ডামুড্যা উপজেলা

ডামুড্যা উপজেলা (শরিয়তপুর জেলা)  আয়তন: ৯০.৫৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°০৬´ থেকে ২৩°১০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°২০´ থেকে ৯০°৩০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভেদরগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে গোঁসাইরহাট উপজেলা, পূর্বে  গোঁসাইরহাট উপজেলা, পশ্চিমে কালকিনি ও শরিয়তপুর সদর উপজেলা। এখানে জেলার প্রধান নদীবন্দর ও বাণিজ্য কেন্দ্র অবস্থিত।

জনসংখ্যা ১০৯০০৩; পুরুষ ৫১৩৪৮, মহিলা ৫৭৬৫৫। মুসলিম ১০৫৯৫৬, হিন্দু ৩০৩০, খ্রিস্টান ২ এবং অন্যান্য ১৫।

জলাশয় প্রধান নদী: পদ্মা ও জয়ন্তি।

প্রশাসন থানা গঠিত হয় ১৯৭৫ সালে। বর্তমানে এটি উপজেলা।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
৫৮ ১২০ ১৭৩২৩ ৯১৬৮০ ১২০৪ ৬০.৬ (২০০১) ৫০.৪
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৭.০৯ (২০০১) ১১ ১৪২৪২ ২১২৫ (২০০১) ৬৪.৫
পৌরসভার বাইরে উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১.১৯ (২০০১) ৩০৮১ ৩২৭১ (২০০১) ৫৭.১
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
ইসলামপুর ৪০ ২১৫৭ ৪০৩৮ ৪৩৩১ ৫২.৭
কনেশ্বর ৪৭ ২৭৯৪ ৭৪০১ ৮৩৮৩ ৬০.৪
দারুল আমান ২৩ ১২৪৭ ৪৪০৩ ৫২৪৯ ৫৪.৪
ধানকাটি ৩৫ ৫৮৭১ ৯৮৭৬ ১০৬৮৩ ৪৪.৪
পূর্ব ডামুড্যা ৫৯ ৪৭৩৭ ১০০৬৮ ১১১৮৫ ৪০.২
সিদয়া ৮৩ ১২২৭ ৩৩৮৭ ৪০৮৮ ৫৭.৪
সিদুলকুরা ৭১ ৩১৯২ ৫৪৫৬ ৬২১৩ ৫৬.৯

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ বর্তমান ডামুড্যা কলেজের দক্ষিণে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সম্মুখ লড়াইয়ে আহসানুল হক ও আব্দুল ওয়াহাব শহীদ হন। এ উপজেলায় বিভিন্ন যুদ্ধে ৯ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৯৭১ সালের ১৫ অক্টোবর রাজাকাররা ডামুড্যা বাজারে আগুন ধরিয়ে দিলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। উপজেলায় ৪টি স্মৃতিসৌধ এবং শহীদ আব্দুল ওয়াহাবের নামে ১টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন ডামুড্যা উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৪।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ১৭৬, মন্দির ৫, মাযার ৪।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫২.৫%; পুরুষ ৫৩.৩%, মহিলা ৫১.৭%।  কলেজ ১, প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫৯, কমিউনিটি বিদ্যালয় ২, কিন্ডার গার্টেন ৫, মাদ্রাসা ১১১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কনেশ্বর এস সি এডওয়ার্ড ইনস্টিটিউশন (১৯১৩), ডামুড্যা মুসলিম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪০), ডামুড্যা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯৯২), আলহাজ্ব ইমামউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৪, ক্লাব ১০, কমিউনিটি সেন্টার ১, সংগীত একাডেমি ১, সিনেমা হল ১, অডিটোরিয়াম ১, মহিলা সংগঠন ১, খেলার মাঠ ২।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৪.৪০%, অকৃষি শ্রমিক ৩.০১%, শিল্প ১.০০%, ব্যবসা ১৬.০২%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৪১%, চাকরি ৮.৬৮%, নির্মাণ ১.৯৩%, ধর্মীয় সেবা ০.৩১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৩.৭৯% এবং অন্যান্য ৮.৪৫%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৪.৫৯%, ভূমিহীন ৩৫.৪১%। শহরে ৩৮.১২% এবং গ্রামে ৬৯.৭৯% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, মসুর, সরিষা, গম।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি আখ।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, কাঁঠাল, কুল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ২১, গবাদিপশু ৮, হাঁস-মুরগি ২৫।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৩৮ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৬ কিমি, কাঁচারাস্তা ২২৯ কিমি; নৌপথ ৭২ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।

শিল্প ও কলকারখানা চালকল, আইসক্রীম কারখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, সূচিশিল্প।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৭, মেলা ৪। ডামুড্যা বাজার, কাইলারা বাজার উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য পাট, ধান, মাটির পাত্র।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪২.৪% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয় জলের উৎস নলকূপ ৯৫.৭%, ট্যাপ ০.৬% এবং অন্যান্য ৩.৭%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি রয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৯১.১% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৬.৮% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২.১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৬, কমিউনিটি ক্লিনিক ২, পশু চিকিৎসা কেন্দ্র ১।

এনজিও ব্র্যাক, হীড।  [এ.কে.এম মতিয়ার রহমান]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ডামুড্যা উপজেলার মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০১০।