পেট্রোবাংলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''পেট্রোবাংলা''' (Petrobangla)  বাংলাদেশ মিনারেল অয়েল অ্যান্ড গ্যাস কর্পোরেশন (বিওজিএমসি)-এর উত্তরসূরী প্রতিষ্ঠান। ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ রাষ্ট্রপতির ২৭ নং অধ্যাদেশ বলে বিওজিএমসি গঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতির অপর এক অধ্যাদেশ (অধ্যাদেশ নং ১২০) বলে গঠিত হয় বাংলাদেশ মিনারেল এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (বিএমইডিসি)। বিওজিএমসি-এর কাছ থেকে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান সংক্রান্ত খননকার্য পরিচালনার দায়-দায়িত্ব পৃথক করে বিএমইডিসি-এর ওপর ন্যস্ত করা হয়। এর ফলে বিওজিএমসি-এর নামকরণ পুনর্বিন্যস্ত হয়ে নতুন নামকরণ হয় বিওজিসি- বাংলাদেশ অয়েল অ্যান্ড গ্যাস কর্পোরেশন। ১৯৭৪ সালের ২২ আগস্ট অধ্যাদেশ নং-১৫ বলে বিওজিসি-এর সংক্ষিপ্ত নামকরণ করা হয় পেট্রোবাংলা। ১৯৭৬ সালের ১৩ নভেম্বর তারিখে ৮৮ নং অধ্যাদেশ-এর আওতায় অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থের আমদানি, পরিশোধন ও বাজারজাতকরণের দায়িত্ব পেট্রোবাংলার কাছ থেকে পৃথক করে  [[বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন|বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন]] (বিপিসি) নামে নবগঠিত প্রতিষ্ঠানের ওপর অর্পণ করা হয়। সরকারি অধ্যাদেশ নং-২১ বলে ১৯৮৫ সালের ১১ এপ্রিল তারিখে বিওজিসি এবং বিএমইডিসি-কে একীভূত করে গঠন করা হয় বাংলাদেশ অয়েল, গ্যাস অ্যান্ড মিনারেল্স কর্পোরেশন (বিওজিএমসি)। এই অধ্যাদেশের আংশিক পরিবর্তন সাধনের মাধ্যমে বিওজিএমসি-কে সংক্ষিপ্তভাবে ‘পেট্রোবাংলা’ নামে নামকরণ করে ১৯৮৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী তারিখে অপর একটি অধ্যাদেশ (অধ্যাদেশ নং-১১) জারী করা হয়। তেল, গ্যাস ও খনিজ অনুসন্ধান ও তাদের উন্নয়ন সংক্রান্ত যাবতীয় কর্মকান্ড পরিচালনার দায়-দায়িত্ব পেট্রোবাংলার ওপর অর্পণ করা হয়। বর্তমানে পেট্রোবাংলার অধীনে ১১টি কোম্পানি পরিচালিত হচ্ছে। কোম্পানিগুলি হচ্ছে:
'''পেট্রোবাংলা''' (Petrobangla)  বাংলাদেশ মিনারেল অয়েল অ্যান্ড গ্যাস কর্পোরেশন (বিওজিএমসি)-এর উত্তরসূরী প্রতিষ্ঠান। ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ রাষ্ট্রপতির ২৭ নং অধ্যাদেশ বলে বিওজিএমসি গঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতির অপর এক অধ্যাদেশ (অধ্যাদেশ নং ১২০) বলে গঠিত হয় বাংলাদেশ মিনারেল এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (বিএমইডিসি)। বিওজিএমসি-এর কাছ থেকে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান সংক্রান্ত খননকার্য পরিচালনার দায়-দায়িত্ব পৃথক করে বিএমইডিসি-এর ওপর ন্যস্ত করা হয়। এর ফলে বিওজিএমসি-এর নামকরণ পুনর্বিন্যস্ত হয়ে নতুন নামকরণ হয় বিওজিসি- বাংলাদেশ অয়েল অ্যান্ড গ্যাস কর্পোরেশন। ১৯৭৪ সালের ২২ আগস্ট অধ্যাদেশ নং-১৫ বলে বিওজিসি-এর সংক্ষিপ্ত নামকরণ করা হয় পেট্রোবাংলা। ১৯৭৬ সালের ১৩ নভেম্বর তারিখে ৮৮ নং অধ্যাদেশ-এর আওতায় অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থের আমদানি, পরিশোধন ও বাজারজাতকরণের দায়িত্ব পেট্রোবাংলার কাছ থেকে পৃথক করে  [[বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন|বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন]] (বিপিসি) নামে নবগঠিত প্রতিষ্ঠানের ওপর অর্পণ করা হয়। সরকারি অধ্যাদেশ নং-২১ বলে ১৯৮৫ সালের ১১ এপ্রিল তারিখে বিওজিসি এবং বিএমইডিসি-কে একীভূত করে গঠন করা হয় বাংলাদেশ অয়েল, গ্যাস অ্যান্ড মিনারেল্স কর্পোরেশন (বিওজিএমসি)। এই অধ্যাদেশের আংশিক পরিবর্তন সাধনের মাধ্যমে বিওজিএমসি-কে সংক্ষিপ্তভাবে ‘পেট্রোবাংলা’ নামে নামকরণ করে ১৯৮৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী তারিখে অপর একটি অধ্যাদেশ (অধ্যাদেশ নং-১১) জারী করা হয়। তেল, গ্যাস ও খনিজ অনুসন্ধান ও তাদের উন্নয়ন সংক্রান্ত যাবতীয় কর্মকান্ড পরিচালনার দায়-দায়িত্ব পেট্রোবাংলার ওপর অর্পণ করা হয়। বর্তমানে পেট্রোবাংলার অধীনে ১১টি কোম্পানি পরিচালিত হচ্ছে। কোম্পানিগুলি হচ্ছে:


'''''বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন কোম্পানী লিমিটেড''''(বাপেক্স)  ১৯৮৯ সালের ৩ এপ্রিল কোম্পানি আইনের অধীনে পেট্রোবাংলার অধীনস্থ একটি কোম্পানি হিসেবে গঠিত হয় এবং পেট্রোবাংলার ভূতপূর্ব অনুসন্ধান পরিদপ্তর পৃথক করে নবগঠিত কোম্পানি ১ জুলাই ১৯৮৯ থেকে তৎপরতা শুরু করে। পরবর্তীতে বাপেক্সকে কেবল অনুসন্ধান কোম্পানি নয়, তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান ও উন্নয়ন কোম্পানি হিসেবে পরিচালনার ক্ষমতা প্রদান করা হয়। ১৯৭৬ সাল থেকে পেট্রোবাংলা/বাপেক্স মোট ১৬টি তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান কূপ খনন করে ১০টি গ্যাস ও একটি তেলক্ষেত্র আবিষ্কার নিশ্চিত করেছে। ১৯৯০ সাল থেকে বাপেক্স ২,৫৮৭ লাইন কিলোমিটার ভূ-কম্পনীয় (seismic) জরিপ, ৩টি (তিন) অনুসন্ধান ও ৫টি (পাঁচ) ওয়ার্কওভার কূপ খনন করেছে। ভূতাত্ত্বিবক ও ভূপদার্থিক জরিপ পরিচালনার সুযোগ ছাড়াও বাপেক্সের নিজস্ব ল্যাবরেটরি এবং তেল ও গ্যাস উন্নয়নের জন্য কম্পিউটার ডাটা প্রক্রিয়াকরণ সুবিধা রয়েছে।
'''''বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন কোম্পানী লিমিটেড''''' (বাপেক্স)  ১৯৮৯ সালের ৩ এপ্রিল কোম্পানি আইনের অধীনে পেট্রোবাংলার অধীনস্থ একটি কোম্পানি হিসেবে গঠিত হয় এবং পেট্রোবাংলার ভূতপূর্ব অনুসন্ধান পরিদপ্তর পৃথক করে নবগঠিত কোম্পানি ১ জুলাই ১৯৮৯ থেকে তৎপরতা শুরু করে। পরবর্তীতে বাপেক্সকে কেবল অনুসন্ধান কোম্পানি নয়, তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান ও উন্নয়ন কোম্পানি হিসেবে পরিচালনার ক্ষমতা প্রদান করা হয়। ১৯৭৬ সাল থেকে পেট্রোবাংলা/বাপেক্স মোট ১৬টি তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান কূপ খনন করে ১০টি গ্যাস ও একটি তেলক্ষেত্র আবিষ্কার নিশ্চিত করেছে। ১৯৯০ সাল থেকে বাপেক্স ২,৫৮৭ লাইন কিলোমিটার ভূ-কম্পনীয় (seismic) জরিপ, ৩টি (তিন) অনুসন্ধান ও ৫টি (পাঁচ) ওয়ার্কওভার কূপ খনন করেছে। ভূতাত্ত্বিবক ও ভূপদার্থিক জরিপ পরিচালনার সুযোগ ছাড়াও বাপেক্সের নিজস্ব ল্যাবরেটরি এবং তেল ও গ্যাস উন্নয়নের জন্য কম্পিউটার ডাটা প্রক্রিয়াকরণ সুবিধা রয়েছে।


'''''বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানী লিমিটেড'''''(বিজিএফসিএল)  দেশের প্রধান গ্যাস উৎপাদনকারী কোম্পানি। দেশের মোট গ্যাস চাহিদার প্রায় ৬০ ভাগই বিজিএফসিএল কর্তৃক পূরণ হয়ে থাকে। করাচিতে ১৯৫৬ সালের ২৬ মে তারিখে প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান শেল অয়েল কোম্পানীর উত্তরসূরী কোম্পানি হিসেবে গঠিত হয় বিজিএফসিএল। স্বাধীনতার পর পাকিস্তান শেল অয়েল কোম্পানীর নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ শেল অয়েল কোম্পানী (বিএসওসি) রাখা হয় এবং ১৯৭২ সালের প্রথমভাগ পর্যন্ত এর কর্মকান্ড পরিচালিত হয়। এরপর বিএসওসি বাংলাদেশ সরকারের কাছে তার সকল শেয়ার বিক্রি করে দেয় এবং সরকার বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানী গঠন করে বিএসওসি পরিচালিত উৎপাদনরত গ্যাসক্ষেত্র-তিতাস ও হবিগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্র দুটি পরিচালনার দায়িত্ব কোম্পানিকে প্রদান করে। ১৯৮৪ সালে এই কোম্পানিকে কামতা গ্যাসক্ষেত্র পরিচালনার দায়িত্বও প্রদান করা হয়। এরপর ১৯৮৯ সালে বাখরাবাদ ও ফেনী গ্যাসক্ষেত্র দুটিও বিজিএফসিএল-এর আওতাভুক্ত করা হয়। আরও দুটি গ্যাসক্ষেত্র-মেঘনা ও নরসিংদি গ্যাসক্ষেত্রও পরিচালনার জন্য ১৯৯২ সালে কোম্পানির ওপর ন্যস্ত করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানী লিমিটেড ৭টি গ্যাসক্ষেত্র পরিচালনা করছে। এ সকল গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে তিতাস, বাখরাবাদ, হবিগঞ্জ, নরসিংদী ও মেঘনা গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। কামতা ও ফেনী গ্যাসক্ষেত্র দুটি থেকে গ্যাস উৎপাদন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বিজিএফসিএল-এর প্রধান কাজ প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন ও পাইপের মাধ্যমে তা সরবরাহ করা হলেও বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্রের উন্নয়নকার্য এবং দেশে গ্যাস ও তরল হাইড্রোকার্বনের বর্ধিত চাহিদার সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদন ক্ষমতার সামঞ্জস্য বিধান করার লক্ষ্যে কূপখনন, পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি কর্মকান্ডও পরিচালনা করে থাকে। বর্তমানে বিজিএফসিএল-এর  [[কন্ডেনসেট|কন্ডেনসেট]] উৎপাদন দৈনিক গড়ে ৪৮২ বিলিয়ন ব্যারেল।
'''''বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানী লিমিটেড'''''(বিজিএফসিএল)  দেশের প্রধান গ্যাস উৎপাদনকারী কোম্পানি। দেশের মোট গ্যাস চাহিদার প্রায় ৬০ ভাগই বিজিএফসিএল কর্তৃক পূরণ হয়ে থাকে। করাচিতে ১৯৫৬ সালের ২৬ মে তারিখে প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান শেল অয়েল কোম্পানীর উত্তরসূরী কোম্পানি হিসেবে গঠিত হয় বিজিএফসিএল। স্বাধীনতার পর পাকিস্তান শেল অয়েল কোম্পানীর নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ শেল অয়েল কোম্পানী (বিএসওসি) রাখা হয় এবং ১৯৭২ সালের প্রথমভাগ পর্যন্ত এর কর্মকান্ড পরিচালিত হয়। এরপর বিএসওসি বাংলাদেশ সরকারের কাছে তার সকল শেয়ার বিক্রি করে দেয় এবং সরকার বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানী গঠন করে বিএসওসি পরিচালিত উৎপাদনরত গ্যাসক্ষেত্র-তিতাস ও হবিগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্র দুটি পরিচালনার দায়িত্ব কোম্পানিকে প্রদান করে। ১৯৮৪ সালে এই কোম্পানিকে কামতা গ্যাসক্ষেত্র পরিচালনার দায়িত্বও প্রদান করা হয়। এরপর ১৯৮৯ সালে বাখরাবাদ ও ফেনী গ্যাসক্ষেত্র দুটিও বিজিএফসিএল-এর আওতাভুক্ত করা হয়। আরও দুটি গ্যাসক্ষেত্র-মেঘনা ও নরসিংদি গ্যাসক্ষেত্রও পরিচালনার জন্য ১৯৯২ সালে কোম্পানির ওপর ন্যস্ত করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানী লিমিটেড ৭টি গ্যাসক্ষেত্র পরিচালনা করছে। এ সকল গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে তিতাস, বাখরাবাদ, হবিগঞ্জ, নরসিংদী ও মেঘনা গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। কামতা ও ফেনী গ্যাসক্ষেত্র দুটি থেকে গ্যাস উৎপাদন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বিজিএফসিএল-এর প্রধান কাজ প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন ও পাইপের মাধ্যমে তা সরবরাহ করা হলেও বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্রের উন্নয়নকার্য এবং দেশে গ্যাস ও তরল হাইড্রোকার্বনের বর্ধিত চাহিদার সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদন ক্ষমতার সামঞ্জস্য বিধান করার লক্ষ্যে কূপখনন, পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি কর্মকান্ডও পরিচালনা করে থাকে। বর্তমানে বিজিএফসিএল-এর  [[কন্ডেনসেট|কন্ডেনসেট]] উৎপাদন দৈনিক গড়ে ৪৮২ বিলিয়ন ব্যারেল।

০৮:৫১, ৮ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

পেট্রোবাংলা (Petrobangla)  বাংলাদেশ মিনারেল অয়েল অ্যান্ড গ্যাস কর্পোরেশন (বিওজিএমসি)-এর উত্তরসূরী প্রতিষ্ঠান। ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ রাষ্ট্রপতির ২৭ নং অধ্যাদেশ বলে বিওজিএমসি গঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতির অপর এক অধ্যাদেশ (অধ্যাদেশ নং ১২০) বলে গঠিত হয় বাংলাদেশ মিনারেল এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (বিএমইডিসি)। বিওজিএমসি-এর কাছ থেকে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান সংক্রান্ত খননকার্য পরিচালনার দায়-দায়িত্ব পৃথক করে বিএমইডিসি-এর ওপর ন্যস্ত করা হয়। এর ফলে বিওজিএমসি-এর নামকরণ পুনর্বিন্যস্ত হয়ে নতুন নামকরণ হয় বিওজিসি- বাংলাদেশ অয়েল অ্যান্ড গ্যাস কর্পোরেশন। ১৯৭৪ সালের ২২ আগস্ট অধ্যাদেশ নং-১৫ বলে বিওজিসি-এর সংক্ষিপ্ত নামকরণ করা হয় পেট্রোবাংলা। ১৯৭৬ সালের ১৩ নভেম্বর তারিখে ৮৮ নং অধ্যাদেশ-এর আওতায় অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থের আমদানি, পরিশোধন ও বাজারজাতকরণের দায়িত্ব পেট্রোবাংলার কাছ থেকে পৃথক করে  বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) নামে নবগঠিত প্রতিষ্ঠানের ওপর অর্পণ করা হয়। সরকারি অধ্যাদেশ নং-২১ বলে ১৯৮৫ সালের ১১ এপ্রিল তারিখে বিওজিসি এবং বিএমইডিসি-কে একীভূত করে গঠন করা হয় বাংলাদেশ অয়েল, গ্যাস অ্যান্ড মিনারেল্স কর্পোরেশন (বিওজিএমসি)। এই অধ্যাদেশের আংশিক পরিবর্তন সাধনের মাধ্যমে বিওজিএমসি-কে সংক্ষিপ্তভাবে ‘পেট্রোবাংলা’ নামে নামকরণ করে ১৯৮৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী তারিখে অপর একটি অধ্যাদেশ (অধ্যাদেশ নং-১১) জারী করা হয়। তেল, গ্যাস ও খনিজ অনুসন্ধান ও তাদের উন্নয়ন সংক্রান্ত যাবতীয় কর্মকান্ড পরিচালনার দায়-দায়িত্ব পেট্রোবাংলার ওপর অর্পণ করা হয়। বর্তমানে পেট্রোবাংলার অধীনে ১১টি কোম্পানি পরিচালিত হচ্ছে। কোম্পানিগুলি হচ্ছে:

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন কোম্পানী লিমিটেড (বাপেক্স)  ১৯৮৯ সালের ৩ এপ্রিল কোম্পানি আইনের অধীনে পেট্রোবাংলার অধীনস্থ একটি কোম্পানি হিসেবে গঠিত হয় এবং পেট্রোবাংলার ভূতপূর্ব অনুসন্ধান পরিদপ্তর পৃথক করে নবগঠিত কোম্পানি ১ জুলাই ১৯৮৯ থেকে তৎপরতা শুরু করে। পরবর্তীতে বাপেক্সকে কেবল অনুসন্ধান কোম্পানি নয়, তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান ও উন্নয়ন কোম্পানি হিসেবে পরিচালনার ক্ষমতা প্রদান করা হয়। ১৯৭৬ সাল থেকে পেট্রোবাংলা/বাপেক্স মোট ১৬টি তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান কূপ খনন করে ১০টি গ্যাস ও একটি তেলক্ষেত্র আবিষ্কার নিশ্চিত করেছে। ১৯৯০ সাল থেকে বাপেক্স ২,৫৮৭ লাইন কিলোমিটার ভূ-কম্পনীয় (seismic) জরিপ, ৩টি (তিন) অনুসন্ধান ও ৫টি (পাঁচ) ওয়ার্কওভার কূপ খনন করেছে। ভূতাত্ত্বিবক ও ভূপদার্থিক জরিপ পরিচালনার সুযোগ ছাড়াও বাপেক্সের নিজস্ব ল্যাবরেটরি এবং তেল ও গ্যাস উন্নয়নের জন্য কম্পিউটার ডাটা প্রক্রিয়াকরণ সুবিধা রয়েছে।

বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানী লিমিটেড(বিজিএফসিএল)  দেশের প্রধান গ্যাস উৎপাদনকারী কোম্পানি। দেশের মোট গ্যাস চাহিদার প্রায় ৬০ ভাগই বিজিএফসিএল কর্তৃক পূরণ হয়ে থাকে। করাচিতে ১৯৫৬ সালের ২৬ মে তারিখে প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান শেল অয়েল কোম্পানীর উত্তরসূরী কোম্পানি হিসেবে গঠিত হয় বিজিএফসিএল। স্বাধীনতার পর পাকিস্তান শেল অয়েল কোম্পানীর নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ শেল অয়েল কোম্পানী (বিএসওসি) রাখা হয় এবং ১৯৭২ সালের প্রথমভাগ পর্যন্ত এর কর্মকান্ড পরিচালিত হয়। এরপর বিএসওসি বাংলাদেশ সরকারের কাছে তার সকল শেয়ার বিক্রি করে দেয় এবং সরকার বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানী গঠন করে বিএসওসি পরিচালিত উৎপাদনরত গ্যাসক্ষেত্র-তিতাস ও হবিগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্র দুটি পরিচালনার দায়িত্ব কোম্পানিকে প্রদান করে। ১৯৮৪ সালে এই কোম্পানিকে কামতা গ্যাসক্ষেত্র পরিচালনার দায়িত্বও প্রদান করা হয়। এরপর ১৯৮৯ সালে বাখরাবাদ ও ফেনী গ্যাসক্ষেত্র দুটিও বিজিএফসিএল-এর আওতাভুক্ত করা হয়। আরও দুটি গ্যাসক্ষেত্র-মেঘনা ও নরসিংদি গ্যাসক্ষেত্রও পরিচালনার জন্য ১৯৯২ সালে কোম্পানির ওপর ন্যস্ত করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানী লিমিটেড ৭টি গ্যাসক্ষেত্র পরিচালনা করছে। এ সকল গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে তিতাস, বাখরাবাদ, হবিগঞ্জ, নরসিংদী ও মেঘনা গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। কামতা ও ফেনী গ্যাসক্ষেত্র দুটি থেকে গ্যাস উৎপাদন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বিজিএফসিএল-এর প্রধান কাজ প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন ও পাইপের মাধ্যমে তা সরবরাহ করা হলেও বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্রের উন্নয়নকার্য এবং দেশে গ্যাস ও তরল হাইড্রোকার্বনের বর্ধিত চাহিদার সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদন ক্ষমতার সামঞ্জস্য বিধান করার লক্ষ্যে কূপখনন, পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি কর্মকান্ডও পরিচালনা করে থাকে। বর্তমানে বিজিএফসিএল-এর  কন্ডেনসেট উৎপাদন দৈনিক গড়ে ৪৮২ বিলিয়ন ব্যারেল।

সিলেট গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানী লিমিটেড(এসজিএফএল)  পূর্বে এটি ছিল বার্মা অয়েল কোম্পানী (বিওসি)। স্বাধীনতার পর বিওসি পরিত্যক্ত হয়ে গেলে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকার এর দায় দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং কোম্পানিটির নতুন নাম হয় সিলেট গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানী লিমিটেড। বর্তমানে এই কোম্পনির আওতায় ছয়টি গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। এগুলি হলো: সিলেটের হরিপুর, কৈলাশটিলা, রশিদপুর, বিয়ানীবাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ ও ছাতক গ্যাসক্ষেত্র। এসকল গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে হরিপুর, কৈলাশটিলা, রশিদপুর এবং বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্র থেকে এসজিএফএল গ্যাস ও কন্ডেনসেট উৎপাদন করছে। জুলাই ১৯৯০ থেকে জুন ২০০০ পর্যন্ত এসজিএফএল ২.৯ বিলিয়ন ব্যারেল কন্ডেনসেট এবং ৫৬.৭০ বিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস উৎপাদন করেছে।

গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানী লিমিটেড(জিটিসিএল)  দেশের সকল উচ্চ চাপবিশিষ্ট গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইনসমূহকে ধীরে ধীরে একটি কেন্দ্রীয় পরিচালনার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্য নিয়ে ১৯৯৩ সালের ২৪ জুন তারিখে জিটিসিএল গঠিত হয়। পেট্রোবাংলা নির্মিত এবং উত্তর-দক্ষিণে কৈলাশটিলা গ্যাসক্ষেত্র থেকে আশুগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত ২৪ ইঞ্চি ব্যাসবিশিষ্ট ১৮৮ কিমি দীর্ঘ গ্যাস পাইপ লাইন নিয়ে এই কোম্পানির যাত্রা শুরু। সেইসঙ্গে ৬ ইঞ্চি ব্যাস ও ১৮৭ কিমি দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট একটি কন্ডেনসেট সঞ্চালন পাইপ লাইনও জিটিসিএল-এর দায়িত্বে হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তীতে এই কোম্পানি ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের ৫৯ কিমি দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট আশুগঞ্জ-বাখরাবাদ গ্যাস পাইপ লাইন নির্মাণ কাজ বাস্তবায়িত করে যা জাতীয় গ্যাস গ্রিডকে সংযুক্ত করে। জিটিসিএল বর্তমানে একটি জাতীয় গ্যাস গ্রিড স্ক্যাডা (SCADA-Supervisory Control and Data Acquisition) টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বাস্তবায়নে নিয়োজিত রয়েছে।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড(টিজিটিডিসিএল)  সুবিস্তৃত সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন নেটওয়ার্ক সম্পন্ন দেশের সর্বাধিক পুরানো গ্যাস বাজারজাতকারী কোম্পানি। নিজস্ব সঞ্চালন ও বিতরণ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে টিজিটিডিসিএল দেশের মোট গ্যাস বিক্রয়ের প্রায় ৬৮ ভাগ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। ১৯৬৪ সালের ২১ আগস্ট তারিখে পাকিস্তানের শেল অযেল কোম্পানী ও ইস্ট পাকিস্তান ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (ইপিআইডিসি)-এর মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুসারে একই সালের ২০ নভেম্বর তারিখে তিতাস গ্যাস কোম্পানী তার কার্যক্রম শুরু করে। পরবর্তীতে টিজিটিডিসিএল ১৪ ইঞ্চি ব্যাসবিশিষ্ট ৯৩ কিলোমিটার দীর্ঘ তিতাস-ডেমরা সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে। ১৯৬৮ সালের এপ্রিল মাসে সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুত কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহের মধ্য দিয়ে টিজিটিডিসিএল-এর বাণিজ্যিক কর্মকান্ড শুরু হয়। ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির ২৭ নং অধ্যাদেশের ১০(ক) ধারা অনুযায়ী টিজিটিডিসিএল-কে পেট্রোবাংলার একটি সাবসিডিয়ারী কোম্পানি হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। ১৯৯০ সালের জুলাই মাস থেকে ২০০০ সালের জুন মাস পর্যন্ত তিতাস গ্যাস কোম্পানী মোট ৩২৯০.৪৮ কিমি দীর্ঘ সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ করে এবং ৩,৭৭,৫৫০ টি সংযোগ প্রদানের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে ৪১.০৪ বিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস বিক্রি করে।

বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমস লিমিটেড(বিজিএসএল)  বাখরাবাদ গ্যাসক্ষেত্রের গ্যাস উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে ১৯৮০ সালের ৭ জুন প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি। ১৯৮৪ সালের ২০ মে তারিখ থেকে এই কোম্পানি গ্যাসের বাণিজ্যিক বিতরণ শুরু করে। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটিকে গ্যাস সঞ্চালন ও বাজারজাতকরণ কোম্পানিতে রূপান্তরিত করা হয় এবং ১৯৮৯ সালের মে মাসে বাখরাবাদ গ্যাসক্ষেত্রের মালিকানা বাখরাবাদ গ্যাস ফিল্ড কোম্পানী লিমিটেড (বিজিএফসিএল)-কে প্রদান করা হয়। বিজিএসএল ব্রাহ্মণবাড়িয়া ব্যতীত চট্টগ্রাম বিভাগের সর্বত্র তার কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এই কোম্পানি ১৯৯০ সালের জুলাই মাস থেকে ২০০০ সালের জুন মাস পর্যন্ত প্রায় ২০১৭.১৭ কিমি দীর্ঘ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করে এবং ১,৩৫,৪৩৮টি সংযোগ প্রদানের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে ১৩.৯৭ বিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস বিক্রি করে।

জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিষ্ট্রিবিউশন সিস্টেমস লিমিটেড(জেজিটিডিএসএল)  বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে গ্যাস বিতরণ সুবিধা প্রদান করার লক্ষ্যে হবিগঞ্জ চা উপত্যকা ও সিলেট শহর গ্যাস বিতরণ প্রকল্পের সমন্বয়ে ১৯৭৭ সালে গঠিত কোম্পানি। ১৯৭৮ সালে হযরত শাহ্জালাল (রঃ)-এর মাযারে গ্যাস সরবরাহ করার মধ্য দিয়ে এই কোম্পানি আনুষ্ঠানিকভাবে তার কার্যক্রম শুরু করে। ১৯৮৬ সালের ডিসেম্বর মাসে জেজিটিডিএসএল কোম্পানি আইনে নিবন্ধিত হয়। ১৯৯০ সালের জুলাই মাস থেকে ২০০০ সালের জুন মাস পর্যন্ত জেজিটিডিএসএল মোট ১৭৭৬.৬১ কিমি গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ করতে সক্ষম হয়। উল্লিখিত সময়কালে এই কোম্পানি ১০,৪০৭ জন গ্রাহকের কাছে ৫.২৩ বিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস বিক্রয় করে।

রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানী লিমিটেড(আরপিজিসিএল)  যানবাহনের জন্য পরিবেশ অনুকূল ও অর্থনৈতিক দিক থেকে সাশ্রয়ী জ্বালানি হিসেবে সিএনজি (সংকুচিত প্রাকৃতিক গ্যাস)-কে প্রচলিত করার লক্ষ্যে একটি পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে ১৯৮২ সালে এই কোম্পানির ভিত্তি রচিত হয়। ১৯৮২ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত পরিচালিত এই পাইলট প্রকল্পে ইতিবাচক ফলাফল অর্জিত হলে প্রকল্পটি ১৯৮৭ সালের জানুয়ারি মাসে সংকুচিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানী লিমিটেড হিসেবে কর্মকান্ড পরিচালনা শুরু করে। পরবর্তীতে এই কোম্পানিকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে দেশের বিভিন্ন ভেজা গ্যাসক্ষেত্র থেকে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) আহরণ, পরিশোধন ও বোতলজাত করে বাজারজাতকরণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৯১ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এই কোম্পানিকে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানী লিমিটেড হিসেবে পুনর্নামকরণ করা হয়। বর্তমানে আরপিজিসিএল ঢাকা মহানগরীতে চারটি সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন পরিচালনা করছে এবং প্রায় ১২০০ যানবাহনের ইঞ্জিন সিএনজিতে রূপান্তর করেছে। দেশের সর্বত্র সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন স্থাপন ও পরিচালনার উদ্দেশ্যে আরপিজিসিএল চীনা কোম্পানি সিডিসি-এর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

পশ্চিমাঞ্চলীয় গ্যাস কোম্পানী লিমিটেড(ওয়েসগ্যাস)  যমুনা নদীর পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত দেশের পশ্চিমাঞ্চলে গ্যাস সরবরাহের উদ্দেশ্যে বিশেষ করে এলেঙ্গা থেকে বাঘাবাড়ি পর্যন্ত গ্যাস পাইপ লাইন নেটওয়ার্ক স্থাপন ও প্রাথমিক পর্যায়ে সিরাজগঞ্জ শহরে গ্যাস সরবরাহের প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে ১৯৯৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই কোম্পানির কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালের নভেম্বর মাসে পূর্ণাঙ্গ কোম্পানি গঠিত হয় এবং এর কার্যক্রমের আওতা বর্ধিত করে প্রথমে বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলের সকল শিল্প, বাণিজ্যিক ও আবাসিক গ্রাহকের কাছে এবং পরবর্তীতে ঈশ্বরদী, ভেড়ামারা, পাকশী ও পাবনা এলাকায় গ্যাস সরবরাহের দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিমিটেড(বিসিএমসিএল)  পেট্রোবাংলার বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি প্রকল্প পরিচালনার লক্ষ্যে ১৯৯৮ সালের আগস্ট মাসে গঠিত কোম্পানি। দিনাজপুর জেলার বড়পুকুরিয়ায় নির্মাণাধীন এই কয়লা খনি থেকে বছরে প্রায় ১০ লক্ষ মেট্রিক টন কয়লা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর হতে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে বানিজ্যিকভাবে কয়লা উৎপাদন শুরূ হয়েছে। মনি বিশেষজ্ঞরা বড়পুকুরিয়াতে ভূ-গর্ভস্থ খনির পাশাপাশি উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের প্রস্তাব করেছেন। তাতে মোট মজুতের প্রায় ৯০ শতাংশ আহরন করা সম্ভব হবে।

মধ্যপাড়া হার্ডরক মাইনিং কোম্পানী লিমিটিড(এমএইচএমসিএল)  মধ্যপাড়া খনির নির্মাণকার্য ত্বরান্বিত করা এবং দিনাজপুর জেলার মধ্যপাড়াতে পেট্রোবাংলার মধ্যপাড়া কঠিনশিলা খনি প্রকল্প পরিচালনার লক্ষ্যে ১৯৯৮ সালের আগস্ট মাসে গঠিত কোম্পানি। বছরে ১৬ লক্ষ টন কঠিনশিলা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে মধ্যপাড়া ভূগর্ভস্থ কঠিনশিলা খনিটি নির্মিত হয়। ২০০৭ সালের মে মাস হতে এই খনি থেকে কঠিন শিলা উত্তোলন শুরু হয়। বর্তমানে গড়ে দৈনিক প্রায় ৮০০ টন শিলা উত্তোলন হচ্ছে।

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড ও সুন্দরবন গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড নামক আরও দুটি  প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার অধীনে চালু হয়েছে। কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর হতে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে এবং বর্তমানে চিটাগাং অঞ্চলে প্রায় ২২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। সুন্দরবন গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলসমূহে গ্যাস সরবরাহ করে থাকে।  [এম লুৎফর রহমান চৌধুরী এবং মুশফিকুর রহমান]

আরও দেখুন খনিজ সম্পদ; প্রাকৃতিক গ্যাস