ইঁদুর

ইঁদুর

ইঁদুর (Rat)  Rodentia বর্গের Muridae গোত্রের লম্বা লেজবিশিষ্ট  স্তন্যপায়ী। ইঁদুর Rattus ও এর নিকট সম্পর্কযুক্ত কয়েকটি গণের অন্তর্ভুক্ত প্রজাতি। ইঁদুর সব ধরনের পরিবেশে খাপ খাওয়াতে পারে এবং কুমেরু ছাড়া পৃথিবীর স্থলভাগের সর্বত্র বিস্তৃত। সব ধরনের খাদ্যে অভ্যস্ত হওয়ার সামর্থ্য ও অত্যধিক প্রজনন ক্ষমতার দরুন পরিবর্তনশীল পরিবেশে অভিযোজনে দক্ষতা Rodentia বর্গের সাফল্যের মূল কারণ। চোয়ালের পেশীবিন্যাস ও করোটির নানা বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে রোডেন্টরা তিনটি দলে বিভাজ্য: কাঠবিড়ালীসদৃশ, ক্যাভিসদৃশ ও ইঁদুরসদৃশ। স্তন্যপায়ীদের সর্বমোট প্রজাতির এক-চতুর্থাংশের বেশি তৃতীয় দলের অন্তর্ভুক্ত। Muridae গোত্রের সহস্রাধিক প্রজাতির মধ্যে বাংলাদেশে আছে ১০ প্রজাতির ইঁদুর (সারণি)।

সারণি  বাংলাদেশের ইঁদুর (Mammalia: Rodentia)
গোত্র বৈজ্ঞানিক নাম ইংরেজি নাম স্থানীয় নাম বিস্তার
Muridae Bandicota bengalensis Indian Mole Rat/Lesser Bandicoot Rat ইঁদুর  ব্যাপক
Bandicota indica Bandicoot Rat/ Large Bandicoot Rat/ বড় ইঁদুর ব্যাপক
  Greater Bandicoot Rat ধেড়ে ইঁদুর ব্যাপক
Millardia meltada Metad Rat / Soft furred Rat/ Soft durred field Rat  - ব্যাপক
Mus booduga Indian Field Mouse/ Little Indian Field Mouse/  মেঠো ইঁদুর ব্যাপক
Mus musculus House Mouse নেংটি ইঁদুর ব্যাপক
Nesokia indica Short-tailed Bandicoot Rat/ Short-tailed Mole Rat  - ব্যাপক
Rattus norvegicus Bram Rat   - -
Rattus rattus Common House Rat/ Black Rat ইঁদুর ব্যাপক
 Tatera indica  Antelope Rat/Indian Gerbil  ক্যাঙারু ইঁদুর -
 Vandeleuria oleracea  Long-tailed Tree Mouse/ Indian Long-tailed Tree Mouse/Palm Mouse  -  মিশ্র চিরসবুজ বন
Rhizomyidae  Cannomys badius  Bay Bamboo Rat/ Lesser Bamboo Rat  -  দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল

এগুলি স্বল্পায়ু হলেও অল্পবয়স থেকেই পর্যাপ্ত প্রজননক্ষম। এদের রজঃচক্র ও প্রসবকাল সংক্ষিপ্ত এবং প্রজনন মৌসুম দীর্ঘ। কিছু ইঁদুর ও নেংটি ইঁদুর দু’মাসের মধ্যেই প্রজননক্ষম হয়ে ওঠে, তিন সপ্তাহ গর্ভধারণের পর প্রতিবার ৮টি বাচ্চা প্রসব করে এবং ৩-৪ সপ্তাহ পর আবারও বাচ্চা দেয়। এরা সাধারণত ২ বছরের বেশি বাঁচে না। ইঁদুর ও নেংটি ইঁদুর যথেষ্ট পরিমাণ গোলার খাদ্যশস্য নষ্ট করে। এগুলি রোগজীবাণুর (প্রায় ২০ ধরনের) বাহকও। ইঁদুরের এক বহিঃপরজীবী ফ্লি (Flea) মানুষে  প্লেগ রোগের জীবাণু ছড়ায়। এসব সত্ত্বেও রোডেন্টরা মানুষের উপকারেও আসে। এগুলির মাংস কোনো কোনো আদিবাসীর খাদ্য। পোষা নেংটি ইঁদুর ও বাদামি ইঁদুর গবেষণাগারে এবং  ঔষধ ও অন্যান্য সামগ্রী পরীক্ষায় সম্ভবত সর্বাধিক ব্যবহূত প্রাণী।

[মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম]

আরও দেখুন রোডেন্ট