ব্রহ্মা

ব্রহ্মা হিন্দুধর্মের প্রধান তিন দেবতার একজন; অন্য দুজন  বিষ্ণু ও  শিব। বিশ্বের সৃষ্টিকর্তা ‘প্রজাপতি’ নামেই তিনি সমধিক পরিচিত। ঋগ্বেদসহ বৈদিক সাহিত্যের অন্যান্য গ্রন্থে ব্রহ্মার উল্লেখ পাওয়া যায়। অনন্তশয্যায় শয়ান বিষ্ণুর নাভিকমল থেকে তাঁর প্রকাশ। তিনি বৈদিক যজ্ঞের অন্যতম পুরোহিত এবং সাধারণত চতুর্মুখ, চতুর্ভুজ ও হংসবাহনরূপে কল্পিত। তিনি উন্নত দেহের অধিকারী এবং তাঁর গায়ের রং রক্তাভ গৌরবর্ণ। তাঁর চার হাতে থাকে কমন্ডলু, স্রক্, ঘৃতপাত্র বা পুস্তক এবং অক্ষমালা। বিবাহের লগ্নপত্রে, সূতিকাগৃহে, শিশুর জন্মের ষষ্ঠ দিনে এবং বাস্ত্তপ্রতিষ্ঠার সময় ব্রহ্মাকে স্মরণ করা হয়।

কুম্ভকারের চক্রে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে ব্রহ্মার পূজা হয়। এছাড়া বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতেও ব্রহ্মাপূজার আয়োজন করা হয়। পূজার স্বাভাবিক উপকরণের সঙ্গে বিশেষভাবে লাল ফুলের ব্যবস্থা থাকে। এ পূজার নির্দিষ্ট কোনো তারিখ নেই এবং পূজার সময় ঢাক বাজানো হয় না। উপমহাদেশের বাইরেও চীন, জাপান ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নানা স্থানে ব্রহ্মার ভাস্কর্য লক্ষিত হয়। [সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়]