উঠা পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) ও ডেমোক্রেটিক অ্যাকশন কমিটি (ডাক) যখন স্বৈরাচারী আইউব সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন বেগবান করতে ব্যর্থ হয়, তখন ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা এক ঐক্যবদ্ধ ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলেন এবং অচিরেই এ আন্দোলন গণআন্দোলনের রূপ পরিগ্রহ করে। ১৯৬৮ সালের অক্টোবর মাসে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ এবং পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের মেনন ও মতিয়া গ্রুপ রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তোলে। এ দুই সংগঠন ১৯৬৯ সালের জানুয়ারি মাসে ‘ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’ গঠন করে এবং আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে নিম্নোক্ত ১১-দফা দাবি ঘোষণা করে।

এগারো দফা
১। (ক) সচ্ছল কলেজসমূহকে প্রাদেশিকীকরণের নীতি পরিত্যাগ করিতে হইবে এবং জগন্নাথ কলেজসহ প্রাদেশিকীকরণকৃত কলেজসমূহকে পূর্বাবস্থায় ফিরাইয়া দিতে হইবে।
(খ) শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের জন্য প্রদেশের সর্বত্র বিশেষ করিয়া গ্রামাঞ্চলে স্কুল-কলেজ স্থাপন করিতে হইবে এবং বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত স্কুল-কলেজসমূহকে সত্বর অনুমোদন দিতে হইবে। কারিগরী শিক্ষা প্রসারের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, পলিটেকনিক, টেকনিক্যাল ও কমার্সিয়াল ইনস্টিটিউট স্থাপন করিতে হইবে।
(গ) প্রদেশের কলেজসমূহে দ্বিতীয় শিফটে নৈশ আই.এ, আই.এস-সি, আই.কম ও বি.এ, বিএস-সি, বি.কম এবং প্রতিষ্ঠিত কলেজসমূহে নৈশ এম.এ ও এম.কম ক্লাস চালু করিতে হইবে।
(ঘ) ছাত্র বেতন শতকরা ৫০ ভাগ হ্রাস করিতে হইবে। স্কলারশীপ ও স্টাইপেন্ডের সংখ্যা বৃদ্ধি করিতে হইবে এবং ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার অপরাধে স্কলারশিপ ও স্টাইপেন্ড কাড়িয়া লওয়া চলিবে না।
(ঙ) হল, হোস্টেলের ডাইনিং হল ও কেন্টিন খরচার শতকরা ৫০ ভাগ সরকার কর্তৃক ‘সাবসিডি’ হিসাবে প্রদান করিতে হইবে।
(চ) হল ও হোস্টেল সমস্যার সমাধান করিতে হইবে।
(ছ) মাতৃভাষার মাধ্যমে সর্বস্তরে শিক্ষার ব্যবস্থা করিতে হইবে। অফিস আদালতে বাংলা ভাষা চালু করিতে হইবে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত সংখ্যক অভিজ্ঞ শিক্ষকের ব্যবস্থা করিতে হইবে। শিক্ষকের বেতন বৃদ্ধি করিতে হইবে এবং স্বাধীন মতামত প্রকাশের অধিকার দিতে হইবে।
(জ) অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করিতে হইবে। নারী শিক্ষার ব্যাপক প্রসার করিতে হইবে।
(ঝ) মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করিতে হইবে এবং অটোমেশন প্রথা বিলোপ, নমিনেশনে ভর্তি প্রথা বন্ধ, মেডিকেল কাউন্সিল অর্ডিনেন্স বাতিল, ডেন্টাল কলেজকে পূর্ণাঙ্গ কলেজে পরিণত করা প্রভৃতি মেডিকেল ছাত্রদের দাবি মানিয়া লইতে হইবে। নার্স ছাত্রীদের সকল দাবি মানিয়া লইতে হইবে।
(ঞ) প্রকৌশল শিক্ষার অটোমেশন প্রথা বিলোপ, ১০% ও ৭৫% রুল বাতিল, সেন্ট্রাল লাইব্রেরীর সুব্যবস্থা, প্রকৌশল ছাত্রদের শেষবর্ষেরও ক্লাশ দেওয়ার ব্যবস্থাসহ সকল দাবি মানিয়া লইতে হইবে।
(ট) পলিটেকনিক ছাত্রদের ‘কনডেন্সড কোর্সের’ সুযোগ দিতে হইবে এবং বোর্ড ফাইনাল পরীক্ষা বাতিল করিয়া একমাত্র সেমিস্টার পরীক্ষার ভিত্তিতেই ডিপ্লোমা দিতে হইবে।
(ঠ) টেক্সটাইল, সিরামিক, লেদার টেকনোলজি এবং আর্ট কলেজ ছাত্রদের সকল দাবি অবিলম্বে মানিয়া লইতে হইবে। আই.ই.আর ছাত্রদের দশ-দফা; সমাজ কল্যাণ কলেজ ছাত্রদের, এম.বি.এ ছাত্রদের ও আইনের ছাত্রদের সমস্ত দাবি মানিয়া লইতে হইবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে বাণিজ্য বিভাগকে আলাদা ‘ফ্যাকাল্টি’ করিতে হইবে।
(ড) কৃষি বিদ্যালয় ও কলেজ ছাত্রদের ন্যায্য দাবি মানিয়া লইতে হইবে। কৃষি ডিপ্লোমা ছাত্রদের কনডেন্সড কোর্সের দাবিসহ কৃষি ছাত্রদের সকল দাবি মানিয়া লইতে হইবে।
(ঢ) ট্রেনে, স্টিমারে ও লঞ্চে ছাত্রদের ‘আইডেন্টিটি কার্ড’ দেখাইয়া শতকরা পঞ্চাশ ভাগ ‘কন্সেসনে’ টিকিট দেওয়ার ব্যবস্থা করিতে হইবে। মাসিক টিকিটেও ‘কন্সেসন’ দিতে হইবে। পশ্চিম পাকিস্তানের মত বাসে ১০ পয়সা ভাড়ায় শহরের যে কোনো স্থানে যাতায়াতের ব্যবস্থা করিতে হইবে। দূরবর্তী অঞ্চলে বাস যাতায়াতেও শতকরা ৫০ ভাগ ‘কন্সেসন’ দিতে হইবে। ছাত্রীদের স্কুল-কলেজে যাতায়াতের জন্য পর্যাপ্ত বাসের ব্যবস্থা করিতে হইবে। সরকারি ও আধাসরকারি উদ্যোগে আয়োজিত খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছাত্রদের শতকরা ৫০ ভাগ ‘কন্সেসন’ দিতে হইবে।
(ণ) চাকুরীর নিশ্চয়তা বিধান করিতে হইবে।
(ত) কুখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্স সম্পূর্ণ বাতিল করিতে হইবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দিতে হইবে।
(থ) শাসকগোষ্ঠীর শিক্ষা সংকোচন নীতির প্রামাণ্য দলিল জাতীয় শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট ও হামুদুর রহমান কমিশন রিপোর্ট সম্পূর্ণ বাতিল করিতে এবং ছাত্রসমাজ ও দেশবাসীর স্বার্থে গণমুখী ও বৈজ্ঞানিক শিক্ষা ব্যবস্থা কায়েম করিতে হইবে।
২। প্রাপ্ত বয়স্কদের ভোটে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে পার্লামেন্টারি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করিতে হইবে। বাক- স্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিতে হইবে। দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার উপর হইতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করিতে হইবে।
৩। নিম্নলিখিত দাবিসমূহ মানিয়া লইবার ভিত্তিতে পূর্ব পাকিস্তানের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দিতে হইবে:
(ক) দেশের শাসনতান্ত্রিক কাঠামো হইবে ফেডারেশন শাসনতান্ত্রিক রাষ্ট্রসংঘ এবং আইন পরিষদের ক্ষমতা হইবে সার্বভৌম।
(খ) ফেডারেল সরকারের ক্ষমতা দেশরক্ষা, বৈদেশিক নীতি ও মুদ্রা এই কয়টি বিষয়ে সীমাবদ্ধ থাকিবে। অপরাপর সকল বিষয়ে অঙ্গ রাষ্ট্রগুলির ক্ষমতা হইবে নিরঙ্কুশ।
(গ) দুই অঞ্চলের জন্য একই মুদ্রা থাকিবে। এই ব্যবস্থায় মুদ্রা কেন্দ্রের হাতে থাকিবে। কিন্তু এই অবস্থায় শাসনতন্ত্রে এমন সুনির্দিষ্ট বিধান থাকিতে হইবে যে, যাহাতে পূর্ব পাকিস্তানের মুদ্রা পশ্চিম পাকিস্তানে পাচার হইতে না পারে। এই বিধানে পাকিস্তানে একটি ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থাকিবে। দুই অঞ্চলে দুইটি পৃথক রিজার্ভ ব্যাংক থাকিবে এবং পূর্ব পাকিস্তানের জন্য পৃথক অর্থনীতি প্রবর্তন করিতে হইবে।
(ঘ) সকল প্রকার ট্যাক্স, খাজনা, কর ধার্য ও আদায়ের সকল ক্ষমতা থাকিবে আঞ্চলিক সরকারের হাতে। ফেডারেল সরকারের কোনো কর ধার্য করিবার ক্ষমতা থাকিবে না। আঞ্চলিক সরকারের আদায়ী রেভিনিউর নির্ধারিত অংশ আদায়ের সঙ্গে সঙ্গে ফেডারেল তহবিলে জমা হইবে। এই মর্মে রিজার্ভ ব্যাংকসমূহের উপর বাধ্যতামূলক বিধান শাসনতন্ত্রে থাকিবে।
(ঙ) ফেডারেশনের প্রতিটি রাষ্ট্র বহিঃবাণিজ্যের পৃথক হিসাব রক্ষা করিবে এবং বহিঃবাণিজ্যের মাধ্যমে অর্জিত মুদ্রা অঙ্গ রাষ্ট্রগুলির এক্তিয়ারাধীন থাকিবে। ফেডারেল সরকারের প্রয়োজনীয় বিদেশি মুদ্রা অঙ্গ রাষ্ট্রগুলি সমানভাবে অথবা শাসনতন্ত্রের নির্ধারিত ধারা অনুযায়ী প্রদান করিবে। দেশজাত দ্রব্যাদি বিনা শুল্কে অঙ্গ রাষ্ট্রগুলির মধ্যে আমদানি-রপ্তানি চলিবে। এবং ব্যবসা বাণিজ্য সম্পর্কে বিদেশি রাষ্ট্রগুলির সাথে চুক্তি সম্পাদনের, বিদেশে ট্রেড মিশন স্থাপনের এবং আমদানি-রপ্তানি করিবার অধিকার অঙ্গ রাষ্ট্রগুলির হাতে ন্যস্ত করিয়া শাসনতন্ত্রে বিধান করিতে হইবে।
(চ) পূর্ব পাকিস্তানকে মিলিশিয়া বা প্যারা মিলিটারি রক্ষী বাহিনী গঠনের ক্ষমতা দিতে হইবে। পূর্ব পাকিস্তানে অস্ত্র কারখানা নির্মাণ ও নৌবাহিনীর সদর দফতর স্থাপন করিতে হইবে।</nowiki>
৪। পশ্চিম পাকিস্তানের বেলুচিস্তান, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, সিন্ধুসহ সকল প্রদেশের স্বায়ত্তশাসন প্রদান করতঃ সাব-ফেডারেশন গঠন করিতে হইবে।
৫। ব্যাংক-বীমা, পাট ব্যবসা ও বৃহৎ শিল্প জাতীয়করণ করিতে হইবে।
৬। কৃষকের উপর হইতে খাজনা ও ট্যাক্সের হার হ্রাস করিতে হইবে এবং বকেয়া খাজনা ও ঋণ মওকুফ করিতে হইবে। সার্টিফিকেট প্রথা বাতিল ও তহশিলদারদের অত্যাচার বন্ধ করিতে হইবে। পাটের সর্বনিম্ন মূল্য মণ প্রতি ৪০ টাকা নির্ধারণ এবং আখের ন্যায্য মূল্য দিতে হইবে।
৭। শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরী বোনাস দিতে হইবে এবং শিক্ষা, বাসস্থান, চিকিৎসা ইত্যাদির ব্যবস্থা করিতে হইবে। শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী কালাকানুন প্রত্যাহার করিতে হইবে এবং ধর্মঘটের অধিকার ও ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার প্রদান করিতে হইবে।
৮। পূর্ব-পাকিস্তানের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও জল সম্পদের সার্বিক ব্যবহারের ব্যবস্থা করিতে হইবে।
৯। জরুরি আইন প্রত্যাহার, নিরাপত্তা আইন ও অন্যান্য নিবর্তনমূলক আইন প্রত্যাহার করিতে হইবে।
১০। সিয়াটো, সেন্টো, পাক-মার্কিন সামরিক চুক্তি বাতিল করিয়া জোট বহির্ভূত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি কায়েম করিতে হইবে।
১১। দেশের বিভিন্ন কারাগারে আটক সকল ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক, রাজনৈতিক কর্মী ও নেতৃবৃন্দের অবিলম্বে মুক্তি, গ্রেফতারি পরোয়ানা ও হুলিয়া প্রত্যাহার এবং আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাসহ সকল রাজনৈতিক কারণে রুজুকৃত মামলা প্রত্যাহার করিতে হইবে।

ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের এগারো দফা দাবির মধ্যে আওয়ামী লীগের ছয়দফা দাবির ব্যাপক প্রতিফলন ঘটে। এগারো দফায় বাঙালি মধ্যবিত্ত কৃষক-শ্রমিকের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট দাবিও অন্তর্ভুক্ত হয়। ফলে এগারো দফার আন্দোলন পূর্ব পাকিস্তানে ব্যাপক গণসমর্থন লাভ করে এবং আইউব বিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব কার্যত চলে আসে ছাত্র-নেতৃবৃন্দের হাতে। ছাত্র আন্দোলন ১৯৬৮ সালের অক্টোবর মাসে শুরু হয় এবং ১৯৬৯ সালের জানুয়ারিতে তুঙ্গে উঠে এবং মধ্য জানুয়ারিতে গণআন্দোলনের রূপ নেয়। মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি রচনায় ছাত্র সমাজের এগারো দফা আন্দোলন প্রত্যক্ষ অবদান রাখে। [মুয়ায্‌যম হুসায়ন খান]

আরও দেখুন ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান