গোয়ালন্দ উপজেলা

গোয়ালন্দ উপজেলা (রাজবাড়ী জেলা)  আয়তন: ১২১.৮২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৪১´ থেকে ২৩°৫০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৪১´ থেকে ৮৯°৫১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে বেড়া ও শিবালয় উপজেলা, দক্ষিণে ফরিদপুর সদর ও রাজবাড়ী সদর, পূর্বে শিবালয় ও হরিরামপুর উপজেলা, পশ্চিমে রাজবাড়ী সদর উপজেলা।

জনসংখ্যা ১১২৭৩২; পুরুষ ৫৪৯১৩, মহিলা ৫৭৮১৯। মুসলিম ১০৮১৫৪, হিন্দু ৪৫৭৬, বৌদ্ধ ১ এবং অন্যান্য ১।

জলাশয় প্রধান নদী: পদ্মা ও পুরাতন কুমার নদী।

প্রশাসন থানা গঠিত হয় ১৯২০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১১১ ১৫২ ৩০১৯০ ৮২৫৪২ ৯২৫ ৪৭.৩ (২০০১) ৩৫.৭
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৪.৮৬ (২০০১) ১৫ ১৮৬৬৩ ৪৩৫১ (২০০১) ৫৮.৫
পৌরসভার বাইরে উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১৬.২৬ (২০০১) ১১৫২৭ ৬৭৫ (২০০১) ৪২.৯
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
উজানচর ৭৬ ৭২০৬ ১৩৫৭৫ ১৪১৪১ ৪০.২
ছোট ভাকলা ১৯ ৩০৭৬ ৭৬৮৫ ৮৫০৬ ৪৭.২
দেবগ্রাম ৫৭ ৫৮৫৪ ৭৮৮৪ ৮১৪০ ৩০.৭
দৌলতদিয়া ৩৮ ১২৭৬৮ ১৬৫৬২ ১৭৫৭৬ ৩১.১

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী বিমান হতে গুলি করে কয়েকজন গ্রামবাসিকে হত্যা করে। ২১ এপ্রিল পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২২ এপ্রিল এক লড়াইয়ে উপজেলার ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

বিস্তারিত দেখুন গোয়ালন্দ উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৩।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪০.৩%; পুরুষ ৪২.৬%, মহিলা ৩৮.২%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৭, মাদ্রাসা ১৭।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২, শিল্পকলা একাডেমি ১, সিনেমা হল ২, প্রেস ক্লাব ১, ক্লাব ১৮, নাট্যদল ২, মহিলা সংগঠন ২।

গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা গোয়ালন্দ ফেরী ঘাট।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৪৮.০০%, অকৃষি শ্রমিক ৪.৪৫%, শিল্প ০.৭৭%, ব্যবসা ১৮.৯৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৬.২৮%, চাকরি ৭.৪৮%, নির্মাণ ৩.৭২%, ধর্মীয় সেবা ০.১৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৫১% এবং অন্যান্য ৯.৬৪%।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, আখ, ডাল, চীনাবাদাম।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি রাই, সরিষা।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, পেঁপে।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৯৮, গবাদিপশু ৩৫, হাঁস-মুরগি ৬৭, হ্যাচারি ১।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৪৮.৮৬ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১০.৪৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ৯০.৮৭ কিমি; রেলপথ ১০ কিমি; নৌপথ ৪ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা সুনিপুণ অর্গানিকস্, গোয়ালন্দ টেক্সটাইল মিল্স।

কুটিরশিল্প মৃৎশিল্প, লৌহশিল্প, কাঠের কাজ, বাঁশের কাজ, নকশি কাঁথা, নকশি পাখা।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৬, মেলা ২। গোয়ালন্দ হাট ও গোয়ালন্দ মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  পাট, আখের গুড়।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪৫.০% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.৪%, ট্যাপ ০.৩% এবং অন্যান্য ২.৩%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৬২.০% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৫.০% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩.০% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৩, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৩, ক্লিনিক ৩।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৬১ সালের টর্নেডোতে এ উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, সমাজ কল্যাণ সংস্থা, গ্রামীণ সমাজ উন্নয়ন সংস্থা।  [মো. আবু হাসান ফারুক]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; গোয়ালন্দ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।