মৌলভী বাজার, ঢাকা

মৌলভীবাজার, ঢাকা  পুরানো ঢাকার একটি ব্যস্ততম প্রাচীন বাজার। এই বাজারে বিবিধ খাদ্যসামগ্রী, মসলা, ভোজ্য তেল, প্রসাধন সামগ্রী এবং বিভিন্ন প্রকার মুদিদ্রব্য বিক্রয় হয়। উনিশ শতকের প্রথম দিকে ঢাকার এক বড় জমিদার এবং সমাজসেবক মৌলভী আবদুল আলী (১৭৮৬-১৮৬৬) চকবাজারের কাছে পানিয়াটি লেনে তাঁর বাড়ির পাশে একটি বাজার বসিয়েছিলেন। এখন এটিই মৌলভীবাজার নামে পরিচিত। এই বাজারের উত্তর দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার আর পশ্চিম দিকে চকবাজার। এই বাজারে এখন দোকানের সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার এবং প্রায় ১৫ হাজার লোক সেগুলিতে নিয়মিত কাজ করেন। এখানে শ্রমিক, মালিক, কর্মচারী, ক্রেতাসহ প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার লোকের সমাগম হয় এবং দৈনিক প্রায় ১০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়। এই বাজারে দেশি-বিদেশি সবধরনের জিনিস পাওয়া যায়। এখানে পণ্য আসে চট্টগ্রাম বন্দর, মংলা বন্দর, বেনাপোল বন্দরসহ অন্যান্য স্থলবন্দর হয়ে আর দেশে উৎপাদিত পণ্য সারাদেশ থেকে আসে ট্রাকযোগে।

বাংলাদেশে বাণিজ্য জগতে শতাধিক বছর যাবৎ মৌলভীবাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। এখানে প্রায় সকল ব্যাংক ও বীমা কোম্পানি তাদের শাখা স্থাপন করেছে। পুরানো ঢাকার আদি বাজারগুলির অন্যতম মৌলভীবাজার নানাবিধ সমস্যা নিয়েই টিকে আছে। এই বাজারের প্রধান সমস্যা হলো এখানে গাড়ি পার্কিং-এর কোন ব্যবস্থা নেই। বাজারের রাস্তাগুলিও খুব সরু, ফলে সর্বদা যানজট লেগে থাকে। মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমাজের স্বার্থ রক্ষার জন্য গড়ে উঠেছে মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতি এবং সমিতির সদস্য সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার।

মৌলভীবাজারে নগদ ও বাকি উভয় পদ্ধতিতে লেনদেন হয়। এই বাজার থেকে ঢাকা শহরের আধুনিক শপিং সেন্টারসহ প্রায় সবকটি বাজারে মালামাল সরবরাহ করা হয়। স্থানীয় সরবরাহের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে রিকশা, ভ্যানগাড়ি, ঠেলাগাড়ি, পিক আপ এবং ছোট আকারের ট্রাক। ঢাকা শহরের বাইরেও এই বাজার থেকে মালামাল সরবরাহ করা হয়।  [সাদাত উল্লাহ খান]