বাংলাদেশ অবজার্ভার

বাংলাদেশ অবজার্ভার  ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৪৯ সালের ১১ মার্চ। তখন এর নাম ছিল পাকিস্তান অবজার্ভার। মুসলিম লীগ নেতা ও তৎকালীন প্রাদেশিক মন্ত্রী হামিদুল হক চৌধুরী অবজার্ভার পত্রিকার স্বত্বাধিকারী ছিলেন।

পাকিস্তান অবজার্ভার পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ছিলেন মোহাম্মদ শেহাবুল্লাহ। তখন সম্পাদকীয় বিভাগে কাজ করতেন জহুর হোসেন চৌধুরী ও মোহাম্মদ আবদুল হাই। পরবর্তী সময়ে সম্পাদক হন আবদুস সালাম।

পাকিস্তান অবজার্ভার শুরু থেকে স্বাধীন সম্পাদকীয় নীতিকে গুরুত্ব দিয়েছে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির কয়েকদিন আগে প্রাদেশিক সরকার নিরাপত্তা আইনে পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধ করে দেয়। ভাষা আন্দোলন, প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন ও পূর্ববাংলার উন্নয়নের পক্ষে পত্রিকাটি জোরালো ভূমিকা নেয়ার কারণেই প্রাদেশিক সরকার এই নিবর্তনমূলক ব্যবস্থা নেয় বলে অনেকের ধারণা। পত্রিকার মালিক হামিদুল হক চৌধুরী ও সম্পাদক আবদুস সালাম এসময় গ্রেফতার হন।

১৯৫৪ সালের ৯ মে যুক্তফ্রন্ট সরকার পাকিস্তান অবজার্ভারের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। এ সময় অবজার্ভার পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আবদুল গনি হাজারী। ষাটের দশকের শুরুতে পত্রিকাটিকে কালো তালিকাভুক্ত করে বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেয়া হয়। ১৯৬৯ সালে পাকিস্তান অবজার্ভার গণঅভ্যুত্থানের খবর পরিবেশন করে সাহসী ভূমিকা পালন করে।

স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর পত্রিকাটির শিরোনাম পরিবর্তন করে ‘দ্য অবজার্ভার’ রাখা হয়। কিন্তু ২৩ ডিসেম্বর থেকে ‘দ্য বাংলাদেশ অবজার্ভার’ নামেই পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়ে আসছে। ১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ অবজার্ভার সরকারি ব্যবস্থাপনায় নেয়া হয়। ১৫ মার্চ (১৯৭২) সংখ্যায় The Supreme Test শিরোনামে সম্পাদকীয় লেখার দায়ে সম্পাদক আবদুস সালামকে পত্রিকার চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে ওবায়েদ উল হককে সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়।

১৯৮৪ সালের ২৩ জানুয়ারি জেনারেল এরশাদের সামরিক সরকার পত্রিকাটি পুনরায় হামিদুল হক চৌধুরীর মালিকানায় ফিরিয়ে দেয়। ১৯৮৪ সালের ৭ আগস্ট কে.এম.এ মুনিম সম্পাদক হন। ১৯৯৮ সাল থেকে ইকবাল সোবহান চৌধুরী পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।  [মনু ইসলাম]