বায়েজীদ বোস্তামীর সমাধিসৌধ ও মসজিদ

বায়েজীদ বোস্তামীর সমাধিসৌধ ও মসজিদ চট্টগ্রাম শহরের ১৪ নং ওয়ার্ডে নাসিরাবাদ মৌজায় অবস্থিত। ১৮৩১ সালে একটি পাহাড়ের উপরে দেওয়ালঘেরা অঙ্গনের মধ্যে পুরানো একটি সমাধির অবয়ব পাওয়া যায়। দেওয়ালের প্রতি পার্শ্বের দৈর্ঘ্য ৯.১৫ মি এবং ব্যাটেলমেন্টসহ এর উচ্চতা ৪.৫৮ মি; এর উপরে প্রতিকোণায় ০.৬১ মি উঁচু একটি স্তম্ভ রয়েছে। স্থানটির ঠিক মাঝখানে প্রায় ৩.৬৬ মি x ২.৭৫ মি পরিমাপের একটি শবাধার আছে এবং এর শীর্ষে রয়েছে কিছু ঝিনুক ও প্রবালের আস্তরণ। সমাধিসৌধটি বর্তমানে আধুনিক কাঠামোতে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

বায়েজীদ বোস্তামী মসজিদ, চট্টগ্রাম

সমাধি পাহাড়ের পাদদেশে তিন গম্বুজবিশিষ্ট মুগলরীতির আয়তাকারের একটি মসজিদ আছে। মাঝের গম্বুজটি পার্শ্বস্থ দুটির চেয়ে বড়। মসজিদের চারকোণায় চারটি সংযুক্ত অষ্টভুজাকৃতির বুরুজ রয়েছে। এগুলির শীর্ষভাগ ছত্রী দ্বারা আচ্ছাদিত এবং উত্থিত বন্ধনী নকশায় অলংকৃত। বুরুজগুলির ভিত ফুলদানি আকৃতির।

পূর্বদিকের তিনটি দরজার মধ্যে মাঝেরটি অপেক্ষাকৃত বড় এবং দুটি পলকাটা ছোট বুরুজসহ এটি সম্মুখভাগে প্রসারিত। অনুরূপভাবে কিবলা দেওয়ালের মিহরাবটির পেছনদিকে অভিক্ষেপ আছে।

ক্রমশ সরু কোণবিশিষ্ট স্তম্ভের উপর স্থাপিত উঁচু খাঁজ খিলানের নিচ দিয়ে প্রবেশপথগুলি উন্মুক্ত। ইমারতটির বপ্র দুসারি শরছিদ্র দ্বারা সজ্জিত। এর ফাসাদ কুলুঙ্গি, খোপ ও ফ্রেম দ্বারা অলংকৃত।

সমাধিসৌধ পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত বায়েজীদ বোস্তামীর পুকুর নামে পরিচিত একটি পুকুরে অনেকগুলি কচ্ছপ আছে। চট্টগ্রামের সাধারণ জনগণ এ কচ্ছপগুলিকে গদলি-মদলি বলে ডাকে এবং বিশ্বাস করে যে, মানুষদের অলৌকিকভাবে কচ্ছপ করে রাখা হয়েছে। কারণ তারা বায়েজীদ বোস্তামীর আদেশ মেনে চলে নি।  [শামসুল হোসাইন]