সমন্বিত ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনা

সমন্বিত ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনা (Integrated pest management/IPM)  পরিবেশের অবনতি ও ক্ষতিকর কীটপতঙ্গের সংখ্যা বৃদ্ধির চলমানতার পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক ক্ষতিকর কীটপতঙ্গের সংখ্যা যথাসম্ভব একটি নির্দিষ্ট স্তরের নিচে রাখার নিমিত্ত উপযুক্ত কৌশল ও উপায় প্রয়োগের পদ্ধতি। বাংলাদেশ ১৯৮১ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (FAO) আন্তঃদেশীয় সমন্বিত ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির সদস্যপদ লাভ করে। ১৯৮২-৮৮ সময়কালে দেশের কয়েকটি এলাকায় কেবল প্রদর্শন আকারে সমন্বিত ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। ১৯৯৮ সালের আন্তঃদেশীয় FAO কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশে পূর্ণকালীন একজন FAO-IPM বিশেষজ্ঞ নিয়োজিত হন। ১৯৮৮-১৯৯৫ সময়কালে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও দাতাদের যৌথ সহযোগিতায় বিপুল সংখ্যক কৃষি সম্প্রসারণ কর্মী (২২৫৭ জন), এনজিও কর্মকর্তা (৪০৭ জন) এবং কৃষকদের (৪,৫৫০ জন) মাঠ পর্যায়ে সমন্বিত ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এ প্রশিক্ষণ তাদের উপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কৃষকরা সমন্বিত ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে অজ্ঞ প্রতিবেশীদের তুলনায় ধান ব্যবস্থাপনায় অনেক কম কীটনাশক ব্যবহার করে। এই কর্মসূচির সাফল্যের ভিত্তিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও দাতাদের যৌথ সহযোগিতায় নিম্নোক্ত প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত হয়েছে: সমন্বিত ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনা; উদ্ভিদ সংরক্ষণ শাখার শক্তিবৃদ্ধি; কমান্ড এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প; খুলনা-যশোর নালা পুনর্বাসন এবং আন্তঃদেশীয় সমন্বিত ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনা শাকসবজি প্রকল্প। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে আর্থিক সাহায্য যুগিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, ইউএনডিপি, এডিবি ও DANIDA। এছাড়া কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব কর্মসূচিতে তৃণমূল পর্যায়ে এখন সমন্বিত ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে সহযোগিতা করছে।  [মোঃ আবদুল লতিফ]