বাংলাদেশ প্রাণি সম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট

বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (Livestock Research Institute)  ১৯৮৪ সালের ১৭ এপ্রিল মহামান্য রাষ্ট্রপতির এক অধ্যাদেশ বলে সাভারে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রা্ণিসম্পদ এবং হাঁস-মুরগি উন্নয়নে সমসাময়িক অন্তরায়সমূহ চিহ্নিতকরণ এবং এর সমাধানের পথ বের করাই এ ইনস্টিটিউটের মুখ্য উদ্দেশ্য। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মাননীয় মন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে ১৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিচালনা বোর্ডের মাধ্যমে ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী হচ্ছেন মহাপরিচালক। তিনি বোর্ডের সদস্য-সচিব। ইনস্টিটিউটে ৭টি গবেষণা বিভাগ রয়েছে। এগুলো হলো- প্রাণি উৎপাদন গবেষণা বিভাগ, প্রাণি স্বাস্থ্য গবেষণা বিভাগ, পোল্ট্রি উৎপাদন গবেষণা বিভাগ, ছাগল ও ভেড়া উৎপাদন গবেষণা বিভাগ, আর্থ-সামাজিক গবেষণা বিভাগ, সিস্টেম রিসার্চ ডিভিশিন এবং বায়োটেকনোলজী বিভাগ। এছাড়া রয়েছে একটি সেবা ও সহায়তা বিভাগ। সাভারে অবস্থিত ইনস্টিটিউটের প্রধান কার্যালয় ব্যতিত বাঘাবাড়ি (সিরাজগঞ্জ) ও নাইক্ষ্যংছততে (বান্দরবান) স্থাপিত হয়েছে দুটো আঞ্চলিক কেন্দ্র। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ন্যুনতম সংখ্যক প্রশিক্ষিত কারিগরি জনবল ও সীমিত গবেষণা সুযোগ সুবিধার মধ্যেও ইনস্টিটিউট পোল্ট্রি ও প্রাণিসম্পদের উৎপাদন, প্রজনন ও স্বাস্থ্য বিষয়ে মোট ৫৯টি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। উদ্ভাবিত এসব প্যাকেজ ও প্রযুক্তিসমূহ দেশের পোল্ট্রি ও প্রাণিসম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ইতোমধ্যে ব্যাপক অবদান রেখেছে। কৃষি অর্থনীতিবিদদের মূল্যায়নে বিএলআরআই কর্তৃক উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রযুক্তিগুলোর ইন্টারনাল রেট অব রিটার্ন (IRR) ৫৬-৩১৫% পাওয়া গেছে।

বর্তমানে ছাগল, ভেড়া, ডেইরী, বিফ ক্যাটেল, পোল্ট্রি, প্রাণিস্বাস্থ্য, প্রাণিসম্পদ অর্থনীতি ও বিপণন বিষয়ে বেশ কিছু গবেষণা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এর মধ্যে দেশী জাতের পাবনা গরু, কালো বাংলা-ছাগল, মহিষ, গয়াল (Bos frontalis) এবং আংশিক বর্জ্যভোজী হাঁস-মুরগরি নির্বাচিত প্রজনন বাস্তবায়নের জন্য গবেষণা কর্মসূচি অন্যতম। উক্ত গবেষণা কার্যক্রমগুলো সুষ্ঠুভাবে সমাপ্ত করা হলে দেশীয় গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির জাত চিহ্নিতকরণ, উন্নত জাত উদ্ভাবন এবং এদের খাদ্য, স্বাস্থ্য, সংগ্রহোত্তর প্রযুক্তি এবং পরিবেশ বান্ধব ও লাভজনক প্রাণি-পাখি উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হবে। ফলে দেশের প্রাণিসম্পদ উপখাতে উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে সাথে দারিদ্র বিমোচন, আত্মকর্মসংস্থান, পুষ্টি সরবরাহ বৃদ্ধিসহ দেশের রফতানি আয় বৃদ্ধি পাবে।  [জাহাঙ্গীর আলম]

আরও দেখুন প্রাণিসম্পদ, প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর, প্রাণী সম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট