বাজার্ড

বাজার্ড (Buzzard)  Ciconiiformes বর্গের Accipitridae গোত্রের লম্বা ডানা ও গোলাকার লেজওয়ালা মাঝারি আকারের একদল শিকারি পাখি। অধিকাংশই বাদামি বা ধূসর। কুমেরু ও অস্ট্রেলিয়া ছাড়া পৃথিবীর সর্বত্রই আছে, মোট প্রজাতি সংখ্যা ২৭। বাংলাদেশের ৪টি প্রজাতির মধ্যে ২টি পরিযায়ী। হনিবাজার্ডদের (honey buzzard) গড়ন ও স্বভাব বিবিধ। হনিবাজার্ড (বিশেষত Pernis গণের সদস্যরা) শুঁয়োপোকা ও বোলতার চাক খেয়ে থাকে। উড়ন্ত অবস্থায় চওড়া পাখা ও ছড়ানো গোলাকার লেজ দেখে এদের অন্যান্য শিকারি পাখি থেকে পৃথক করা যায়। শিকারের সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনেক উঁচুতে স্বচ্ছন্দে উড়তে থাকে। পালক ওপরে গাঢ় বাদামি এবং নিচে সাদা বা বিভিন্ন রঙের। লেজ ও ডানার নিচের অংশ সাধারণত ডোরাকাটা। বাজার্ডরা ছোট ছোট স্থলচর স্তন্যপায়ী ও সরীসৃপ ধরে, কখনও অন্যান্য পাখিদেরও তাড়া করে। পচা মৃতদেহও খায়। বাসা বেশ বড়, শক্ত ডালপালা ও নরম উপকরণ মিশিয়ে উঁচু গাছের মগডালে বা পাহাড় চূড়ায় তৈরি করে। সাদাটে রঙের ডিমে (২-৫) বাদামি ফোঁটা আছে।

বাজার্ড

বাংলাদেশের এ পাখিদের স্থানীয় দুটি প্রজাতি হচ্ছে White-eyed Buzzard/White-eyed Buzzard Eagle (Butastur tessa): সাদা গলা, গালে ২টি কালো ডোরা, শরীরের নিচের অংশ বাদামি ও সাদা, ছোটখাটো ধূসর বাদামি শিকারি পাখি এবং Oriental Honey-buzzard/Honey-buzzard (Pernis ptilorhyncus): রঙের নানা ধরন; সাধারণত গাঢ় ধূসর মাথাসহ বাদামি শরীর; ডানা রুপালি ধূসর; লেজ গোলাকার। স্ত্রী ও পুরুষ পাখি দৃশ্যত অভিন্ন। থাকে একা বা সজোড়, প্রায়শ একত্রে ঘুমায়। মৌচাক থেকে মধু ও লার্ভা খায় এবং মাঝেমধ্যে পোকা, ব্যাঙ, ক্ষুদে সরীসৃপ ও পাখি ধরে। পরিযায়ী প্রজাতি দুটি হচ্ছে Common Buzzard/Buzzard (Buteo buteo): দেখতে কমবয়সী ভুবনচিলের মতো। ডানার আগা কালো, উড়ন্ত অবস্থায় চওড়া ডানায় বড় বড় সাদা ফালি চোখে পড়ে। দুটি জাতি japonicus (বাদামি লেজ) ও vulpinus (উজ্জ্বল পিঙ্গল লেজ)।

মাঝেমধ্যে শকুনদের সঙ্গে একত্রে দেখা যায়; Long-legged Buzzard (Buteo rufinus): দেখতে কমবয়সী শঙ্খচিলের মতো, মাথা, গলা ও বুক বাদামি বা প্রায় সাদা; অস্পষ্ট আড়াআড়ি ডোরাসহ হালকা হলুদ পিঙ্গল লেজ। পা পালকহীন। একা বা জোড়ায় দেখা যায়। প্রজননকালে নানা শারীরিক কলাকৌশল দেখায়। [মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম]

আরও দেখুন ঈগল; চিল; বাজপাখি; শকুন