দিঘলিয়া উপজেলা

দিঘলিয়া উপজেলা (খুলনা জেলা)  আয়তন: ৭৭.১৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৫১´ থেকে ২২°৫০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৩৩´ থেকে ৮৯°৪০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে অভয়নগর ও কালিয়া উপজেলা, দক্ষিণে খালিশপুর উপজেলা এবং রূপসা উপজেলা, পূর্বে তেরখাদা উপজেলা, পশ্চিমে দৌলতপুর থানা, খানজাহান আলী থানা এবং অভয়নগর উপজেলা।

জনসংখ্যা ১১৫৫৮৫; পুরুষ ৫৯২২০, মহিলা ৫৬৩৬৫। মুসলিম ৯৭৮৬০, হিন্দু ১৭২১০, খিস্টান ৫০৮ এবং অন্যান্য ৭।

জলাশয় প্রধান নদী: ভৈরব, চিত্রা, নবগঙ্গা। মাজুল খাল, কচুয়া বিল, নন্দন প্রতাপ বিল, হাজীর হাট বিল এবং ঠাকুরঝি দিঘি উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন দিঘলিয়া থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১২ জানুয়ারি ১৯৮৭ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ২৯ ৪৩ ৪৯৪৫ ১১০৬৪০ ১৪৯৮ - ৫৪.৩
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৪.০১ - ৪৯৪৫ ১২৩৩ -
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
গাজীর হাট ৬৬ ৬৫১২ ৯৮৭৭ ৯৫৫৬ ৪৬.৮
দিঘলিয়া ৫৭ ৩৮৩৫ ১৪৮৫৪ ১৪৬৬৪ ৫৯.৫
বরাকপুর ১৭ ৬০৮৩ ১১৬৩১ ১১২৭৬ ৫৪.১
সেনহাটি ৮৫ ২৬৩৯ ২২৮৫৮ ২০৮৬৯ ৫৪.১

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ কালী মন্দির (সেনহাটি শিব বাড়ি), বাসুদেব মন্দির, পানিহাতি খানজাহান আলী সীমানন্দ দিঘি।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে পাকবাহিনী এ উপজেলায় ব্যাপক গণহত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালায়। উপজেলায় মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর মধ্যে যেসব যুদ্ধ সংঘটিত হয় সেগুলির মধ্যে গাজীরহাট ও পিরোলি বাজারের মধ্যবর্তী স্থানে ত্রিনদীর মোহনার যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য। এসব যুদ্ধে কয়েক জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

বিস্তারিত দেখুন দিগলিয়া উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৪।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৪.৩%; পুরুষ ৫৬.৬%, মহিলা ৫১.৯%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪৩, মাদ্রাসা ১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: দিঘলিয়া এমএ মজিদ কলেজ, সেনহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৮৭৭), লাখোহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৬৯), রাধামাধবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯১৬)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ১০, সিনেমা হল ১, কমিউনিটি সেন্টার ৪।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ২৬.৮১%, অকৃষি শ্রমিক ৫.৮৫%, শিল্প ৫.২৮%, ব্যবসা ১৩.৩৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৬২%, চাকরি ৩৪.০২%, নির্মাণ ১.০৭%, ধর্মীয় সেবা ০.২৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৫৪% এবং অন্যান্য ১০.৫৪%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৪৭.২৪%, ভূমিহীন ৫২.৭৬%।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, তিল, সরিষা, পান, বেগুন।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি আখ, পাট।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, কাঁঠাল, লিচু, নারিকেল, কলা, পেঁপে, বেল, সফেদা, জামরুল, জাম।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগির খামার ও হ্যাচারি রয়েছে।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১১২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৭২ কিমি, কাঁচারাস্তা ১১১ কিমি; নৌপথ ৮ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা জুট মিল, ওয়েল্ডিং কারখানা প্রভৃতি।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, মৃৎশিল্প, লৌহশিল্প, সূচিশিল্প, বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৬। সেনহাটি বাজার, বাতিভিটা বাজার, লাখোহাটি বাজার এবং কোলার হাট, গাজীর হাট, মাঝিরগাতি হাট ও কালী পূজা মেলা, বৈশাখী মেলা, ঈদ মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  পান, কলা, পেঁপে, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৬৩.১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.৮%, ট্যাপ ১.৪% এবং অন্যান্য ০.৮%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৯২.৭% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৬.৩% পরিবার অস্বাস্থাকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১.০% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কেন্দ্র ৭, ক্লিনিক ১।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, কেয়ার, নবলোক, প্রদীপন। [মাসুদ রেজা]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; দিঘলিয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।