বায়ুজীববিদ্যা

বায়ুজীববিদ্যা (Aerobiology) প্রভাবক হিসেবে কার্যকর আণুবীক্ষণিক উদ্ভিদ ও প্রাণীর বায়ুবাহী বিস্তার (propagule) সম্পর্কিত বিজ্ঞান। এর প্রধান আলোচনার বিষয়বস্ত্ত অণুজীব, রেণু (spore), পরাগ, উদ্ভিদ বা পতঙ্গ দেহের খন্ডাংশ। এ পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের দৃষ্টি আকর্ষণকারী প্রধান ক্ষেত্র বায়ুজীববিদ্যাকে অনুসরণ করেছে আরেকটি কর্মক্ষেত্র, বদ্ধ স্থানে বায়ুর গুণগত মানের পরিবেশীয় পর্যবেক্ষণ। বায়ুজীববিদ্যাগত সমীক্ষা এখন জীব-আবহবিজ্ঞানের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।

বাংলাদেশের অধিকাংশ শহরের বাতাস এখন বহু জৈব ও অজৈব আণুবীক্ষণিক বস্ত্তকণায় দূষিত। বায়ুবাহী এসব কণা, বিশেষত রেণু ও পরাগ থেকে নাসিকা ঝিল্লিপ্রদাহ, অ্যালার্জি, অ্যাজমা ও হে-ফিভারসহ নানা রোগ দেখা দেয়। স্থানীয় বা আঞ্চলিক বায়ুর জীববস্ত্তকণা শনাক্ত করতে বায়ুজীববিদ্যাগত জরিপ বহু দেশ ও বড় বড় শহরে ইদানিং চালু হয়েছে। বায়ুবাহী পরাগ ও অ্যালার্জেনের মাত্রা ও মান অ্যালার্জি চিকিৎসার সহায়ক। স্থানীয় জীববৈচিত্র্যের নিরিখে অ্যালার্জেনের মৌসুমি প্রকোপ ও ঘনত্ব স্থান ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে।

বায়ুপরাগবিদ্যাগত সমীক্ষার সঙ্গে একটি অঞ্চলে জীববস্ত্তর আপেক্ষিক প্রাচুর্য বা গাছপালার আবির্ভাব কালের তথ্যাদি সেখানকার জৈব-বায়ুদূষক প্রতিরোধে সহায়তা করে। বাস্ত্তসংস্থানিক, উদ্ভিদকুলগত, আবহাওয়াগত ও সামাজিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের সঙ্গে অবিরাম আবহাওয়ার জীব-আধেয় পরিবর্তিত হওয়ার দরুন সার্বক্ষণিক বায়ুজীববিদ্যাগত সমীক্ষা ও মনিটরিং থেকে বাতাসে অ্যালার্জেন ও অন্যান্য জৈব-দূষকের গতিধারা জানা যায়। শ্বাসনালীর অ্যাজমায় প্রায় ২০ লক্ষ ও নানা ধরনের অ্যালার্জিতে প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ ভুগছে এবং বাতাসের জৈব-দূষক এর জন্য দায়ী।  [মোস্তফা কামাল পাশা]

আরও দেখুন অ্যালার্জি