সদরপুর উপজেলা

সদরপুর উপজেলা (ফরিদপুর জেলা)  আয়তন: ২৬১.২৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°২৪´ থেকে ২৩°৩৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৫৭´ থেকে ৯০°১১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে চরভদ্রাসন ও দোহার উপজেলা, দক্ষিণে ভাঙ্গা উপজেলা, পূর্বে শিবচর ও শ্রীনগর উপজেলা, পশ্চিমে নগরকান্দা উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৮৬২৫৪; পুরুষ ৮৯৬৬৪, মহিলা ৯৬৫৯০। মুসলিম ১৭৫৭৩৬ এবং হিন্দু ১০৫১৮।

জলাশয় প্রধান নদী: পদ্মা, আড়িয়াল খাঁ ও ভুবনেশ্বর।

প্রশাসন সদরপুর থানা গঠিত হয় ১৮৬৩ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৯৩ ৩২৮ ৬০৭৬ ১৮০১৭৮ ৭১৩ ৬৩.০ ৪২.৫
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৩.০১ ৬০৭৬ ২০১৯ ৬৩.০
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আকোটের চর ১৫ ৮১১৩ ৯৯৮৪ ১১৯৮২ ৪৪.৫
কৃষ্ণপুর ৬৬ ৭০১১ ১৬৪৬৭ ১৬৭২৩ ৪৪.২
চর নাসিরপুর ৪৭ ৬৭৯১ ৫২৬৪ ৫২৭৭ ৩২.১
চর বিষ্ণুপুর ২৮ ৭৪১৬ ১০২২৭ ১১৬১৫ ৪২.৭
চর মানাইর ৩৮ ৪২৬৩ ৬৬১৫ ৭২০২ ৩৫.২
দেউখালী ৫৭ ৬৯৮৯ ১২১৬৯ ১৩৫৮৫ ৪৩.৭
নারিকেলবাড়িয়া ৭৬ ১১৭১৯ ৩০১২ ৩১১৯ ২৪.৪
ভাষাণচর ১৯ ৮২৭৮ ১২৩৫৯ ১৩৪২৩ ৪০.৪
সদরপুর ৮৫ ৩৯৮৮ ১৩৫৬৭ ১৩৬৬৪ ৫৫.২

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ বাইশরশি জমিদার বাড়ি (রায় বাহাদুর রাজেন্দ্র রায়চৌধুরী), কৃষ্ণপুর কালীমন্দির, বাইশরশি মঠ (সমাধিস্থল), বাইশরশি শিবসুন্দরী একাডেমী।

মুক্তিযুদ্ধ উপজেলার বাজিতপুর ও জামতলায় পাকসেনা ও তাদের দোসরদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়। উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে কয়েকজন দেশের অন্যত্র যুদ্ধে অংশ নিয়ে শহীদ হন। সদরপুর থানায় সামনে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে ‘জাগ্রত সদরপুর’ নামে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন সদরপুর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১০।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষার হার গড় ৪৩.২%; পুরুষ ৪৩.৮%, মহিলা ৪২.৬%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৭, মাদ্রাসা ৮। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কৃষ্ণপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১০), বাইশরশি শিবসুন্দরী একাডেমি (১৯১৪)।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ২৯৪, মন্দির ১৪, খানকাহ ৩।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২, সিনেমা হল ১, সাহিত্য সংগঠন ৩, মহিলা সংগঠন ২, ক্লাব ৩৮, খেলার মাঠ ৮।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৭.৭৯%, অকৃষি শ্রমিক ২.৩৩%, শিল্প ০.৭৪%, ব্যবসা ১১.৪১%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৪২%, চাকরি ৫.৬৮%, নির্মাণ ০.৭০%, ধর্মীয় সেবা ০.১১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৩.২৫% এবং অন্যান্য ৫.৫৭%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৬.৩৩%, ভূমিহীন ৩৩.৬৭%। শহরে ৫৪.০২% এবং গ্রামে ৬৬.৬৯% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, তৈলবীজ, ডাল, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  কুসুম ফুল, কাউন, কালিজিরা, তামাক, চীনা, শনপাট।

প্রধান ফল-ফলাদি তাল, জাম, কাঁঠাল, নারিকেল, সফেদা, খেজুর।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৮০, হাঁস-মুরগি ৪০, হ্যাচারি ৪।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১০০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৭৭ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৯৬ কিমি; নৌপথ ২২ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন ঘোড়ার গাড়ি, পাল্কি।

শিল্প ও কলকারখানা ধানকল, আটাকল, বরফকল, তেলকল, স্পিনিং মিলস, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, ঘানিশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ, কাঠের কাজ, সেলাই কাজ, জাল বুনন।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৬, মেলা ৩। কৃষ্ণপুর হাট, পিয়াজখালী হাট, সাড়ে সাতরশি হাট ও চৌদ্দরশি হাট এবং দেউখালী মেলা ও আটরশির মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  পাট, তালের গুড়, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচীর আওতাধীন। তবে ৪৫.০% পরিবার পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.৮%, ট্যাপ ০.৫% এবং অন্যান্য ১.৭%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৮৪.৯% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১২.৬% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ২.৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, হাসপাতাল ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৫, ক্লিনিক ২।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা, ভিডা।  [মাসুদ রেজা]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সদরপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।