চরভদ্রাসন উপজেলা

চরভদ্রাসন উপজেলা (ফরিদপুর জেলা)  আয়তন: ১৫৪.৬৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৩৩´ থেকে ২৩°৪০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৫৩´ থেকে ৯০°০৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে হরিরামপুর ও দোহার উপজেলা, দক্ষিণে সদরপুর উপজেলা, পূর্বে দোহার উপজেলা, পশ্চিমে ফরিদপুর সদর ও নগরকান্দা উপজেলা।

জনসংখ্যা ৬৩৪৭৭; পুরুষ ৩০৩৫৭, মহিলা ৩৩১২০। মুসলিম ৫৯১৩০, হিন্দু ৪৩৪৫ এবং অন্যান্য ২।

জলাশয় প্রধান নদী: পদ্মা, ভুবনেশ্বর।

প্রশাসন চরভদ্রাসন থানা গঠিত হয় ১৯১৪ সালে এবং উপজেলায় রূপান্তরিত হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ২৫ ৮০ ২২৮৮২ ৪০৫৯৫ ৪১০ ৪৩.৪ ৩৮.৯
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২৭.৮২ ২২৮৮২ ৮২৩ ৪৩.৪
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
গাজীরটেক ৭৬ ৭৮৫২ ৯৮৯৩ ১০৯৫২ ৪৫.২
চর হরিরামপুর ৩৮ ১২৩৭৩ ৬৬২১ ৬৭২৮ ৩০.৯
চর ঝাউকান্দা ৫৭ ১০০২০ ১৪১৬ ১৩৮৮ ২৬.১
চর ভদ্রাসন ১৯ ৭৯৭১ ১২৪২৭ ১৪০৫২ ৪৩.০

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে চরভদ্রাসন থানায় অবস্থিত পাকবাহিনীর দোসরদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি যুদ্ধ হয়। এর আগে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা মূলত প্রতিরোধ উপলক্ষে প্রহরা ও ছোটখাটো অপারেশনে নিয়োজিত ছিল। উপজেলার চরঝাউকান্দায় ১টি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে; ২টি স্থানে (চরভদ্রাসন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অফিসের সামনে এবং হাজিগঞ্জ বাজার) স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন চরভদ্রাসন উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৩।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৯৭, মন্দির ১০।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪০.৫%; পুরুষ ৪০.২%, মহিলা ৪০.৮%। কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩০, কমিউনিটি বিদ্যালয় ৪, মাদ্রাসা ৯। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: চরভদ্রাসন পাইলট হাইস্কুল (১৯৪৬), চর হাজীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৪)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান সিনেমা হল ১, কমিউনিটি সেন্টার ৪, খেলার মাঠ ৮।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৯.২১%, অকৃষি শ্রমিক ২.৬৬%, শিল্প ০.৭২%, ব্যবসা ১২.০৯%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৮২%, চাকরি ৭.১৩%, নির্মাণ ২.৪৬%, ধর্মীয় সেবা ০.১৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৪.৬১% এবং অন্যান্য ৭.১১%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক  ৫৩.৫৬%, ভূমিহীন ৪৬.৪৪। শহরে ৫৬.৯৮% এবং গ্রামে ৫১.৭৪% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, পাট, আখ, চীনাবাদাম, পিঁয়াজ, রসুন, মশুর ডাল।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি, কাউন, কুসুমকুল।

প্রধান ফল-ফলাদি পেঁপে, নারিকেল, সুপারি।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ২১, হাঁস-মুরগি ২৩, গবাদিপশু ৮, হ্যাচারি ৫।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ২০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২৬ কিমি, কাঁচারাস্তা ১০৬ কিমি; নৌপথ ৩৮ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।

শিল্প ও কলকারখানা তেলকল, আইসক্রিম ফ্যাক্টরি, ওয়েল্ডিং প্রভৃতি।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, বিড়িশিল্প, বাঁশ ও বেতের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৮। হাজীগঞ্জ, চরভদ্রাসন, মৌলভীর চর বাজার উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  আখের গুড়, পিঁয়াজ, রসুন, চীনাবাদাম, মশুর ডাল, পাট।

বিদ্যুৎ ব্যবহার উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচীর আওতাধীন। তবে ৪৫.৫% পরিবার পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.৩%, ট্যাপ ০.৪% এবং অন্যান্য ২.৩%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৭৯.৯% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৮.০% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২.১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৮, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৩, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, কমিউনিটি ক্লিনিক ২৭, ক্লিনিক ৪।

এনজিও ব্র্যাক, আশা।  [মাসুদ রেজা]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; চরভদ্রাসন উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।