ধনবাড়ী উপজেলা

ধনবাড়ী উপজেলা (টাঙ্গাইল জেলা) আয়তন: ১৩৩.৭৫ বর্গ কিমি। অবস্থান ২৩°৩৭´ থেকে ২৪°৪৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°১০´ থেকে ৯০°০০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে জামালপুর সদর উপজেলা, দক্ষিণে গোপালপুর ও মধুপুর উপজেলা, পূর্বে মধুপুর উপজেলা, পশ্চিমে সরিষাবাড়ী উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৭৬০৬৮; পুরুষ ৮৫৮৪২, মহিলা ৯০২২৬। মুসলিম ১৭১৩১৯, হিন্দু ৪৬৬৩, বৌদ্ধ ২, খ্রিস্টান ৩৫ এবং অন্যান্য ৪৯। এ উপজেলায় গারো ও কোচ আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস  রয়েছে।

জলাশয় প্রধান নদী: ঝিনাই।

প্রশাসন ধনবাড়ী থানা গঠিত হয় ২০০০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ২০০৬ সালে। পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৯৬ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১০৩ ১৩২ ৩৬১২৫ ১৩৯৯৪৩ ১৩১৬ ৫২.৩ ৪১.৯
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২৫.৬৩ ২৫ ৩৬১২৫ ১৪০৯ ৫২.৩
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
ধনবাড়ী ৪৭ ৬০৫৪ ১৪৭৭৫ ১৫৬১৭ ৪৪.৯
ধোপাখালী ৫৭ ৪০৪০ ১১১৮৬ ১১৭৬৭ ৪০.৬
পাইশকা ৮৫ ৪৫১০ ১০২৭৯ ১০৮৭৩ ৪২.৫
বলিভদ্র ২১ ২৭৭৩ ৬৭৮৮ ৭১১০ ৪৪.২
বানিয়াজান ২৫ ৩১৯৯ ৮৪৬৯ ৮৮০২ ৪১.২
বীরতারা ৩৮ ৩২৬৫ ৮৯৩৬ ৯৫৪৫ ৩৯.৯
মুসুূদ্দি ৮০ ২৮৮১ ৭৬৬৩ ৮১৩৩ ৩৭.৯

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ ধনবাড়ী মসজিদ ও নবাব মঞ্জিল।

মুক্তিযুদ্ধ ধনবাড়ী উপজেলার যেসব স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয় সেগুলির মধ্যে দরিচন্দ বাড়ি, কয়রা-চরপাড়া ও পাককাতার যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলার হাজরাপাড়া ও কুইচামরায় সড়কসেতু ধ্বংস করে শত্রুদের সরবরাহ ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়।

বিস্তারিত দেখুন ধনবাড়ী উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৫।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মন্দির ৩, গীর্জা ৬।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৪.০%; পুরুষ ৪৫.৯%, মহিলা ৪২.২%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ধনবাড়ী ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৭), ধনবাড়ী নওয়াব ইনস্টিটিউশন (১৯১০), পানপাতা ইসলামিয়া হাইস্কুল (১৯৪৩), পাইশকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬০), ফকির আফাজ উদ্দিন হাইস্কুল (১৯৬৯)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী  সাপ্তাহিক: ধনবাড়ী বার্তা।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ক্লাব ৭৩, সিনেমা হল ৬, নাট্যদল ১৭, সাংস্কৃতিক সংগঠন ৫, খেলার মাঠ ২৯।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭৭.৩৭%, অকৃষি শ্রমিক ১.৯২%, শিল্প ০.৫৩%, ব্যবসা ৭.৭১%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.২৬%, চাকরি ০.৬৫%, নির্মাণ ০.১৮%, ধর্মীয় সেবা ৩.৭৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩১% এবং অন্যান্য ৫.৩১%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৪৪.৬৮%, ভূমিহীন ৫৫.৩২%। শহরে ৩২.২৭% এবং গ্রামে ৫০.৭৪% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, আখ, আলু, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি মটর, খেসারি, মাষকলাই ডাল, মিষ্টিআলু, তিল।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, কাঁঠাল, কলা, লিচু, পেঁপে।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস্য, গবাবিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৬৮.৭ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ০.৩ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৬৫ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন ঘোড়া ও গরুর গাড়ি, পাল্কি, ডুলি।

শিল্প ও কলকারখানা রাইসমিল, বেকারি, স’মিল।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, মৃৎশিল্প, লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প, সেলাই, বাঁশ, বেত ও কাঠের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২০, মেলা ৩। ধনবাড়ী হাট, পাইশকা হাট, ধোপাখালী হাট, বলিভদ্র হাট, মুসুদ্দি হাট এবং ধনবাড়ীর বৈশাখী মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য পাট, আখের গুড়, আলু।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩৫.৪% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৬.৬%, ট্যাপ ০.৩% এবং অন্যান্য ৩.১%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ২৭.০% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৬৩.০% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১০.০% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র  উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, দাতব্য চিকিৎসালয় ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৪, ক্লিনিক ৩।

এনজিও ব্র্যাক, প্রশিকা।  [সাজেদা বেগম]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ধনবাড়ী উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।